বৃহস্পতিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা
কৃষি

আনারসের চিপস নিয়ে আশা জেগেছে পাহাড়ে

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

আনারসের চিপস নিয়ে আশা জেগেছে পাহাড়ে

দেখতে সবুজ, ভিতরে হলুদ। খেতে মিষ্টি আর রসে ভরা। এ জন্যই রাঙামাটির আনারসের কদর দেশজুড়ে। দেশের চাহিদা মিটিয়ে আনারস রপ্তানি হয় বিদেশেও। তবে এখন শুধু আনারস না, এর তৈরি চিপসও ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে পাহাড়ে। পরীক্ষামূলকভাবে উৎপাদিত পাহাড়ের আনারসের চিপস। পাহাড়ের আনারসের চিপস কৃষকদের জন্য নতুন করে খুঁলছে অর্থনৈতিক দ্বার। সৃষ্টি হচ্ছে কর্মসংস্থান। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ পাইল্ট প্রজেক্ট সুফল হলে ছড়িয়ে দেওয়া হবে তিন পার্বত্য জেলায়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে রাঙামাটি নানিয়ারচর হর্টিকালচার সেন্টার কর্তৃপক্ষ পাহাড়ের ফলমূল দিয়ে চিপস ও আচার বানানোর জন্য পাইল্ট প্রকল্প নেওয়া হয়। এর আওতায় রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলায় নির্মাণ করা হয় আনারসের চিপস উৎপাদন কারখানা। ২০২০ সালের জুন মাসে কারখানাটি আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেছে। এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২০২২ সালে। তবে এরই মধ্যে ওই কারখানায় পরীক্ষামূলক আনারসের চিপস উৎপাদন সফল হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

শুধু আনারস নয়, পাহাড়ে উৎপাদিত তেঁতুল, কাঁঠাল, মিষ্টি আলু ও কলা দিয়েও চিপস তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির। একই সঙ্গে তেঁতুল, জলপাই, আমলকী দিয়ে ও হরেক রকম আচার উৎপাদন শুরু হয়েছে। রাঙামাটি নানিয়ারচর উপজেলার হর্টিকালচার সেন্টারের উপপরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে আড়াই হাজার প্যাকেট আনারসের চিপস উৎপাদন করা হয়েছে। এটি চলমান থাকবে ২০২২ সাল পর্যন্ত। মূলত, বেকার যুব সমাজের কর্মসংস্থান সৃষ্টি, পাহাড়ের উৎপাদিত আনারস অর্থনৈতিকভাবে কাজে লাগানোর জন্য এই প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। গত জুন মাসে আনুষ্ঠানিভাবে চিপস উৎপাদন শুরু হয়েছে। সম্পূর্ণ কেমিক্যালমুক্ত এ চিপস। সুন্দর প্যাকেটজাত করে চিপসটি বাজারে ছাড়া হয়েছে। মানুষের আগ্রহ বেড়েছে। এ আনারসের চিপসের প্যাকেটের নাম রাখা হয়েছে ‘আনানাস’। প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। চিপস তৈরিতে কেমিক্যাল ব্যবহার করা হচ্ছে না। মেশিনের মাধ্যমে কেটে পরিছন্ন করে শুকিয়ে চিপস তৈরি করা হচ্ছে। আনারস কাঁচা হলে অল্প পরিমাণ চিনির ব্যবহার হচ্ছে। এ আনারসের টিপস তৈরি করতে ১ হাজার ২০০ কৃষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। যাতে নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি করা যায়।

এদিকে পাহাড়ের আনারস দিয়ে চিপস উৎপাদন করায় নতুন স্বপ্ন বুনছেন কৃষকরা বলছেন রাঙামাটি নানিয়ারচর উপজেলার কৃষক ঝন্টু চাকমা। তিনি বলেন, পার্বত্যাঞ্চলে প্রচুর পরিমাণ আনারস উৎপাদন হয়। কিন্তু তার মূল্য কখনো কৃষকরা পায়নি। সংরক্ষণেল অভাবে বাজারজাত করা যেত না। পরিবহন সংকটের কারণে অনেক আনারস বাগানে পচে নষ্ট হতো। কিন্তু এখন তা আর হবে না। আনারসের চিপস তৈরি কারখানা কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি কিনে নিয়ে যাচ্ছে আনারস। এতে অর্ধেক কমে গেছে আনারস কৃষকের কষ্ট।

সর্বশেষ খবর