সোমবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা
কৃষি

জনপ্রিয় হচ্ছে ভাসমান বেডে সবজি চাষ

শেখ আহসানুল করিম, বাগেরহাট

জনপ্রিয় হচ্ছে ভাসমান বেডে সবজি চাষ

বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলায় পানিতে ভাসমান পদ্ধতিতে চারা উৎপাদন ও সবজি চাষ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ পদ্ধতিতে সবজি চাষ করে লাভবান হচ্ছে এ উপজেলার চাষিরা। এরই ধারাবাহিকতায় ফকিরহাট উপজেলার বিলাঞ্চলে গত কয়েক বছর ধরে ভাসমান বেডে সবজি চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়। জলাবদ্ধ এলাকায় বেড বা ধাপে সবজি চাষ করে কর্মসংস্থানের সুযোগ থাকায় উপজেলার চাষিদের উৎসাহিত করছে কৃষি বিভাগ।  উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এই উপজেলার বেশিরভাগ জমিতে কৃষকেরা শুধু সবজি চাষ নয়, আমন ধানের চাষও করছে। সরকার চাষিদের আত্মকর্মসংস্থানে ২০১৩ সাল থেকে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অধীনে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের অর্থায়নে ‘বন্যা ও জলাবদ্ধ প্রবণ এলাকায় জলবায়ু পরিবর্তন অতিযোজন কৌশল হিসেবে ভাসমান সবজি ও মসলা উৎপাদন প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্প’ গ্রহণ করে। ওই প্রকল্পের আওতায় রাজিহার ইউনিয়নের বাশাইল গ্রামে একটি সমিতির মাধ্যমে তাদের প্রশিক্ষণ, বিনামূল্যে বীজ, বেড তৈরির খরচ ও বিভিন্ন উপকরণ দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ফকিরহাট উপজেলায় ৫ হেক্টর বেডে সবজি ও মসলা চাষ হচ্ছে।

সদর ইউনিয়নের সবজি চাষি রজব আলী গাজী জানান, আমি তিন বছর ধরে ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা চাষ করে আসছি। বর্তমানে আটটি বেডে লাল শাক, কলমি শাক, ঢ্যাঁড়শ, মিষ্টি কুমড়া, লাউ ও হলুদের চাষ করছি। প্রথম দিকে কিছুটা সংকোচবোধ করেছিলাম কিন্তু উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় বর্তমানে অনেকটাই স্বাবলম্বী। লখপুর ইউনিয়নের সবজি চাষি জয়দেব বিশ্বাস জানান, প্রত্যেকটি ভাসমান ধাপে চারবার চারা উৎপাদন করা যায়। প্রথমবার এক মাস পরিচর্যার পর চারাগুলো বিক্রি করলেও পরবর্তীতে ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যেই পুনরায় চারা বিক্রি করা যায়। বর্তমানে ছয়টি বেডে সবজি চাষ করছি। বন্যা, অতিবৃষ্টিতে এই পদ্ধতিতে চাষ করলে কোনো ক্ষতি হয় না।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তা তন্ময় দত্ত বলেন, গত তিন বছরে ভাসমান বেডে সবজি চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষকদের সহায়তা ও উদ্বুদ্ধকরণ করছি। পার্শ্ববর্তী জেলা গোপালগঞ্জে কৃষকদের নিয়ে প্রযুক্তি দেখিয়েছি। ফলে কৃষকদের মাঝে আগের চেয়ে বেশি আগ্রহ দেখা গিয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবীদ নাসরুল মিল্লাত জানান, সবজি চাষিদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার পর তাদের বিনামূল্যে বীজ, সারসহ বিভিন্ন উপকরণ দেওয়া হয়। ৫০ জন চাষিকে এই প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এখন এর বাইরে অনেকে নিজ উদ্যোগে বেডে চারা উৎপাদন করছে। আশা করছি খুব দ্রুত আমরা এ অঞ্চলের কৃষকদের মাঝে আরও প্রশিক্ষণ ও সহায়তার মাধ্যমে ভাসমান বেডে চাষাবাদ করতে আগ্রহী করাতে পারব।

সর্বশেষ খবর