বৃহস্পতিবার, ২০ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা
ঐতিহ্য

স্মৃতিবিজড়িত গান্ধী আশ্রম

বাবুল আখতার রানা, নওগাঁ

স্মৃতিবিজড়িত গান্ধী আশ্রম

মহাত্মা গান্ধীর স্মৃতিবিজড়িত আত্রাইয়ের গান্ধী আশ্রমটি অনেকটাই সেজেগুছে এগোচ্ছে। নানা প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে দিন দিন কলেবর বেড়েই চলেছে। এরই মধ্যে ভারতীয় ও স্থানীয় সংসদ সদস্যের অর্থায়নে মহাত্মা গান্ধী ও পিসি রায় মেমোরিয়াল হল গড়ে উঠেছে। বর্তমানে আশ্রমের অনেকটা জায়গাজুড়ে চাষ করা হচ্ছে তুত গাছ। এ ছাড়া জেলা পরিষদের অর্থায়নে সীমানা প্রাচীর ও দৃষ্টিনন্দন গেট নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিদিন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা দেখতে আসে। প্রতি সপ্তাহে একজন ডাক্তার রোগী দেখেন। জানা গেছে, ইংরেজ সাম্রাজ্যবাদের নির্যাতনের জাঁতাকলে যখন পিষ্ট ভারতবাসী। সে সময় ইংরেজবিরোধী আন্দোলনের ডাক দিয়ে জনমনে জায়গা করে নেন ভারতবর্ষের কিংবদন্তি নেতা মহাত্মা গান্ধী। হিন্দু-মুসলমানের ভেদাভেদ ভুলে তিনি আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯২৫ সালে আত্রাইয়ে এসেছিলেন। তিনি আত্রাই রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন তেঁতুলিয়া গ্রামে গান্ধী আশ্রমে অবস্থান করে এলাকার  মানুষের সহযোগিতা করেন। একই সঙ্গে তিনি এখানে তাঁত শিল্প ও খাঁটি সরিষার তেলের জন্য ঘানি স্থাপনসহ অনেক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। বানভাসী মানুষের সহযোগিতায় গড়ে তোলেন বঙ্গীয় রিলিফ কমিটি। গান্ধী আশ্রম দেখতে আসা কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, মহাত্মা গান্ধীর স্মৃতিবিজড়িত গান্ধী আশ্রমটি খুব ভালো লেগেছে। তবে এখানে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করা যায়। সেই স্কুল কিংবা মাদ্রাসায় স্থানীয় গরিব, অসহায় ও ছিন্নমূল পর্যায়ের শিশুরা পড়ালেখা করতে পারত। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এ ঐতিহাসিক আশ্রমটিকে আন্তর্জাতিক মানের একটি পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত করা সম্ভব। গান্ধী আশ্রম কমিটির সাধারণ সম্পাদক ডা. নিরঞ্জন কুমার দাস বলেন, এক সময় গান্ধী আশ্রমের উন্নয়ন মুখথুবড়ে পড়ে থাকলেও স্থানীয় সংসদ সদস্য ও ভারতীয় অর্থায়নে গড়ে তোলা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন মহাত্মা গান্ধী ও পিসি রায় মেমোরিয়াল হল। এখানে প্রতি বছর আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে পালিত হয় গান্ধীর জন্মোৎসব। প্রতিদিন এলাকার গরিব ও অসহায় মানুষের কষ্টের কথা চিন্তা করে বিনামূল্যে স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছেন তিনি। তাই আশ্রমের আরও উন্নয়নের পাশাপাশি একটি হাসপাতাল গড়ে তোলা খুবই প্রয়োজন। সরকার কিংবা উপজেলা প্রশাসন এমনকি এ আশ্রম থেকেও কিছু পাই না। শুধু আমি নই,  দীর্ঘ ৩ বছর ধরে একজন কেয়ারটেকার দেখভাল করলেও তার কোনো বেতন-ভাতা কিংবা কোনো সুযোগ-সুবিধা কিছুই পান না। নওগাঁ-৬ আসনের সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলম বলেন, বিগত সরকারের আমলে এ ঐতিহাসিক আশ্রমটি খুবই অবহেলিত ছিল। কিন্তু বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে আশ্রমটির মর্যাদা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। অক্লান্ত পরিশ্রম করে বিভিন্ন দেশের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের এখানে এনেছি। নিজস্ব অর্থায়ন এবং ভারত সরকারের সহায়তায় গান্ধী আশ্রমটিতে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগানোর চেষ্টা করে আসছি। আশ্রমটিকে আধুনিক মানসম্মত ও আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন কেন্দ্রে উন্নীত করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর