রবিবার, ৩০ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

আবার দেশে দেশে কঠোর সতর্কতা

প্রতিদিন ডেস্ক

আবার দেশে দেশে কঠোর সতর্কতা

করোনার দ্বিতীয় ধাক্কা শুরু হওয়ায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ আবার কঠোর অবস্থানে ফিরে যাওয়া শুরু করেছে। এরই মধ্যে নতুন করে স্কুল-কলেজ বন্ধ করার নির্দেশ জারি করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। সংক্রমণ কমাতে স্পেনেও আবার কঠোর বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে। জার্মানিও ফের কঠোর পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে। একইভাবে আরও কিছু দেশ নানা পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করেছে। সূত্র : আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। এদিকে এক দিনে সর্বোচ্চ কভিড-১৯ রোগী শনাক্তের নতুন রেকর্ডের পর  দেশের সব স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে মিয়ানমার। গত বুধবার  দেশটিতে নতুন করে ৭০ জনের দেহে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়েছে, সেখানে এটিই এক দিনে সর্বোচ্চ সংক্রমণের ঘটনা বলে জানিয়েছে রয়টার্স। স্থানীয়ভাবে নিশ্চিত সংক্রমণের কোনো ঘটনা ছাড়াই কয়েক সপ্তাহ পার করেছিল মিয়ানমার, কিন্তু সম্প্রতি আক্রান্তের সংখ্যা ফের বাড়তে শুরু করেছে। ১০০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় স্বাস্থ্য সংকটে যুক্তরাষ্ট্র : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রোগনিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র-সিডিসি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে ১০০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় স্বাস্থ্য সংকটে পড়েছে। দেশটিতে আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর নাগাদ করোনা ভাইরাসে মৃত্যু ২ লাখ ছাড়াতে পারে। সূত্র : বিবিসি। আগামী চার সপ্তাহের জন্য জাতীয়ভাবে দেশে কভিড-১৯ এ মৃত্যুর পরিসংখ্যানের এই পূর্বাভাস গত বৃহস্পতিবার দিয়েছে সিডিসি। তাদের হিসাব অনুযায়ী, ১৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নতুন করে আরও ৪ হাজার থেকে ৮ হাজার ৩০০ মানুষের মৃত্যু হতে পারে। তবে পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ হলে ওই তারিখ নাগাদই মৃতের সংখ্যা দাঁড়াতে পারে ২ লাখ ৭ হাজার জনে। প্রসঙ্গত, সিডিসি এর আগে গত সপ্তাহেও এ সংক্রান্ত পূর্বাভাস দিয়েছিল। সে সময় সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই ৯০ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়। জন্স হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যানুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে এ পর্যন্ত অন্ততপক্ষে ১ লাখ ৮০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে; মৃত্যুর এই সংখ্যা বিশ্বে সর্বোচ্চ। আর আক্রান্ত হিসাবে শনাক্ত হয়েছে ৫০ লাখের বেশি মানুষ। এদিকে রয়টার্সের এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত জুন মাসেই টেক্সাস, ফ্লোরিডাসহ যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত ১০টি রাজ্যে শনাক্ত কভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি হয়ে যায়। আর জুলাইয়ের শেষেই যুক্তরাষ্ট্রে মোট মৃত্যু ১ লাখ ৫০ হাজার ছাড়ায়। বিশ্বে  মৃত্যু ও আক্রান্ত : বিশ্বে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৮ লাখ ৪৩ হাজারে এবং আক্রান্তের মোট সংখ্যা হয়েছে ২ কোটি ৫১ লাখ প্রায়।

ভারতে এক দিনে আক্রান্ত ৭৬ হাজারেরও বেশি মানুষ : ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ঝড়ের গতিতে বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এখন মোট আক্রান্তের সংখ্যা পেরিয়েছে ৩৫ লাখ। আগস্ট মাসের শুরু থেকেই বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুত হারে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে ভারতে। এই মুহূর্তে দেশের সংক্রমণের গতি অন্যান্য দেশের ধরাছোঁয়ার বাইরে। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এই গতিতে সংক্রমণ বাড়তে থাকলে দ্রুত ব্রাজিলকে টপকে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসতে পারে ভারত। এদিকে গত শুক্রবার ভারতে এক দিনে করোনায়ায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ায় ৭৬ হাজার ৬৬৫ জন। এ দিন মৃত্যু ছিল ১ হাজার ১৯ জনের। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রে এ দিন আক্রান্ত ও মৃত্যু ছিল যথাক্রমে ৪৯ হাজার ৬০১ ও ১ হাজার ১০৫ জন। ব্রাজিলে আক্রান্ত ছিল ৪৮ হাজার ১১২ জন এবং মৃত্যু ছিল ৮৬৮ জন।

উহানের খুলছে সব স্কুল ও কিন্ডারগার্টেন : করোনার উৎপত্তিস্থল চীনের উহান শহরের সব স্কুল ও কিন্ডারগার্টেন আগামী মাসের প্রথম দিন থেকে খুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। গত বছরের ডিসেম্বরে হুবেই প্রদেশের এ রাজধানীতেই চীনের মধ্যে প্রথম কভিড-১৯ রোগীর সন্ধান মিলেছিল। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত শহরগুলোর তালিকায়ও উহানের নাম উপরের দিকেই থাকবে। গত শুক্রবার শহরটির স্থানীয় সরকার এক ঘোষণায় মঙ্গলবার থেকে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শরৎকালীন সেমিস্টারের পাঠদান শুরু করতে বলেছে। তাদের এ ঘোষণার ফলে ১ সেপ্টেম্বর থেকে ১৪ লাখ শিক্ষার্থীর জন্য উহানের ২ হাজার ৮৪২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দ্বার ফের উন্মোচিত হতে যাচ্ছে। এর আগে গত সপ্তাহের সোমবার থেকে উহান বিশ্ববিদ্যালয়ও খুলে দেওয়া হয়েছে। স্কুল খুলে দেওয়ার নির্দেশনায় শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাওয়া-আসার পথে মাস্ক পরে থাকতে এবং সম্ভব হলে গণপরিবহন এড়িয়ে চলতে পরামর্শ দিয়েছে শহর কর্তৃপক্ষ। প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে প্রয়োজনীয় সংখ্যক সুরক্ষা উপকরণ ও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সরঞ্জাম মজুদ করতে এবং নতুন করে প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে কী কী করতে হবে সে সংক্রান্ত ড্রিল ও প্রশিক্ষণ ক্লাস নেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার পর গত এপ্রিল থেকে উহান একটু একটু করে স্বাভাবিক হতে শুরু করে। হুবেই প্রদেশের এ রাজধানীতে মে মাসের ১৮ তারিখ থেকে এখন পর্যন্ত স্থানীয়ভাবে সংক্রমণের শিকার কোনো ব্যক্তির সন্ধান পাওয়া যায়নি বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

সর্বশেষ খবর