বৃহস্পতিবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

হত্যা ও গণধর্ষণের দুই মামলায় সাত জনের ফাঁসি

প্রতিদিন ডেস্ক

রাজবাড়ীতে নারী চিকিৎসককে গণধর্ষণের মামলায় তিনজন ও খুলনার রূপসায় মাদ্রাসাছাত্র মুসা শিকদার (১১) হত্যা মামলায় চার আসামিকে ফাঁসির রায় দিয়েছে পৃথক দুই আদালত। পাশাপাশি দুই মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় পাঁচজনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। রাজবাড়ী প্রতিনিধি জানান, রাজবাড়ীতে নারী চিকিৎসক  গণধর্ষণ মামলার রায়ে তিন আসামিকে মৃত্যুদন্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। গতকাল দুপুর ১২টায় রাজবাড়ীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক শারমিন নিগার এ রায় ঘোষণা করেন। এ ছাড়া রায়ে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তিনজনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন- রাজবাড়ী সদর উপজেলার মজলিশপুর গ্রামের রানা মোল্লা (২৭) ও হান্নান সরদার (৩২) এবং খানখানাপুর ইউনিয়নের দত্তপাড়া গ্রামের মামুন মোল্লা (২২)। রায় ঘোষণার সময় দ প্রাপ্তরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রাজবাড়ীর জর্জ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর মো. উজির আলী শেখ বলেন, দীর্ঘ সময়ের বিচার-বিশ্লেষণ ও সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে আদালত এ রায় দিয়েছে। রায়ে বাদীপক্ষ অত্যন্ত খুশি হয়েছে। এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে বলে জানান আসামি পক্ষের আইনজীবী। প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে ওই নারী চিকিৎসক ঢাকা থেকে গোপালগঞ্জ যাওয়ার উদ্দেশে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ মোড় এলাকায় এসে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। এ সময় দন্ড প্রাপ্তরা তাকে গন্তব্যস্থলে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় উঠিয়ে বসন্তপুর ইউনিয়নের মজলিশপুর নিহাজ জুট মিল এলাকায় একটি বাঁশ ঝাড়ে নিয়ে জোরপূর্বক গণধর্ষণ করে। নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা জানান, খুলনার রূপসা এলাইপুরে মাদ্রাসা ছাত্র মুসা শিকদার (১১) হত্যা মামলায় চার আসামিকে মৃত্যুদ  ও প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড  দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে মুসাকে অপহরণের দায়ে ওই চার আসামিকে ১০ বছরের কারাদ  ও ২০ হাজার টাকা করে অর্থদ  দেওয়া হয়েছে। অনাদায়ে এক বছরের কারাদ  দেওয়া হয়। রায়ে সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হচ্ছেন- বনি আমিন (২৫), রাহিম শেখ (২২), রাজু শিকদার (২৩) ও নুহু শেখ (৩৫)। রায় ঘোষণাকালে আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এনামুল হক এসব তথ্য জানিয়েছেন। রায়ে অপর দুই আসামি জসিম শিকদার ও সিরাজ শিকদারকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

গতকাল দুপুরে খুলনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. মশিউর রহমান চৌধুরী এ রায় ঘোষণা করেন। নিহতের মা মামলার বাদী রশিদা বেগম বলেন, প্রত্যাশার চেয়েও বেশি সাজা হয়েছে আসামিদের। তিনি দ্রুত এ রায় কার্যকরের দাবি জানান। নিহত মুসা এলাইপুর গ্রামের মুস্তাকিম সিকদারের ছেলে।

জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে আসামিরা মুসা শিকদারকে দোকান থেকে অপহরণ ও পরে হত্যা করে লাশ নদীতে ফেলে দেয়। ২০ সেপ্টেম্বর মুসা শিকদারের লাশ আঠারবেকি নদী থেকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের মা রশিদা বেগম বাদী হয়ে রূপসা থানায় মামলা করেন। পরে গ্রেফতার হওয়া চার আসামি অপরাধ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। ২০১৯ সালের ৩০ মে তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির এসআই মুক্ত রায় চৌধুরী আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পূর্ব বিরোধের জের ধরে মুসাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর লাশ নদীতে ফেলে দেওয়া হয়।

সর্বশেষ খবর