শিরোনাম
মঙ্গলবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

মার খেয়েও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ক্ষমা করলেন মুক্তিযোদ্ধা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

বিনাচিকিৎসায় স্ত্রীর মৃত্যু। প্রতিবাদ করায় ছেলেকে পিটিয়ে দেওয়া হলো পুলিশে। আর ছেলের সামনেই মুক্তিযোদ্ধা বাবারে বুকে-পিঠে লাথি মারলেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। তারপরও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা যখন হাত ধরে ক্ষমা চাইলেন তখন মন গলে গেল মুক্তিযোদ্ধার। ক্ষমা করে দিলেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের অভিযুক্ত ইন্টার্ন চিকিৎসকদের।

গত ২ সেপ্টেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের মুক্তিযোদ্ধা ইসাহাক আলীর স্ত্রী পারুল বেগমকে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর তার মৃত্যু হয় বিনাচিকিৎসায়। চিকিৎসকদের ডাকলেও কেউ আসেনি। এ সময় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরে চিকিৎসকের গায়ে হাত তোলার অভিযোগে মুক্তিযোদ্ধার ছেলে রাকিবুল ইসলামকে আটক করে পিটিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরে হাসপাতালের পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। বিকালে আদালত থেকে জামিন নিয়ে রাকিবুল মায়ের দাফনে অংশ নেন।

হাসপাতালে মুক্তিযোদ্ধা ইসহাক আলীকেও মারধর করেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। এ ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এই কমিটি প্রত্যাখ্যান করে শনিবার মানববন্ধন করেন রাজশাহীর মুক্তিযোদ্ধারা। পরে ইসাহাক আলী দুই ইন্টার্নসহ তিনজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। রবিবার ইন্টার্ন চিকিৎসকদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করে সামাজিক সংগঠন রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদ। এ দিন মুক্তিযোদ্ধারাও জেলা প্রশাসককে একটি স্মারকলিপি দেন। এরপর সোমবার সকাল ১০টার দিকে রাজশাহী সার্কিট হাউসে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে বসেন জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল। সেখানে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিলুর রহমান, মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. নওশাদ আলীও ছিলেন। তাদের উপস্থিতিতে অভিযুক্ত ইন্টার্ন চিকিৎসক শোভন সাহা ও আবদুর রহিম মুক্তিযোদ্ধার কাছে ক্ষমা চান। এরপর মুক্তিযোদ্ধারা নগরীর রেলগেট এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে পূর্বঘোষিত সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে রাজশাহী মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ডা. আবদুল মান্নান বলেন, উভয়পক্ষের মধ্যে সমঝোতা করে দিলেন জেলা প্রশাসক। সেখানে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ক্ষমা চেয়েছেন। মামলার বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা ডা. আবদুল মান্নান বলেন, আমরা বলেছি মামলা নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করতে পারব না। তখন প্রশাসন বলেছে, মামলা তারা দেখবেন। সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযুদ্ধকালীন গেরিলা কমান্ডার শফিকুর রহমান রাজা, কবিকুঞ্জের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক রুহুল আমিন প্রামাণিক, মুস্তাফিজুর রহমান খান আলম, রবিউল ইসলাম, নাজিম উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর