দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা অবৈধ সম্পদ অর্জন মামলায় বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশের জামিন আবেদন আদালত নামঞ্জুর করেছে। পাশাপাশি প্রদীপ ও তার স্ত্রীর অবৈধ সম্পত্তি ক্রোকের জন্য করা আবেদনটি মঞ্জুর করেছে আদালত। গতকাল চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালত এ আদেশ দেয়।
এর আগে ২৩ আগস্ট সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ হত্যা মামলায় আটক ও বরখাস্ত হওয়া টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ এবং তার স্ত্রী চুমকির বিরুদ্ধে প্রায় চার কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেছিল দুদক। এর মধ্যে ৩ কোটি ৯৫ লাখ ৫ হাজার ৬৩৫ টাকা ওসি প্রদীপ ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জন করেছেন বলে দুদক অভিযোগ এনেছে।
বাকি ১৩ লাখ ১৩ হাজার ১৭৫ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করার অভিযোগ আনা হয়েছে চুমকির বিরুদ্ধে। এ প্রসঙ্গে দুদকের পিপি কাজী সানোয়ার আহমেদ লাভলু বলেন, ‘বিজ্ঞ আদালত প্রদীপ দাশের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দিয়েছেন। এ ছাড়া দুদকের পক্ষে আমরা তার অবৈধ সম্পদ ক্রোকের আবেদন করেছি। আদালত তার অবৈধ সম্পদ ক্রোকের এ আবেদন অনুমোদন করেছেন।’ এদিকে প্রদীপ ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদ অর্জন করে স্ত্রীর নামে হস্তান্তর ও স্থানান্তর করেছেন বলেও দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদন এবং এজাহারে বলা হয়েছে। দুদকের চট্টগ্রাম জেলা সমন্বিত কার্যালয়-২-এর সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন বাদী হয়ে মামলাটি করেন। যদিও ঘটনাস্থল বিবেচনায় মামলাটি করা হয়েছে দুদক, চট্টগ্রাম জেলা সমন্বিত কার্যালয়-১-এ। উল্লেখ্য, প্রদীপ কুমার দাশ চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার সারোয়াতলী ইউনিয়নের উত্তর সারোয়াতলী গ্রামের মৃত হরেন্দ্র লাল দাশের ছেলে। চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালি থানার পাথরঘাটা আর সি চার্চ রোডে তার নিজস্ব একটি আবাসিক ভবন আছে। সেই ভবনে তার স্ত্রী চুমকি সন্তানদের নিয়ে থাকতেন। কিন্তু টেকনাফে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ হত্যার ঘটনার পর শুরু থেকেই প্রদীপের স্ত্রী চুমকি পলাতক রয়েছেন। নিরীহ ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষকে ক্রসফায়ারের নামে হত্যার অভিযোগে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে প্রদীপের বিরুদ্ধে বেশকিছু মামলাও হয়েছে। এসব মামলার অধিকাংশ এজাহারে প্রদীপ বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে দাবি করা মোটা অঙ্কের টাকা না পেয়ে ক্রসফায়ারের নামে হত্যার অভিযোগ আনা হয়।
