মঙ্গলবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

ফেরদৌস আহমদ কোরেশী আর নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফেরদৌস আহমদ কোরেশী আর নেই

সত্তরের দশকের তুখোড় ছাত্রনেতা, পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের সভাপতি, ডাকসুর সাবেক ভিপি এবং মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ড. ফেরদৌস আহমদ কোরেশী আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। গতকাল বেলা আড়াইটায় তিনি তার মেয়ে ডা. অনিন্দিতার সেনানিবাসের বাসায় ইন্তেকাল করেন। তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। তিনি স্ত্রী, দুই মেয়ে, এক ছেলে এবং বহু গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। রাজনীতিতে ব্যক্তিমাধুর্য ও নীতি-নৈতিকতার জন্য সমালোচিত ও প্রশংসিত রাজনীতিক ড. কোরেশী সর্বশেষ ছিলেন প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক পার্টি (পিডিপি)-এর চেয়ারম্যান। ড. কোরেশীর স্ত্রী নিলুফার পান্না বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, পাঁচ বছর ধরে তার স্বামী বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন। স্ট্রোকে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে শয্যাশায়ী ছিলেন। মেয়ের বাসায় শেষনিঃশ্বাস ত্যাগের পর মরদেহ কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পর হিমঘরে রাখা হয়েছে। ২০১৫ সালে অক্টোবরে ব্রেইন স্ট্রোকের পর ড. কোরেশী এ্যাপোলো (বর্তমানে এভারকেয়ার) হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। সেখানে দুই সপ্তাহ লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। সেই থেকে বিছানা ছিল তার একমাত্র ঠিকানা। পক্ষাঘাতগ্রস্ত হওয়ায় পর কথাবার্তা বলতেন ইশারায়। গতকাল বাদ আসর সেনানিবাসে আল্লাহু মসজিদে তার নামাজে জানাজা হয়েছে। এরপর মরদেহ হিমঘরে রাখা হয়। আজ সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে নামাজে জানাজা শেষে মরদেহ ফেনী জেলার দাগনভূঞা উপজেলার বাসুদেবপুর গ্রামে নিয়ে যাওয়া হবে; সেখানে জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হবে।

যুক্তিতে শানিত কলাম রচনার জন্য স্বনামখ্যাত ফেরদৌস আহমদ কোরেশী তার ছাত্রজীবন শেষে ইত্তেফাক-এর সহযোগী সম্পাদক হিসেবে সাংবাদিকতা শুরু করেন। ড. কোরেশী জাতীয় প্রেস ক্লাবের সদস্য ছিলেন। একাত্তরে মুক্তাঞ্চল থেকে তার সম্পাদনায় মুক্তিযুদ্ধের মুখপত্র হিসেবে বের হয়েছিল সাপ্তাহিক ‘দেশবাংলা’। এই পত্রিকা পরে দৈনিক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। ১৯৭৮ সালে বিএনপি গঠিত হওয়ার পর ড. কোরেশী দলটির প্রথম যুগ্ম মহাসচিব হন। ১/১১-এর সেনাসমর্থিত সরকারের আমলে ২০০৭ সালে তিনি প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক পার্টি (পিডিপি) নামে একটি দল গঠন করেন। ২০০৮ সালের ১৩ নভেম্বর নির্বাচন কমিশনে দলটি নিবন্ধিত হয়। নবম জাতীয় সংসদে এই দল ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণাও দিয়েছিল। ফেরদৌস কোরেশী ১৯৬১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নির্বাচিত হন। বাঙালির স্বাধিকারের সনদ ছয় দফা আন্দোলন, ১১ দফাভিত্তিক ছাত্র ও গণআন্দোলন এবং ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানে ড. ফেরদৌস আহমদ কোরেশী বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন।

ড. কোরেশীর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম ও সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন। এক বিবৃতিতে তারা শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। এ ছাড়া শোক প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

সর্বশেষ খবর