শিরোনাম
রবিবার, ১৬ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘরে উঠছেন সেই মহানুভব ভিক্ষুক নাজিমউদ্দিন

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘরে উঠছেন সেই মহানুভব ভিক্ষুক নাজিমউদ্দিন

অভাব থাকলেও মনটা তার বিশাল। একটা ঘর করার জন্য ভিক্ষা করে তিলে তিলে ১০ হাজার টাকা জমিয়েছিলেন শেরপুরের ৮২ বছরের বৃদ্ধ নাজিমউদ্দিন। সেই কষ্টের ধন তিনি করোনা মহামারীতে মানুষের কষ্ট লাঘবে সরকারের ত্রাণ তহবিলে দান করে দেন। ‘দাতা ভিক্ষুক’ নাজিমউদ্দিনের বিশালত্ব এখন সবার কাছে বড় শিক্ষা।

সরকারের ত্রাণ তহবিলে ভিক্ষুক নাজিমউদ্দিনের দানের খবরটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজরে আসে। তিনি একজন ভিক্ষুকের উদারতায় মুগ্ধ হন। প্রধানমন্ত্রী নিজের তহবিল থেকে উপহার হিসেবে নাজিমউদ্দিনকে জমি, ঘর এবং দোকান ঘর করে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। সেই নাজিমউদ্দিনের এতদিনের কষ্টের জীবনের অবসান হতে যাচ্ছে। আজ রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারের আধুনিক পাকা বাড়িতে উঠবেন তিনি। শেরপুরের জেলা প্রশাসক আনারকলি মাহবুব আজ নাজিমউদ্দিনের কাছে ঘরের চাবি তুলে দেবেন। জানতে চাইলে আনারকলি মাহবুব গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, নাজিমউদ্দিনের জন্য ঘর নির্মাণ শেষ হয়েছে। আজ তাঁকে সেই ঘরে তুলে দেওয়া হবে। এরই মধ্যে ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজ তহবিল থেকে ঘর নির্মাণের জন্য তিন লাখ টাকা দিয়েছেন। সেই টাকা দিয়ে ঘর করা হয়েছে। আর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁর জীবিকা নির্বাহের জন্য একটা দোকান ঘর করে দেওয়া হয়েছে। এরপর এটা তাঁকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে। আমরা ভবিষ্যতেও তাঁর পাশে থাকব। প্রধানমন্ত্রীর এই উপহারে বেজায় খুশি বৃদ্ধ নাজিমউদ্দিন। প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে তিনি বলেন, তিন বছর ভিক্ষা করে ১০ হাজার টাকা জমিয়েছিলাম একটা ঘর করার জন্য। করোনার মহামারীতে মানুষের কষ্ট দেখে আমি সেই টাকা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে জমা দেই। এটা শুনে প্রধানমন্ত্রী আমাকে ঘর ও দোকান করে দিয়েছেন। তাঁর প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা। আমি দোয়া করি মহান আল্লাহ তায়ালা যেন প্রধানমন্ত্রীকে দীর্ঘদিন বাঁচিয়ে রাখেন, তাঁকে সুস্থ রাখেন। তিনি বলেন, আমার একটা আশা, আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একটু দেখা করতে চাই, তাঁকে ছালাম করতে চাই। নাজিমউদ্দিন যে ঘরটিতে এতদিন ছিলেন সেটি মূলত সরকারের খাস জমি। এটি ভিক্ষুক নাজিমউদ্দিনও এতদিন জানতেন না। সরকারের এই খাস জমিটিও তার নামে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। নাজিমউদ্দিন যে ঘরে থাকতেন সেই জমি কিছুটা সম্প্রসারণ করে ১৫ শতাংশ জমি তার নামে বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। তাকে যাতে আর কখনো ভিক্ষা করতে না হয় সে জন্য একটি দোকানও করে দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় হতদরিদ্র ভিক্ষুক নাজিমউদ্দিনের চিকিৎসার দায়িত্ব¡ নিয়েছে সরকার। ইতিমধ্যে তার অসুস্থ মেয়ের চিকিৎসাও করা হয়েছে। ভিক্ষুক হয়েও কষ্টের জমানো টাকা দান করে নজির স্থাপন করায় বিভিন্ন সময় নাজিমউদ্দিনের প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভিক্ষুক নাজিমউদ্দিন সারা বিশ্বে একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি (ভিক্ষুক নাজিমউদ্দিন) সারা বিশ্বে মহৎ দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছেন। এত বড় মানবিক গুণ অনেক বিত্তশালীর মধ্যেও দেখা যায় না। তার কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। ঝিনাইগাতী উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের গান্ধীগাঁও গ্রামের মৃত ইয়ার উদ্দিনের ছেলে নাজিমউদ্দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার পেয়ে অত্যন্ত খুশি হয়েছেন।

সর্বশেষ খবর