বুধবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

খেলাপির প্রকৃত চিত্র ঢেকে রাখা হয়েছে

-ড. জাহিদ হোসেন

খেলাপির প্রকৃত চিত্র ঢেকে রাখা হয়েছে

বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ আবাসিক মিশনের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেছেন, করোনা সংকটে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে সবাইকে। কিন্তু যারা সুযোগসন্ধানী, ঋণ নিয়ে ফেরত দিতে চায় না তারাও সুযোগ কাজে লাগিয়েছে। এই সুযোগসন্ধানীরা টাকা ফেরত দেবে না। করোনা সংকটের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নতুন ঋণে খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত না করার কথা বলেছে। মার্চ পর্যন্ত যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে বর্তমান পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। খেলাপি ঋণের প্রকৃত চিত্র কার্পেটের নিচে ঢেকে রাখা হয়েছে। আর্থিক   কাঠামো ঠিক রাখতে প্রকৃত চিত্র কী সেটি বের করতে হবে। ঢেকে রাখলে পরিস্থিতি     নিয়ন্ত্রণের বাইরে  চলে যাবে। বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জাহিদ হোসেন বলেন, ‘করোনা সংকট মোকাবিলায় ক্ষুদ্র, মাঝারি, বড় শিল্প খাতে সুবিধা দেওয়া হয়েছে। ব্যাংক থেকে ঋণ দেওয়া হয়েছে গার্মেন্টে বেতন দিতে। সেই টাকা মালিকদের ফেরত দেওয়ার কথা। দেশের গার্মেন্ট খাতে যারা আগেও টাকা ফেরত দেয়নি তারাও একই সুবিধা নিয়েছে। তারা টাকা ফেরত দেবে কি না সেটি নিয়ে অনিশ্চয়তা আছে। ফলে খেলাপি ঋণের প্রকৃত চিত্রটি কী হবে তা অনুমান করা যায়। তিনি বলেন, না দেখার ভান করলে হবে না। ব্যাংক খাতে বিশেষ অডিট করার কথা ছিল মার্চে। করোনার কারণে সেটি করা হয়নি। এখন যদি সঠিকভাবে অডিট করা হয় খেলাপি ঋণের পরিমাণ অনেক বেশি হবে। এ ছাড়া মাঝারি শিল্প খাতেও প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। দেশের মোট ঋণের বড় অংশই এ খাতে। শুনতে মাঝারি হলেও বাস্তবে এগুলো মাঝারি নয়। অনেক ঋণ আছে খেলাপি ঘোষণা করা হয়নি। ডিসপুট হিসেবে চিহ্নিত। মামলা, রিট, কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আবেদন করে নানাভাবে আটকে রাখা হয়েছে। এগুলোও মূলত খেলাপি ঋণ। এখন ইচ্ছা-অনিচ্ছা সবভাবেই খেলাপি বাড়ছে। মার্চ পর্যন্ত কিছুটা কারেকশন হয়েছে বলা যায়। তবে আমাদের ভুল শোধরানোর জন্য সঠিক অঙ্ক বের করতে হবে। খেলাপির পরিমাণ কত সেটি নিখুঁতভাবে প্রকাশ করতে হবে। সেটি বের করে সঠিক পদক্ষেপ নিতে হবে। কোনো রকমে হিসাব করে বসে থাকলে হবে না। এখন যে নীতিমালায় খেলাপি চিহ্নিত করা হচ্ছে, সেটি পরিস্থিতি আরও খারাপ করে দিতে পারে।’

সর্বশেষ খবর