বগুড়ায় মাল্টা চাষ বাড়ছে। জেলার বিভিন্ন উপজেলায় গাছে সবুজ রঙের মাল্টা ধরে ঝুলে থাকতে দেখা যায়। গত কয়েক বছরের চেয়ে চলতি বছরে জমি বেড়েছে মাল্টা চাষের। স্থানীয়ভাবে মাল্টার বেশ চাহিদা রয়েছে। দেশে করোনাভাইরাসের প্রভাবের প্রেক্ষাপটে রোগ প্রতিরোধে মাল্টার গুরুত্ব যেমন বেড়েছে, তেমনি মাল্টা চাষে সফলতা দেখছেন চাষিরা। ফরমালিনমুক্ত থাকায় দেশি মাল্টার চাহিদা বেড়েছে। বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, বগুড়ার ধুনট, নন্দীগ্রাম, শাজানপুরসহ কয়েকটি উপজেলায় চাষিরা প্রথমে শখের বসে মাল্টা চাষ শুরু করেন। কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে বর্তমানে জেলার ১২টি উপজেলায় মাল্টা চাষ হচ্ছে। সাধারণত দেশের বাইরের মাল্টা হলুদ ও কমলা রঙের হলেও দেশে চাষকৃত মাল্টা হচ্ছে সবুজ রঙের। দামে কিছুটা কম থাকায় সব শ্রেণির মানুষ খুব সহজেই দেশীয় জাতের মাল্টা কিনতে পারছেন। বগুড়ার ধুনট উপজেলার চৌকিবাড়ী ও চিকাশী ইউনিয়নসহ বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, স্থানীয় কৃষকরা অপেক্ষাকৃত উঁচু জায়গায় মাল্টার বাগান করেছেন। কৃষি বিভাগ মাল্টা চাষাবাদে কৃষকদের প্রযুক্তিগত পরামর্শ দিয়ে মাল্টা চাষ সম্প্রসারণে কাজ করছে। এই অঞ্চলের উৎপাদিত মাল্টা চাষ এখন অনেকটাই লাভজনক। ধুনট উপজেলার চিকাশী ইউনিয়নের জোড়শিমুল গ্রামের স্কুল শিক্ষক রজিব উদ্দিন সরকার মাল্টা চাষে ব্যাপক সফলতা অর্জন করেছেন। তিনি ২০১৮ সালে ১ একর ১৬ শতক জমিতে পেয়ারা গাছের পাশাপাশি ৩৫০টি মাল্টা গাছ রোপণ করেন। বর্তমানে গাছগুলো প্রায় তিন ফুট উচ্চতার হয়েছে। প্রতিটি মাল্টা গাছেই প্রায় ২৫০ থেকে ৩০০টি পর্যন্ত মাল্টা ধরেছে। ২০১৮ সালে রোপণ করা মাল্টা বাগান থেকে দুই বছর পর ফলন পেতে শুরু করেছেন রজিব উদ্দিন। বর্তমানে তার বাগানে মাল্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। ইতিমধ্যে কিছু মাল্টা বিক্রিও করেছেন। সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে পুরোদমে বাগান থেকে ফলগুলো তুলে বাজারজাত করবেন শিক্ষক রজিব উদ্দিন। মাল্টাচাষি রজিব উদ্দিন বলেন, সরকারি অনুদান পেলে মাল্টা চাষে অনেক কৃষকই এগিয়ে আসবেন। এতে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করে লাভবান হওয়া সম্ভব। এ ছাড়া জেলার কাহালু, শিবগঞ্জ উপজেলায় কিছু কিছু মাল্টা চাষ শুরু হয়েছে। বগুড়ার ধুনট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মশিদুল হক বলেন, মাল্টা চাষ অনেকটাই লাভজনক। তাই অনেক কৃষকই এখন মাল্টা চাষে ঝুঁকে পড়ছেন। মাল্টা চাষ করতে কৃষকদের প্রযুক্তিগত পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করা হচ্ছে। উপজেলায় আগের চেয়ে মাল্টা চাষ বেড়েছে।
