শুক্রবার, ২১ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা
শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র

কেন্দ্রে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারী পুলিশ আনসার সবাই ব্যর্থ

এক কমিটির রিপোর্ট জমা, আরেক কমিটি সময় পেল আরও সাত দিন

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর

যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের ব্যবস্থাপনায় আমূল পরিবর্তনের সুপারিশ করে সমাজসেবা অধিদফতর গঠিত দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি তাদের রিপোর্ট জমা দিয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রধান সমাজসেবা অধিদফতরের পরিচালক (প্রতিষ্ঠান) যুগ্ম-সচিব সৈয়দ মো. নূরুল বাসির গতকাল সকালে রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা স্বীকার করে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, কমিটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই রিপোর্ট প্রস্তুত করে সমাজসেবা অধিদফতরের মহাপরিচালকের কাছে জমা দিয়েছে। সেখান থেকে রিপোর্ট সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। তদন্ত কমিটির প্রধান সৈয়দ নূরুল বাসির বলেন, তারা মূলত বিভাগীয় তদন্ত করেছেন। ঘটনার সময় যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে নিরাপত্তার দায়িত্বে যারা ছিলেন, তাদের ভূমিকাও খতিয়ে দেখেছে কমিটি। তিনি বলেন, সেখানে সংঘটিত ঘটনার গুরুত্ব ও ভয়াবহতা বুঝতে কেন্দ্রের কর্মকর্তা, কর্মচারীরা যেমন ব্যর্থ হয়েছেন, সেখানে দায়িত্বরত পুলিশ, আনসার সবাই তাদের ভূমিকা পালনে ব্যর্থ হয়েছেন। সেখানে দায়িত্বে থাকা পুলিশও বিষয়টি তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানাতে ব্যর্থ হয়েছেন। পুলিশ সুপার ঘটনা জানার পরপরই সক্রিয় হয়েছেন। কিন্তু দুপুরের ঘটনা তিনিও জেনেছেন বেশ কয়েক ঘণ্টা পর। সেখানে দায়িত্বরত পুলিশ কেন তাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলো, পুলিশেরই উচিত বিষয়টি খতিয়ে দেখা। তিনি বলেন, সবকিছু বিচার-বিশ্লেষণ করেই তারা যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের সম্পূর্ণ সেটআপকে পুরোপুরি পরিবর্তন করার সুপারিশ করেছেন। এদিকে এ ঘটনায় সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি তাদের তদন্তকাজ শেষ করতে আরও সাত দিন সময় বাড়ানোর জন্য যে আবেদন করেছিল, গতকাল মন্ত্রণালয় থেকে তা অনুমোদন করা হয়েছে। এ তদন্ত কমিটির প্রধান যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আবুল লাইছ তদন্তের জন্য আরও সাত কর্মদিবস অনুমোদনের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তিন কিশোর নিহতের ঘটনায় যে পাঁচ কর্মকর্তা গ্রেফতার হয়ে কারাগারে রয়েছেন, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। সে জন্য আদালতের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়েছে। আদালতের অনুমতি এখনো না পাওয়ায় তদন্তকাজ শেষ করার জন্য আরও সাত দিন সময় বাড়াতে বুধবার মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছিল। এর আগে এ কমিটিকে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্তকাজ শেষ করে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছিল। এদিকে তিন কিশোর নিহতের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের যে আট কিশোর শ্যোন অ্যারেস্ট অবস্থায় আছে, তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে আবেদন করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর রকিবুজ্জামান। তিনি বলেন, তদন্তের প্রয়োজনে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো কিশোরদের জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। সে জন্য যশোরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবেদন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে শুনানির পর আদালত আদেশ দেবেন। ১৩ আগস্ট যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে নির্মম পিটুনিতে তিন কিশোর বন্দী নিহত হয়। আহত হয় আরও ১৫ জন। এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় পুলিশ ওই কেন্দ্রের পাঁচ কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। একই মামলায় ওই কেন্দ্রে বন্দী থাকা আট কিশোরকে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়।

সর্বশেষ খবর