বুধবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

একনেকে ১২৬৬ কোটি টাকার পাঁচ প্রকল্প অনুমোদন

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে নতুন করে প্রায় আড়াইশ কোটি টাকার প্রকল্পসহ গতকাল ১২৬৬ কোটি টাকার পাঁচ প্রকল্প অনুমোদন করেছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। সভায় সভাপতিত্ব করেন একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবন থেকে সভায় যুক্ত হন। এ ছাড়া গণভবনে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে শেরেবাংলা নগর এনইসি সম্মেলনকক্ষে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী-সচিবরা উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে প্রকল্পের সার্বিক বিষয় সাংবাদিকদের সামনে উপস্থাপন করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। একনেকে অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হচ্ছে- ‘জামালপুর জেলার দিগপাইত-সরিষাবাড়ী-তারাকান্দি সড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ’ প্রকল্প। এতে খরচ হবে ২৭৬ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২৩-এর ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে। ‘সীমান্ত এলাকায় বিজিবির ৭৩টি কম্পোজিট/আধুনিক বর্ডার অবজারভেশন পোস্ট (বিওপি) নির্মাণ’ প্রকল্প। এতে খরচ হবে ২৩৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা। ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২২-এর ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। ‘আটটি সরকারি শিশু পরিবারে ২৫ শয্যাবিশিষ্ট শান্তিনিবাস স্থাপন’ প্রকল্প। এতে খরচ হবে ৭৩ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২২-এর জুন মেয়াদে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। ‘৪০টি উপজেলায় ৪০টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও চট্টগ্রামে একটি ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি স্থাপন (প্রথম সংশোধন)’ প্রকল্প। এতে খরচ হচ্ছে ৩৩৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২২-এর জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। ‘ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা’ প্রকল্প। এতে খরচ হবে ২৪৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা। ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২৪-এর জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। প্রকল্পের আওতায় মা ইলিশ ও জাটকা সংরক্ষণে মৎস্য সংরক্ষণ আইন কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হবে। ৩০ হাজার জেলে পরিবারের জন্য সৃষ্টি করা হবে বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ। জেলেদের ১০ হাজার বৈধ জাল বিতরণ ও প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা হবে।  ইলিশের ছয়টি অভয়াশ্রমে সুরক্ষা দেওয়া হবে। থাকছে আরও উদ্যোগ। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা তুলে ধরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বার্তা হলো, সড়ক নির্মাণের ক্ষেত্রে খুব সচেতন হতে হবে। সড়ক চিন্তা করে বানাবেন। যাতে এটা আমাদের যথাযথভাবে কাজে লাগে, যাতে এটা মেইনটেন্যান্স করা যায়। আমরা আর্থিকভাবে এটা মেইনটেইন করতে পারব এবং অপ্রয়োজনীয় কাজ যেমন- আমার বাড়ির পাশ দিয়ে যাবে, এই ধরনের মানসিকতার বাইরে আমাদের আসতে হবে। জমি সুরক্ষা করতে হবে, বেশি সড়ক নির্মাণ করলে জলাভূমির দেশে পানি চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়; এটা জ্ঞানীরা আগেই বলেছেন। এই সম্পর্কে তিনি আমাদের সাবধান হতে বলেছেন, সড়ক নির্মাণ যারা করেন, যাদের অল্প জমি রয়েছে এবং সেই জমিতে বাড়িঘর করে থাকছে, সেসব জমি অধিগ্রহণ থেকে যতটা সম্ভব বিরত থাকতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়া দেশে ফিরে আসা অভিবাসী কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘৪০টি উপজেলায় ৪০টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও চট্টগ্রামে একটি ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি স্থাপন প্রকল্প’ অনুমোদনের সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু দেশেই নয়, বিদেশ থেকে ফিরে যারা এসেছে কভিডের জন্য বা অন্য কারণে তাদেরও ট্রেনিং দেন। যাতে করে তারা আবার ফিরে যেতে পারে।

অন্ধের মতো প্রকল্প বাস্তবায়ন নয় : পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, প্রকল্প একনেকে পাস হওয়া মানেই অন্ধের মতো বাস্তবায়ন নয়। প্রকল্প পাসের পরও আমরা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখব।  যেখানে যা কমানোর দরকার তা কমাব। গতকাল একনেক সভা শেষে প্রকল্পের সার্বিক বিষয় সাংবাদিকদের সামনে উপস্থাপন করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। বলেন, প্রকল্প পাসের পরেই যেমন খুশি তেমনভাবে খরচ করা যাবে, বিষয়টা এমন নয়। আমরা পাস হওয়া প্রকল্পেও তদারকি করে ব্যয় কমাতে পারি। জনগণের এক টাকাও যদি সাশ্রয় করতে পারি এটা বড় পাওয়া। ইলিশ উন্নয়ন প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ইলিশ প্রাকৃতিকভাবেই আমাদের একক সম্পদ। এটা জাতিসংঘের মাধ্যমে স্বীকৃত। সুতরাং ইলিশ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে হবে। ইলিশ সম্বন্ধে আমাদের বৈজ্ঞানিক ধারণা নেই। এটা নিয়ে কাজ করতে হবে।

সর্বশেষ খবর