করোনা মহামারীর মধ্যেও গতকাল হাজার হাজার নেতা-কর্মীর উপস্থিতিতে সরব হয়ে ওঠে রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়। জাতীয় সংসদে ঢাকা-৫, ঢাকা-১৮, নওগাঁ-৬ ও সিরাজগঞ্জ-১ আসনে উপনির্বাচনের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা সকাল থেকে কর্মী-সমর্থক নিয়ে তাদের মনোনয়নপত্র জমা দেন। চার আসনের বিপরীতে মনোনয়নপত্র বিক্রি হয়েছে ২৯টি। আজ মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হবে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসন কার্যালয়ে। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা পার্লামেন্টারি বোর্ডের সদস্য হিসেবে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নেবেন।
জানা যায়, গতকাল দিনভর মনোনয়ন ফরম জমা দেন ঢাকা-৫ আসনের জন্য নবী উল্লাহ নবী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া, মো. জুম্মন মিয়া ও আকবর হোসেন নান্টু। ঢাকা-১৮ আসনের জন্য এম কফিল উদ্দিন আহম্মেদ, এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, বাহাউদ্দিন সাদি, ইসমাইল হোসেন, মোস্তফা জামান সেগুন, মো. আখতার হোসেন ও আব্বাস উদ্দিন মনোনয়ন জমা দেন। নওগাঁ-৬ আসনে আনোয়ার হোসেন বুলু, আবদুস শুকুর, এম এম ফারুক জেমস, মাহমুদুল আরেফিন স্বপন, ইসহাক আলী ও আতিকুর রহমান রতন মোল্লা, শেখ মো. রেজাউল ইসলাম, মো. শফিকুল ইসলাম ও আবু সাঈদ রফিকুল আলম রফিক মনোনয়ন ফরম জমা দেন। এ ছাড়া সিরাজগঞ্জ-১ আসনে বি এম তাহজিবুল ইসলাম, নাজমুল হাসান তালুকদার রানা ও রবিউল হাসান ১০ হাজার টাকা মূল্যমানে ফরম সংগ্রহ করে ২৫ হাজার টাকা জামানতসহ ফরম জমা দেন। আজ বিকাল ৫টায় গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে হবে প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার। গতকাল সকাল ৯টা থেকেই ধানের শীষ, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি নিয়ে কর্মী-সমর্থকরা মিছিল নিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমবেত হন। মনোনয়নপ্রত্যাশীরা দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর কাছে তার মনোনয়নপত্র জমা দেন। এ সময় রিজভী আহমেদ বলেন, মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। আমরা এর আগেও দেখেছি, নির্বাচন, নির্বাচন কমিশন ও ভোট এগুলোকে জাদুঘরে পাঠানোর জন্য সরকার সব আয়োজন সম্পন্ন করেছে। আমরা ১২ বছর নিরবচ্ছিন্ন সংগ্রাম করছি গণতন্ত্র ফেরানোর জন্য। এ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ নেতা থেকে তৃণমূলের নেতা অনেকে ৫০ থেকে ৩০০টি পর্যন্ত মামলা নিয়ে এই সংগ্রামে অংশ নিচ্ছেন। আমরা এসব উপনির্বাচনকে আন্দোলন-সংগ্রামের অংশ হিসেবে নিয়েছি।
তিনি বলেন, সরকার রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে নানা কিছু করতে পারে। আমাদের বিশ্বাস ও আস্থার জায়গা হচ্ছে জনগণ। আমরা জনগণের শক্তির ওপর ভর করে এই উপনির্বাচনে অংশ গ্রহণ করব। ক্ষমতাসীনরা রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে জনগণের ওপর অত্যাচার করে তাদের হয়তো সাময়িক লাভ হতে পারে। অবশেষে জনগণের শক্তিরই চূড়ান্ত বিজয় হবে। সেই লক্ষ্যে আমরা এগোচ্ছি। ইনশাআল্লাহ এসব উপনির্বাচনে বিএনপির বিজয়ী হবে। নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ঢাকা-৫ এবং নওগাঁ-৬ আসনে উপনির্বাচনে ভোট গ্রহণ হবে ১৭ অক্টোবর। ঢাকা-১৮ ও সিরাজগঞ্জ-১ আসনের উপনির্বাচনের তফসিল কমিশন এখনো ঘোষণা করেনি। আওয়ামী লীগের হাবিবুর রহমান মোল্লার মৃত্যুতে ঢাকা-৫, ইসরাফিল আলমের মৃত্যুতে নওগাঁ-৬, মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুতে সিরাজগঞ্জ-১ এবং সাহারা খাতুনের মৃত্যুতে ঢাকা-১৮ আসন শূন্য হয়।
