সোমবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

ভুটানকে ১৬ পণ্যে শুল্ক সুবিধা দেবে বাংলাদেশ

পিটিএ চুক্তির প্রস্তাব উঠছে মন্ত্রিসভায়

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে প্রথম স্বীকৃতি দানকারী দেশ ভুটানকে প্রথম অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তির (পিটিএ) জন্য বেছে নিয়েছে সরকার। দুই দেশের মধ্যে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে বাংলাদেশ ভুটানকে আরও ১৬ পণ্যে শুল্ক সুবিধা দেবে। বিনিময়ে ভুটান দেবে ১০ পণ্যে শুল্ক সুবিধা। দ্বিপক্ষীয় এই বাণিজ্য চুক্তিটি স্বাক্ষরের একটি প্রস্তাব আজ মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে। সংশ্লিষ্টরা জানান, বাংলাদেশ মূলত ভুটান থেকে বোল্ডার পাথর আমদানি করে থাকে। এই চুক্তির ফলে পণ্যটি শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা গেলে দেশের নির্মাণ শিল্পের ব্যয় কমে যাবে। খরচ কমবে দেশের অবকাঠামো উন্নয়নেও। বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এর আগে কোনো দেশের সঙ্গে অগ্রাধিকার বাণিজ্য চুক্তি হয়নি। ভুটানকে নিয়েই প্রথমবারের মতো আমরা শুল্ক সুবিধার জন্য কোনো দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করতে যাচ্ছি। আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য হচ্ছে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করা। এরই মধ্যে এ বিষয়ে ইউরোপ, আফ্রিকা এবং ইউরাশিয়ান অঞ্চলের ১০টিরও বেশি দেশের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলে জানান বাণিজ্য সচিব।

জানা গেছে, এর আগে বাংলাদেশ আঞ্চলিক সহযোগিতার অধীনে ‘দক্ষিণ এশিয়া অগ্রাধিকার বাণিজ্য চুক্তি (সাপটা)’ করেছিল, যা পরে দক্ষিণ ‘এশিয়া মুক্ত বাণিজ্য (সাফটা)’ চুক্তিতে পরিণত হয়। বর্তমানে সাফটার আওতায় ভুটানকে ১৮টি পণ্যে শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা দেয় বাংলাদেশ, বিপরীতে ভুটান দেয় ৯২টি পণ্যে। নতুন চুক্তি কার্যকর হলে বাংলাদেশ ভুটানকে নতুন ১৬টি পণ্যসহ মোট ৩৪টি পণ্যে শুল্ক সুবিধা দেবে। বিপরীতে ভুটানে পাওয়া যাবে ১০২টি পণ্যে শুল্ক সুবিধা। দুই দেশ নিজেদের মধ্যে পণ্য তালিকা হস্তান্তর করেছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, পিটিএ চুক্তির ফলে বাংলাদেশ প্রায় ৩০টি তৈরি পোশাক শিল্প পণ্যের ওপর সুবিধা পাবে। এ ছাড়া পাট ও পাট জাতীয় পণ্য, চামড়া পণ্য ও জুতা, ফ্যান, ড্রাই সেল ব্যাটারি, ঘড়ি, আলু, কনডেন্সড মিল্ক, সিমেন্ট, টুথব্রাশসহ অন্যান্য পণ্যেও শুল্ক সুবিধা পাওয়া যাবে। অন্যদিকে বাংলাদেশে শুল্ক সুবিধার জন্য ভুটানের তালিকায় কমলা, আপেল, আদা, ফলের জুস, পাথর, কাঠ, (বোল্ডার) চুনাপাথরসহ অন্যান্য পণ্য রয়েছে। চুক্তিটি সম্পন্ন হলে পরে আলোচনার মাধ্যমে উভয় দেশ শুল্ক সুবিধার জন্য পণ্যের সংখ্যা বাড়াতে পারবে।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশ-ভুটানের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ২০১২-১৩ অর্থবছরে ছিল ২৬.৫২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বেড়ে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৫৭.৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। প্রথম দিকে বাণিজ্যের ভারসাম্য বাংলাদেশের দিকে ঝুঁকে থাকলেও এখন ভুটানের পক্ষে রয়েছে। কারণ পদ্মা সেতুসহ দেশের বড় বড় প্রকল্পে ভুটান থেকে বোল্ডার পাথর আমদানি করায় দেশটি থেকে আমদানি ব্যয় বেড়েছে।

সর্বশেষ খবর