রবিবার, ২৩ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফিরেছেন রায়হান কবির

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

কাতারভিত্তিক আল-জাজিরা টেলিভিশনে সাক্ষাৎকার দেওয়ার অভিযোগে মালয়েশিয়ায় গ্রেফতার হওয়া নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার প্রবাসী যুবক রায়হান কবির বাংলাদেশে ফিরেছেন। শুক্রবার দিবাগত রাত ১টার দিকে মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ঢাকার শাহ জালাল বিমানবন্দরে এসে পৌঁছেন রায়হান। ভোর ৫টায় নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার শাহী মসজিদ এলাকায় নিজ বাসায় ফেরেন রায়হান কবির। ২১ আগস্ট তাকে ফেরত পাঠায় মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগ। মালয়েশিয়ায় ২৭ দিন পুলিশের হেফাজতে ছিলেন রায়হান কবির। পরিবারের সদস্যরা জানান, ঢাকার শাহ জালাল বিমানবন্দর থেকে রায়হানকে একটি প্রাইভেটকারে গতকাল ভোর ৫টায় বাসায় নিয়ে আসা হয়। এ সময় রায়হান খুব ক্লান্ত ছিল। মালয়েশিয়ায় পুলিশ রিমান্ডে তার ২৭ দিন একই জামা-কাপড়ে কেটেছে। হাতকড়া লাগানো অবস্থায়ই পুলিশ তাকে মালয়েশিয়ার বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন অতিক্রম করে। এ সময় এক বাঙালি তাকে একটি শার্ট এনে দিলে গায়ের ময়লা জামাটি পরিবর্তন করে নেয়। মালয়েশিয়ায় পুলিশ তার সঙ্গে ভালো আচরণ করলেও দিনগুলো কেটেছে মানসিক চাপের মধ্যে। তবে তাকে যে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে তা বিমানবন্দরে আসার আগ পর্যন্ত তিনি জানতে পারেননি। বিমানের টিকিটও পুলিশ কেটে দিয়েছে। রায়হান কবির কয়েক দিন পর সংবাদ সম্মেলন করে মালয়েশিয়ায় প্রবাসীদের বাস্তব জীবন এবং তার রিমান্ডের বিষয়ে কথা বলার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। রায়হান কবীর বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, আল জাজিরার সাক্ষাৎকারে মালয়েশিয়া সরকারের বিরুদ্ধে তিনি কিছুই বলেননি। শুধু প্রবাসীদের দুঃখ-কষ্ট ও সমস্যার কথা তুলে ধরেছিলেন। পুলিশ একটি ভুল তথ্যের ভিত্তিতে তাকে আটক করেছিল। ফলে চার্জ গঠন করতে পারেনি। তাকে ফিরিয়ে আনায় পরিবারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সরকার ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়েছে। এদিকে ছেলে ফিরে আসার খবরে রায়হান কবিরের পরিবারের স্বজনদের মধ্যে আনন্দের বন্যা বইছে। মা রাশিদা বেগম রায়হান বাড়ি ফেরায় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। প্রসঙ্গত গত ৩ জুলাই মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত বাংলাদেশি অভিবাসনকারীদের দুঃখ-দুর্দশার চিত্র তুলে ধরে আল-জাজিরা টেলিভিশনে বক্তব্য দিয়ে দেশটির সরকারের রোষানলে পড়েন নারায়ণগঞ্জের বন্দরের রায়হান কবির। এ অভিযোগে ৮ জুলাই মালয়েশিয়া সরকার তার ওয়ার্ক পারমিট বাতিল করে এবং ২৪ জুলাই তাকে গ্রেফতার করে ১৩ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে সেখানকার পুলিশ। এ ঘটনার পর দেশ-বিদেশে তুমুল সমালোচনা ও প্রতিবাদের ঝড় উঠলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। তবে জিজ্ঞাসাবাদে তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় অভিবাসন আইনে তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় মালয়েশিয়া সরকার।

 

সর্বশেষ খবর