রবিবার, ১৬ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা
ঢাকা-১৮ উপনির্বাচন

খাঁটি মানুষ চায় আওয়ামী লীগ, বিএনপির ৩ প্রার্থী সক্রিয়, জাপাও লড়বে

নিজস্ব প্রতিবেদক

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুনের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া ঢাকা-১৮ আসনে বইছে ভোটের হাওয়া। আগামী ২৩ বা ২৪ আগস্ট এই আসনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে। দলের খাঁটি মানুষ প্রার্থী হোক- এটাই চান আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। উড়ে এসে জুড়ে বসা কাউকে প্রার্থী হিসেবে দেখতে চান না তারা। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বিএনপিও এই নির্বাচনে অংশ নেবে। জাতীয় পার্টিও লড়বে এই আসনে। 

জানা গেছে, নানাভাবে প্রচারণা চালিয়ে নিজের প্রার্থিতার কথা জানান দিচ্ছেন মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। সাহারা খাতুনের মাগফেরাত কামনায় মসজিদে মসজিদে দোয়া, শোক জানিয়ে ফেস্টুন করা, আবার শোকের আগস্ট উপলক্ষে ব্যানার, ফেস্টুন সাঁটিয়ে কিংবা করোনায় গরিব-দুস্থদের সহায়তা, দলের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালনসহ নানাভাবে প্রচারণা চালাচ্ছেন নৌকার মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। বিএনপি ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীরাও সামাজিক নানা কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন। জানা গেছে, কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ এবং ব্যবসায়ী নেতারা রয়েছেন মনোনয়নপ্রত্যাশীদের তালিকায়। দলীয় নেতা-কর্মীরা চান দলের ভিতর থেকে প্রার্থী করা হোক। ব্যবসায়ীদের প্রার্থী হওয়া নিয়ে কিছুটা মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্বও শুরু হয়েছে দলের নেতাদের ভিতরে। তাদের মতে, দীর্ঘদিন রাজনীতি করেও যদি দলের মনোনয়ন না পান তাহলে দলের জন্য এত কাজ করে কী লাভ! নেতারা রাজনীতি করে আসছেন একটা স্বপ্ন নিয়ে যে ভবিষ্যতে জনপ্রতিনিধি হবেন। কিন্তু দল থেকে যদি ব্যবসায়ীদের মনোনয়ন দেওয়া হয় তাহলে তা রাজনৈতিক নেতাদের জন্য কষ্টদায়ক। এ নিয়ে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরে তারা বক্তব্য দিচ্ছেন বিভিন্ন গণমাধ্যমেও।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের ভাষ্য, সাহারা খাতুন একজন সৎ ব্যক্তি ছিলেন। ফলে তার মতো একজন দক্ষ, সৎ ও ত্যাগী ব্যক্তিকে মনোনয়ন দিলে এ আসনের মানুষ উপকৃত হবে। তবে দলের বাইরে কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হলে কর্মীরা কাজ করবে না বলেও জানিয়েছেন তৃণমূলের অনেক নেতা।

একাদশ জাতীয় নির্বাচনে এই আসনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এই উপনির্বাচনে লড়বে বিএনপি। এরই মধ্যে তিনজন প্রার্থী মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। তারা হলেন, ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, বিএনপিপন্থি ব্যবসায়ী নেতা বাহাউদ্দীন সাদী, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শিল্পপতি এম কফিল উদ্দিন আহম্মেদ। এস এম জাহাঙ্গীর বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমি মাঠের কর্মী। বিএনপি যদি এই উপনির্বাচনে অংশ নেয়, তাহলে আমি মনোনয়ন চাইব। দলের নেতা-কর্মীরাও আমার সঙ্গে আছেন।’ ব্যবসায়ী নেতা বাহাউদ্দীন সাদী বলেন, ‘দলের শীর্ষ নেতৃত্ব এই করোনার সময়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার চেয়ে জনগণের পাশে দাঁড়ানোর বিষয়কেই প্রাধান্য দিচ্ছে। আমরাও সেই সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান রেখে আপাতত প্রচার বন্ধ রেখেছি। দলীয় সিদ্ধান্ত পেলে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেব।’ নিজের প্রস্তুতির কথা জানিয়ে এম কফিল উদ্দিন বলেন, ‘নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ আছেন, এলাকাবাসী আছে। আমার পারিবারিক ঐতিহ্য আছে। মনোনয়ন পেলে জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।’ এদিকে জাতীয় পার্টিও এই উপনির্বাচনে এককভাবে লড়বে। পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য উত্তরা ক্লাবের তিনবারের সাবেক সভাপতি নাসির উদ্দিন মাহমুদ এ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। তিনি বলেন, ‘এই আসনে আমাদের মরহুম চেয়ারম্যানের উন্নয়নের অনেক অবদান রয়েছে। দল থেকে মনোনয়ন পেলে আমি লড়তে চাই। জাতীয় পার্টিকে এই আসনটি উপহার দিতে চাই।’

সর্বশেষ খবর