সোমবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

পানিসম্পদ কমিটির মতামত ছাড়া নদী তীরে স্থাপনা নয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

এখন থেকে নদী তীরবর্তী স্থান বা প্লাবনভূমিতে সরকারি কোনো স্থাপনা নির্মাণের আগে ‘জেলা সমন্বিত পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা কমিটির’ মতামত নিতে হবে। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে সম্প্রতি এ বিষয়ে একটি চিঠি সব মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ও সচিবের কাছে পাঠানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, প্রতিবছর বর্ষাকালে বন্যা ও বন্যা-পরবর্তী সময়ে নদী ভাঙনের বিষয়টি নদীবিধৌত বাংলাদেশের জন্য একটি পুরনো সমস্যা। এ সমস্যা সমাধানে সরকার শতবর্ষী পরিকল্পনা ‘বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান-২১০০’ গ্রহণ করেছে। এর আওতায় সমন্বিতভাবে নদী ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বন্যা মোকাবিলায় প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। ‘এমনটি লক্ষ্য করা গেছে, যে কোনো প্রকার যাচাই ছাড়া নদী ভাঙনের সম্ভাবনা আছে এমন স্থানে অপরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন সরকারি- বেসরকারি অবকাঠামো (স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদ, মন্দির, রাস্তা, কালভার্ট, সেতু, সাইক্লোন শেল্টারসহ অন্যান্য স্থাপনা) নির্মাণ করা হয়। নদী ভাঙনের ফলে এসব স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ পরিস্থিতি  থেকে সরকারি অর্থ ও সম্পদ রক্ষায় অবকাঠামো নির্মাণের স্থান নির্বাচনের বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

চিঠিতে বলা হয়, বন্যা ও নদীর ভাঙনমুক্ত উপযুক্ত পরিসরে অবকাঠামো নির্মাণের এলাকা নির্বাচনের জন্য ওই স্থানের মাটির গঠনশৈলী, নদীর গতিপথ ও এর বৈশিষ্ট্য প্রভৃতি বিষয় সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকা আবশ্যক। নদীর গতিপথ ও এর বৈশিষ্ট্য বিষয়ে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় নিয়মিতভাবে পর্যবেক্ষণ করে থাকে। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বিশেষায়িত সংস্থাগুলো নদী প্লাবনভূমিসহ অন্যান্য জলাশয়ের গতি ও প্রকৃতি এবং ভূ-প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য নিয়মিতভাবে গবেষণা ও পরিবীক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।

‘সরকারি বিভিন্ন দফতরগুলো নদীর ভাঙনের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় অবকাঠামোগত উন্নয়ন কার্যক্রম প্রকল্প গ্রহণের আগে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে অবকাঠামো নির্মাণের স্থান নির্বাচনের ক্ষেত্রে সঠিক দিকনির্দেশনা ও মতামত গ্রহণ করতে পারে, যা উন্নয়ন বিনিয়োগের স্থায়িত্ব রক্ষায় সহায়ক হবে।’ এ বিষয়ে গত ১৮ আগস্ট অনুষ্ঠিত একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী নদীর পাড়ে বা চরে কোনো ধরনের সরকারি অফিস, বাসভবন, স্কুল ও কলেজ নির্মাণ না করার নির্দেশনা দিয়েছেন উল্লেখ করে চিঠিতে আরও বলা হয়, স্কুল-কলেজের ক্ষেত্রে সহজে খুলে সরিয়ে নেওয়া যায় এ রকম নির্মাণ কৌশল এবং ডিজাইন করে তৈরি করতে হবে। এ অবস্থায় ভবিষ্যতে নদী তীরবর্তী স্থান বা প্লাবনভূমিতে সরকারি  কোনো অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণের আগে ‘বাংলাদেশ পানি বিধিমালা ২০১৮’ অনুযায়ী গঠিত জেলা সমন্বিত পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা কমিটির পরামর্শ মতামত গ্রহণে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকে অনুরোধ জানানো হয়েছে চিঠিতে।

সর্বশেষ খবর