মঙ্গলবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

মাদক বিক্রির ডার্কওয়েব হোম ডেলিভারি

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

মাদক বিক্রির নতুন বাজারে পরিণত হয়েছে তথ্যপ্রযুক্তির গোপন জগৎ ‘ডার্কওয়েব’। মাদক কেনাবেচা থেকে শুরু করে মাদকের সর্বশেষ বাজার দর সবকিছুই পাওয়া যাচ্ছে ডার্কওয়েবে। শুধু তাই নয়, মাদকের ক্রেতারা অনলাইন অর্ডার দেওয়ার পর হোম ডেলিভারির মাধ্যমে ক্রেতার ঘরেই পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে মাদকের চালান। বাংলাদেশ প্রতিদিনের অনুসন্ধানে এমন ভয়াবহ তথ্য উঠে এসেছে। সিএমপির কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার পলাশকান্তি নাথ বলেন, ‘ডার্কওয়েবে মাদক বিকিকিনির তথ্য আমাদের কাছে রয়েছে। এ চক্রের সদস্যদের গ্রেফতারের প্রচেষ্টা চলছে। আশা করছি দ্রুতই এ চক্রের সদস্যদের গ্রেফতারের আওতায় আনতে পারব।’ চট্টগ্রাম মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক এমদাদুল ইসলাম মিঠুন বলেন, ‘ডার্কওয়েব ব্যবহার করে কয়েকটি চক্র মাদক বিকিকিনি করছে। মূলত তারা ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী ইয়াবা, গাঁজা এবং ফেনসিডিল সরবরাহ করে থাকে। এ চক্রের সদস্যদের গ্রেফতারের  চেষ্টা চলছে।’ অনুসন্ধানে জানা যায়, মাদক বিক্রির নতুন ক্ষেত্র হিসেবে মাদক পাচার চক্রের সদস্যরা বেছে নিয়েছে তথ্যপ্রযুক্তির অন্ধকার জগৎ ডার্কওয়েবকে। চট্টগ্রাম নগরী ও জেলার বেশ কয়েকটি চক্র ডার্কওয়েবে মাদক বেচাবিক্রি করছে। তারা কয়েক মাস ধরে ডার্কওয়েব সাইট ব্যবহার করে মাদক বেচাবিক্রি করে আসছে। এ ছাড়া মাদক বিক্রি চক্রগুলোর ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপভিত্তিক বিভিন্ন গ্রুপও রয়েছে তাদের। ওই গ্রুপগুলোর মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগও রক্ষা করে। এসব গ্রুপে প্রবেশ করতে পারে শুধু তাদের নির্ধারিত ক্রেতারা। প্রবেশের পর ইয়াবা, গাঁজা ও ফেনসিডিল অর্ডার করতে পারে। যাচাই করতে পারে মাদকের বাজার ধর। মাদকের বেচাবিক্রির টাকা দেনদেনও হয় ডিজিটাল পদ্ধতিতে।

মোবাইল ব্যাংকিং ও ডেবিট-ক্রেডিট কার্ড দিয়ে পরিশোধ করা হয় মাদকের দাম। ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী হোম ডেলিভারিতেও মাদক সরবরাহ করে অনলাইনভিত্তিক মাদক বিক্রির পাচার চক্রের সদস্যরা। এক্ষেত্রে অতিরিক্ত ডেলিভারি চার্জ দিতে হয়। হোম ডেলিভারির পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জায়গায়ও তারা কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ইয়াবা সরবরাহ করে থাকে। এক্ষেত্রে অনলাইনভিত্তিক কিছু বেনামি ওষুধ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের নামে স্টিকার ও মোড়ক ব্যবহার করে থাকে।

চট্টগ্রাম মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক এমদাদুল ইসলাম মিঠুন বলেন, ‘যে কেউ চাইলে ডার্কওয়েবে প্রবেশ করতে পারবে না। ডার্কসাইটে প্রবেশের আগে বিস্তারিত তথ্য জানাতে হবে। এটাও নিশ্চিত করতে হবে প্রবেশকারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নন। সবকিছু নিশ্চিত হওয়ার পরই ডার্কওয়েব সাইটে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া কয়েক সিক্রেট ফেসবুক গ্রুপ ও হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ রয়েছে অনলাইনভিত্তিক মাদক ব্যবসায়ীদের। এসব গ্রুপের সদস্য করা হয় শুধু তাদের নির্দিষ্ট গ্রাহকদের।

সর্বশেষ খবর