রবিবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

মানুষ ধৈর্য না ধরেই এখন হুটহাট কিছু করে বসে

-ডা. বিধান রঞ্জন রায়

মানুষ ধৈর্য না ধরেই এখন হুটহাট কিছু করে বসে

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের নতুন পরিচালক ডা. বিধান রঞ্জন রায় বলেছেন, দেশে মানসিকভাবে যাদের সুযোগ ও ক্ষমতা আছে তারা কিন্তু কোনো নিয়মনীতির ধার ধারেন না। তারা নিজেদের প্রয়োজনের কিছু যে কোনোভাবে আদায় করে থাকেন। আর এ থেকে অসহিষ্ণুতার দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়। সমাজে এখন অসহিষ্ণুতাও বড় ফ্যাক্টর। এখন মানুষ ধৈর্য না ধরে হুটহাট কিছু একটা করে বসে। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে তিনি এসব কথা বলেন।

এই মনোচিকিৎসক বলেন, সমাজের নৈতিক অবক্ষয়ের কারণে হত্যাকা-ের মতো যেসব ঘটনা ঘটছে তার পরিমাণ মহামারীতে আরও বৃদ্ধি পয়েছে। আমাদের সমাজ এখন চালিত হচ্ছে মুনাফার দ্বারা। এখানে মুনাফাই সবকিছুর চালিকাশক্তি। একই সঙ্গে সমাজে ব্যক্তিকেন্দ্রিকতার হার বৃদ্ধি পেয়েছে। আর ব্যক্তিকেন্দ্রিকতা ও মুনাফাভিত্তিক সমাজব্যবস্থা যেখানে ‘ডমিন্যান্ট’ থাকে সেখানে মানুষের সামাজিক সংহতি কমতে থাকে। তখন অন্যের প্রতি দায়িত্ববোধ কমতে থাকে। এ সমাজব্যবস্থায় কেউ একজন সন্তুষ্ট হতে না পারলে অন্যের প্রতি সহিংস আচরণ করে। অন্যদিকে পরিবারগুলোর দারিদ্র্য সমাজের নৈতিক অবক্ষয়ের অন্যতম কারণ। এখন মানুষের মধ্যে করোনা সংক্রমণের ভয় কমে গেছে। মানুষও অর্থনৈতিক চাপের মধ্যে পড়েছে। অর্থনৈতিক অসচ্ছলতা মানুষকে ক্ষুব্ধ ও হতাশ করে রাখে। এ থেকে মানুষের মধ্যে সহিংসতার জন্ম নেয়। এগুলো হচ্ছে ‘সাইকোলজিক্যাল মেকানিজম’। বলা যায়, আমাদের সার্বিক অবস্থাই এ ধরনের সহিংস ঘটনা ঘটাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, কোনো সামাজিক সমস্যার সমাধান একজন একজন করে করা সম্ভব নয় বরং যে সামাজিক ইস্যুগুলো এ ধরনের সমস্যার জন্ম দিচ্ছে তা চিহ্নিত করা প্রয়োজন। তিনি বলেন, বিভিন্ন জরিপ বলছে করোনাকালে আমাদের দেশের ৯৫ শতাংশ মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতি ঘটেছে। আবার ১-২ শতাংশের এ মহামারীতেও অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি ঘটেছে। আর এই যে বৈষম্য বৃদ্ধি পাচ্ছে তা এক ধরনের সামাজিক অসহিষ্ণুতা তৈরি করছে। আমরা যদি সামাজিক বৈষম্য কমাতে পারি, মানুষের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারি এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে পারি তাহলে সমাজের চিত্র আমূল পাল্টে যাবে।

সর্বশেষ খবর