বৃহস্পতিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

প্রচারণা ও বিশ্লেষণে প্রাধান্য পাচ্ছে করোনা পরিস্থিতি

লাবলু আনসার, যুক্তরাষ্ট্র

প্রচারণা ও বিশ্লেষণে প্রাধান্য পাচ্ছে করোনা পরিস্থিতি

করোনাভাইরাসে ২ লাখের বেশি আমেরিকানের মৃত্যু সংবাদে সর্বত্র এক ধরনের ভীতি আর সংশয় দেখা দিলেও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপনোর কৌশল নিয়ে নিজের ব্যর্থতা ঢাকার চেষ্টা করছেন। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যানাগাদ সারা আমেরিকায় ভোট-প্রচারণা ছাড়াও চলতি পথে কিংবা বাণিজ্যিক কেন্দ্রে অথবা গণমাধ্যমে মৃত্যুর বিষয়টি বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা-পর্যালোচনা হলেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চীনকে দোষারোপ করেছেন জাতিসংঘে ভাষণেও। ট্রাম্পের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং হোয়াইট হাউসের করোনা নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কিত টাস্কফোর্সের প্রধান মাইক পেঞ্চ দাবি করেছেন, ভয়ঙ্কর এ ভাইরাস প্রতিরোধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা সম্ভব না হলে আরও বেশি মানুষের প্রাণ যেত। এদিকে ট্রাম্পের চরম ব্যর্থতার বিশ্লেষণ করা হচ্ছে নির্বাচনী প্রচারাভিযানে। ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন বলেছেন, ‘ট্রাম্প গত ছয় মাসে দক্ষতার সঙ্গে পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারায় এবং লাগাতার মিথ্যা বলায় যুক্তরাষ্ট্রকে ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি জীবনহানি দেখতে হয়েছে।’ ৩ নভেম্বরের ব্যালটযুদ্ধে ট্রাম্পের মিথ্যাচারের উপযুক্ত জবাব দিয়ে আমেরিকাকে বড় ধরনের বিপদ থেকে রক্ষা করতে হবে বলেও আহ্বান রেখেছেন জো বাইডেন।

এ ছাড়া অনেক প্রভাবশালী রিপাবলিকানের মতো সিন্ডি ম্যাককেইনও ২২ সেপ্টেম্বর এক টুইট বার্তায় জো বাইডেনের প্রতি তার দ্ব্যর্থহীন সমর্থনের কথা ব্যক্ত করেন। উল্লেখ্য, সিন্ডি ম্যাককেইন হলেন প্রয়াত সিনেটর ও রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী হিসেবে দুই দফা প্রেসিডেন্ট পদে লড়াইকারী জন ম্যাককেইনের স্ত্রী। সিন্ডি তার এ সমর্থন প্রসঙ্গে উল্লেখ করেছেন, ‘আমার স্বামী সব সময় বিশ্বাস করতেন, রাষ্ট্র সবার আগে। আমরা রিপাবলিকান, তবে সবার আগে আমরা আমেরিকান। সে বিশ্বাসে বলীয়ান হয়েই আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি যে, সামনের নির্বাচনে মাত্র একজন প্রার্থী রয়েছেন যিনি জাতিগতভাবে আমাদের মানমর্যাদাকে সম্মান করেন এবং সেই ঐতিহ্য সমুন্নত রাখতে বদ্ধপরিকর। তিনি হলেন জো বাইডেন।’ সিন্ডি উল্লেখ করেন, ‘বাইডেন এবং আমি অনেক সময়ই নানা ইস্যুতে একমত হতে পারি না এবং আমি মনে করি তিনি এবং ম্যাককেইন মাঝেমধ্যেই তর্কে লিপ্ত হয়েছেন। তা সত্ত্বেও আমি বাইডেনকে খুবই ভালো এবং একজন সৎ মানুষ হিসেবেই জানি। বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্ব দেবেন অত্যন্ত মর্যাদাবান প্রেসিডেন্ট হিসেবে।’ এর জবাবে বাইডেন টুইটে বলেছেন, ‘সিন্ডি- আপনার সাপোর্ট পেয়ে নিজেকে সম্মানিত বোধ করছি। একটি রাজনৈতিক দলের একজন সমর্থকের চেয়ে সামনের নির্বাচনের গুরুত্ব অনেক বেশি। আমেরিকার ইতিহাস-ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারকল্পে বিবেকসম্পন্ন প্রতিটি মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ঐক্য গড়া সম্ভব হলেই তা সম্ভব হবে।’ উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ের প্রতিটি জরিপেই ট্রাম্পের চেয়ে অনেক এগিয়ে রয়েছেন বাইডেন। এ ধারার সঙ্গে সংগতি রেখে গত এক মাসে নির্বাচনী তহবিল সংগহেও অনেক এগিয়ে রয়েছেন বাইডেন। অন্যদিকে ট্রাম্প কেবলই বিষোদগার ও গলাবাজি করছেন গত পৌণে চার বছরের ব্যর্থতা ঢাকতে। সেভাবেই নির্বাচনী ময়দানে বিভ্রান্তির চেষ্টা করছেন রিপাবলিকানরা- এমন অভিযোগ ডেমোক্র্যাটদের। তবে অভিবাসনবিরোধী কর্মকান্ডের জন্য গত নির্বাচনের মতো এবারও আদি আমেরিকান ও জন্মগতভাবে আমেরিকানদের বড় একটি অংশ ট্রাম্পের পক্ষে ভোটবিপ্লব ঘটাবেন বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন। ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সমর্থক-সুশীলরা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন, ২০১৬ সালের নির্বাচনের আগেও প্রতিটি জরিপে হিলারি ক্লিনটনের জয়জয়কার ছিল। ভোটের পর সেটি ম্লান হয়ে গেছে। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে ট্রাম্পের কূটকৌশলের কথা। ছয় সপ্তাহ বাকি নির্বাচনের। তবে করোনার তা-বে সবকিছু চলছে সীমিত আকারে। বিভিন্ন স্টেটের আগাম ভোটের ব্যালট বিতরণ করা হচ্ছে। কয়েকটি স্টেটে আগাম ভোট গ্রহণের কার্যক্রমও শুরু হয়েছে। সামগ্রিক অবস্থায় অনেকের ধারণা, এবার আগের চেয়েও বেশি ভোট গৃহীত হবে। তবে ডাকযোগে আসা ভোট নিয়ে নানা অভিযোগ এরই মধ্যে ট্রাম্পের পক্ষ থেকে উঠেছে।

সর্বশেষ খবর