সোমবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

সুস্থতা বাড়লেও সংকটাপন্ন রোগী কমছে না

২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত ১৪৭৬, মৃত্যু ৩১

নিজস্ব প্রতিবেদক

সুস্থতা বাড়লেও সংকটাপন্ন রোগী কমছে না

নমুনা পরীক্ষায় করোনাভাইরাস সংক্রমিত রোগী শনাক্তের হার গত কয়েক দিন ধরেই কমছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে সুস্থতার হার। সাম্প্রতিক সময় দৈনিক শনাক্তের চেয়ে সুস্থ হচ্ছেন আরও বেশি রোগী। তবে কভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালগুলোতে সংকটাপন্ন করোনা রোগীর সংখ্যা কমছে না। প্রতিদিন হাসপাতালে ৩০ থেকে ৪০ জনের মৃত্যু হলেও প্রায় ৩০০ আইসিইউ সব সময়ই রোগীতে পূর্ণ থাকছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, কভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালগুলোতে বর্তমানে আইসিইউ আছে ৫৪৮টি। চলতি মাসের শুরুর দিন থেকে গতকাল পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৪৫২ জন করোনা রোগীর। এর মধ্যে ৪২৬ জনই মারা গেছেন হাসপাতালে।

প্রতিদিনই হাসপাতালে মারা গেছেন ৩০ থেকে ৪০ জন। তবে আইসিইউর নির্দিষ্টসংখ্যক শয্যা কখনোই খালি হয়নি। গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আইসিইউতে রোগী ভর্তি ছিলেন যথাক্রমে ৩০০, ৩০৬, ৩১৬, ৩১৩, ৩১৮, ৩১৬, ৩০৭, ৩০৪, ৩০১, ২৯৫, ২৮৬, ২৮৬ ও ২৯৪ জন। এদিকে স্বাস্থ্য অধিদফতর বলছে, আড়াইশর মতো আইসিইউ সবসময়ই খালি থাকছে। তবে হাসপাতাল ঘুরে আইসিইউ না পাওয়া নিয়ে অভিযোগ পাওয়া গেছে অনেক সংকটাপন্ন রোগীর স্বজনের। কেউ আবার মাত্রাতিরিক্ত বিলের আশঙ্কায় মৃত্যুপথযাত্রী রোগীকে আইসিইউতে ভর্তি করাতে পারছেন না। এতে আইসিইউ খালি থাকলেও সাধারণ বেডে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার অভাবে অকালে প্রাণ হারাচ্ছেন অনেক সংকটাপন্ন রোগী।

এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা সংক্রমণে আরও ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। ২৮ জন হাসপাতালে ও তিনজন বাড়িতে মারা গেছেন। এর মধ্যে ২৫ জন পুরুষ ও ছয়জন নারী। মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে চার হাজার ৭৩৩ জন। ২৪ ঘণ্টায় ১২ হাজার ৯৯৯টি নমুনা পরীক্ষায় একহাজার ৪৭৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার গতকালের চেয়েও কমে দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ৩৫ শতাংশে। এ সময় সুস্থ হয়ে উঠেছেন আরও দুই হাজার ৩৭২ জন যা শনাক্তের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ। এ পর্যন্ত শনাক্ত করোনা রোগীর মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৩৭ হাজার ৫২০ জন। মোট সুস্থ হয়েছেন দুই লাখ ৪০ হাজার ৬৪৩ জন। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৭১ দশমিক ৩০ শতাংশ ও মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪০ শতাংশ। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৩১ জনের মধ্যে ২১ জনই ষাটোর্ধ্ব। এছাড়া সাতজনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছর, দুইজনের ৪১ থেকে ৫০ বছর ও একজনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। এর মধ্যে ১৮ জন ঢাকা, পাঁচজন চট্টগ্রাম, দুইজন করে রাজশাহী, সিলেট ও রংপুর এবং একজন করে খুলনা ও ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।

এ পর্যন্ত মৃতদের ৭৭ দশমিক ৮৮ শতাংশ পুরুষ ও ৫০ দশমিক ১৮ শতাংশের বয়স ৬০ বছরের বেশি। ৪৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ মৃত্যুই হয়েছে ঢাকা বিভাগে। গতকাল দেশের কভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালগুলোর ১৪ হাজার ২৭৫টি সাধারণ শয্যার মধ্যে রোগী ভর্তি ছিল তিন হাজার ২৪১টিতে। আর ৫৪৮টি আইসিইউর মধ্যে রোগী ভর্তি ছিল ২৯৪টিতে। বাংলাদেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদফতর।

সর্বশেষ খবর