শিরোনাম
বুধবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

ক্যাসিনো ব্রাদার্স এনু-রূপনের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের আরও একটি মামলা

মাহবুব মমতাজী

ক্যাসিনো ব্রাদার্স এনামুল হক এনু ও রূপন ভূঁইয়ার আরও ১৯ কোটি ১১ লাখ ৩৬ হাজার ৩৯৪ টাকার খোঁজ মিলেছে। সাতটি ব্যাংকে দুই ভাইয়ের ৫৩টি অ্যাকাউন্টে এসব টাকা পাওয়া গেছে। এ ছাড়া রূপন ভূঁইয়ার স্ত্রী জ্যোতি ভূঁইয়ার নামে ৫৯ লাখ ১৪ হাজার ৬২৭ টাকার খোঁজ মিলেছে।

এসব আয়ের ঘটনায় এনু ও রূপন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে আরও একটি মানি লন্ডারিংয়ের মামলা দিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি। ৩১ আগস্ট পুরান ঢাকার বংশাল থানায় মামলাটি করেন সংস্থাটির অর্গানাইজড ক্রাইমের ইকোনমিক ক্রাইম স্কোয়াডের পরিদর্শক মেহেদী মাকসুদ। মামলায় এনু-রূপন  ছাড়া আরও নয়জনকে আসামি করা হয়েছে। এরা হলেন- তাদের তিন ভাই শহীদুল হক ভূঁইয়া, রশিদুল হক ভূঁইয়া, মেরাজুল হক ভূঁইয়া শিপলু। এ ছাড়া ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের সেক্রেটারি জয় গোপাল সরকার, পাভেল রহমান, মোবারক, মাহমুদুল হাসান করিম, ভুলু চন্দ্র দেব ও আলী। মামলার এজাহারসূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ২৫ ও ২৬ সেপ্টেম্বর মানি লন্ডারিংয়ের দুটি মামলার তদন্তে এনু-রূপনের ১ কোটি ৯৯ লাখ ৯০ হাজার ও ১৭ লাখ ১৬ হাজার ৩০০ টাকা ছাড়াও বিপুল পরিমাণ অর্থসম্পদের খোঁজ পাওয়া যায়। এসব সম্পদের মধ্যে ঢাকা ব্যাংকের বংশাল শাখায় রূপন ভূঁইয়ার নামে পাঁচটি অ্যাকাউন্টে যথাক্রমে ৩২ লাখ ৫৫ হাজার ৯৫৬, ২৯ লাখ ২৪ হাজার ৮৩১, ২৯ লাখ ৩৩ হাজার ৩১৯, ২৫ লাখ ৮৯ হাজার ৩৭৫ ও ২৯ লাখ ৩৩ হাজার ৩১৩ টাকার এফডিআর রয়েছে। একই শাখায় তার স্ত্রী জ্যোতি ভূঁইয়ার নামে করা সঞ্চয়ী অ্যাকাউন্টে ৪৯ হাজার ১৩৭ টাকা, অন্য চারটি অ্যাকাউন্টে যথাক্রমে ১৫ লাখ ৪৮ হাজার ৬৮৭, ১৫ লাখ ৪৮ হাজার ৬৮৭, ১৩ লাখ ৮৪ হাজার ৫৮ ও ১৩ লাখ ৮৪ হাজার ৫৮ টাকার এফডিআর রয়েছে।

এ ছাড়া ইস্টার্ন ব্যাংকের ইংলিশ রোড শাখায় রূপন ভূঁইয়ার অ্যাকাউন্টে ৩০ লাখ ৬৮ হাজার ৩৬২ টাকার এফডিআর, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ধোলাইখাল শাখায় দুটি অ্যাকাউন্টে যথাক্রমে ৩২ লাখ ৯৯ হাজার ৪৪৬ ও ৩৩ লাখ ৮৬ হাজার ৯১৮ টাকার এফডিআর, প্রিমিয়ার ব্যাংকের বংশাল শাখায় তিনটি অ্যাকাউন্টে যথাক্রমে ৩৫ লাখ ৯ হাজার ৭০৩, ৩১ লাখ ৪৪ হাজার ৬৭৬ ও ৩৬ লাখ ৫ হাজার ৫৬ টাকার এফডিআর, প্রাইম ব্যাংকের বংশাল শাখায় তিনটি অ্যাকাউন্টে যথাক্রমে ৩৩ লাখ ৩ হাজার ১০৬, ২৯ লাখ ১১ হাজার ৯৮১ ও ২৯ লাখ ৫৬ হাজার ৮১৪ টাকার এফডিআর রয়েছে। ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের নয়াবাজার শাখায় ১১টি অ্যাকাউন্টে যথাক্রমে ৩১ লাখ ৪১ হাজার ৬৯৮, ৩২ লাখ ৬৪ হাজার ৭৬২, ৩২ লাখ ৬৪ হাজার ৭৬২, ৩৬ লাখ ৮ হাজার ৯৭২, ৩৫ লাখ ৯ হাজার ৪১৭, ৩৪ লাখ ৭২ হাজার ৩০২, ৩৪ লাখ ৭২ হাজার ৩০২, ৩৩ লাখ ৪৭ হাজার ৪৮৫, ২৫ লাখ ৫৩ হাজার ৪৩৭, ২৫ লাখ ৫৩ হাজার ৪৩৭ ও ২০ লাখ ৪২ হাজার ৭৫০ টাকার এফডিআর রয়েছে। উত্তরা ব্যাংকের ধোলাইখাল শাখায় ৬৯ হাজার ৪৩৯ টাকার এফডিআর পাওয়া গেছে। ঢাকা ব্যাংকের বংশাল শাখায় এনামুল হক এনুর পাঁচটি অ্যাকাউন্টে যথাক্রমে ৩২ লাখ ৫৫ হাজার ৯৫৬, ২৯ লাখ ২৪ হাজার ৮৩১, ২৯ লাখ ৩৩ হাজার ৩১৯, ২৫ লাখ ৮৯ হাজার ৩৭৫ ও ২৮ লাখ ৮৯ হাজার ৩৭৫ টাকার এফডিআর পাওয়া গেছে। ইস্টার্ন ব্যাংকের ইংলিশ রোড শাখার একটি অ্যাকাউন্টে ৩০ লাখ ৫৮ হাজার ১৪৪ টাকার এফডিআর এবং অন্য একটি সঞ্চয়ী অ্যাকাউন্টে ২৩ হাজার ৩৭২ টাকা পাওয়া গেছে। মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ধোলাইখাল শাখার দুটি অ্যাকাউন্টে রয়েছে ৩২ লাখ ৯৯ হাজার ৪৮৬ ও ৩৩ লাখ ৮৬ হাজার ৯১৮ টাকার এফডিআর। প্রিমিয়ার ব্যাংকের বংশাল শাখার তিনটি অ্যাকাউন্টে ৩৫ লাখ ৩৯ হাজার ৭৩৩, ৩১ লাখ ৪৪ হাজার ৬৭৬ ও ৩৬ লাখ ৫ হাজার ৫৬ টাকার এফডিআর পাওয়া গেছে। প্রাইম ব্যাংকের বংশাল শাখার তিনটি অ্যাকাউন্টে ৩৩ লাখ ৩ হাজার ১০৬, ২৯ লাখ ৫৬ হাজার ৮১৪ ও ২৯ লাখ ১১ হাজার ৯৮১ টাকার এফডিআর পাওয়া গেছে। ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের নয়াবাজার শাখায় ১১টি অ্যাকাউন্টে যথাক্রমে ৩১ লাখ ৪১ হাজার ৬৯৮, ৩২ লাখ ৬৪ হাজার ৭৬২, ৩২ লাখ ৬৪ হাজার ৭৬২, ৩৬ লাখ ৮ হাজার ৯৭২, ৩৫ লাখ ৯ হাজার ৪১৭, ৩৪ লাখ ৭২ হাজার ৩০২, ৩৪ লাখ ৭২ হাজার ৩০২, ৩৩ লাখ ৭ হাজার ৪৮৫, ২৫ লাখ ৫৩ হাজার ৪৩৭, ২৫ লাখ ৫৩ হাজার ৪৩৭ এবং ২০ লাখ ৪২ হাজার ৭৫০ টাকার এফডিআর পাওয়া গেছে। উত্তরা ব্যাংকের ধোলাইখাল শাখায় ১৫ হাজার ৭৭০ টাকা জমা পাওয়া গেছে। জব্দ এসব ব্যাংক অ্যাকাউন্টে গত ২২ মার্চে অনুসন্ধানে ক্যাসিনো ব্রাদার্স এনু-রূপনের মোট ১৯ কোটি ১১ লাখ ৩৬ হাজার ৩৯৪ টাকা জমা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। এদিকে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের নয়াবাজার শাখায় এদের এনু রূপন স্টিল হাউস নামে করা অ্যাকাউন্টে ২০৮ কোটি ৪৪ লাখ ১১ হাজার ৬৫০ টাকা জমা ও ২০৫ কোটি ৮৪ লাখ ৮১ হাজার ১৮৪ টাকা উত্তোলনের তথ্য পাওয়া গেছে। ওই অ্যাকাউন্টে এখন জমা রয়েছে ২০ লাখ ৫৯ হাজার ৪৬৯ টাকা।

সর্বশেষ খবর