রবিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

শ্রীমঙ্গলে ভুরভুড়িয়া ছড়ার কাশবন

দীপংকর ভট্টাচার্য লিটন, শ্রীমঙ্গল

শ্রীমঙ্গলে ভুরভুড়িয়া ছড়ার কাশবন

শ্রীমঙ্গলের ভুরভুড়িয়া ছড়ার পাড়ে কাশবনে পর্যটকরা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

চারদিকে উঁচু নিচু পাহাড়। পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে সবুজ চায়ের বাগান। সমতলে কাশবন। আর দুই পাহাড়ের মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে পাহাড়ি ছড়া। ছড়ার বাঁকে বাঁকে জেগে উঠেছে সাদা বালু চর। কাশবন থেকে শুভ্রতা ছড়াচ্ছে শরতের সাদা কাশফুল। এই অপরূপ সৌন্দর্যের দেখা মেলে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের ‘কাশবনে’। এর অবস্থান শহর থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে ভানুগাছ সড়কের বেলতলী এলাকায়। ভুরভুড়িয়া চা বাগানের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত প্রাকৃতিক ছড়ার পাড়েই এই কাশবন। করোনার কারণে বন্ধ রয়েছে এ উপজেলার সবগুলো পর্যটন কেন্দ্র। তাই গত এক মাস ধরে এই কাশবনে এসেই ভিড় করছেন পর্যটকরা। মুগ্ধ হচ্ছেন প্রকৃতির এই অপরূপ নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখে। গত শুক্রবার বিকালে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পর্যটকরা সড়কে গাড়ি রেখে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যেই পাহাড়ের ঢাল দিয়ে নেমে যাচ্ছেন কাশবনে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছেন এখানকার স্থানীয় প্রকৃতি প্রেমিকরাও। তাদের কেউ পাহাড়ে উঠে সখ্যতা গড়ে তুলছেন কাশবনে। কেউবা হেঁটে বেড়াচ্ছে ছড়ার স্বচ্ছ পানিতে। কেউ সাদা বালু চরে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন। কেউ আবার নিজের মোবাইলে ধারণ করা সেই ছবি দেখাচ্ছেন প্রিয়জনকে, সেন্ড করছেন দেশে বা দেশের বাইরে অবস্থান করা সজ্জনকে। কেউবা আনন্দ পাচ্ছেন চা বাগানে ঘুরে ঘুরে সেলফি তুলে। আর ছড়ার পানিতে ছুটোছুটি করে খুশিতে আটখানা পরিবারের সঙ্গে আসা শিশু-কিশোররা। করোনায় দীর্ঘদিন ঘরে আবদ্ধ থাকা মানুষরা যেন কাশবনে এসে পেয়েছেন পরম শান্তি ও স্বস্তি। সড়কে দাঁড়িয়ে আইসক্রিম বিক্রেতা মজিদ মিয়া জানান, তিনি গত দুই সপ্তাহ ধরে এখানে এসে আইসক্রিম বিক্রি করছেন। প্রতিদিন প্রায় ১০০ লোক এই কাশবন দেখার জন্য আসেন। বগুড়ার শিবগঞ্জ থেকে আসা আবদুল মজিদ জানান, তিনি পরিবারের পাঁচ সদস্য নিয়ে শ্রীমঙ্গল ঘুরতে এসেছেন। কাশবনের সৌন্দর্য্য দেখে তিনি অভিভূত। শ্রীমঙ্গল পর্যটন সেবা সংস্থার সহ-সভাপতি মো. খালেদ হোসেন বলেন, ‘গত দুই সপ্তাহ ধরে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটকরা শ্রীমঙ্গলে আসছেন। কিন্তু এখানকার পর্যটন স্পটগুলো এখনো বন্ধ রয়েছে। তাই পর্যটকরা কাশবনে গিয়ে তৃপ্তি নিয়েই আনন্দ উপভোগ করছেন। ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি মো. রাফিউজ্জামান বলেন, ‘এই কাশবন সত্যিই আমাকে মুগ্ধ করেছে। পাহাড়ি ছড়ার এক পাশে চা বাগান অন্য পাশে কাশবন ক্রিষ্টাল তার্কিস ওয়াটার সেন্ডিক্যাচের ওপর দিয়ে প্রকৃতির এক অনন্য সৌন্দর্য্য প্রতিফলিত হয়। এই সৌন্দর্য্যকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য, ধরে রাখার জন্য এই সৌন্দর্য্যকে লালিত পালিত করতে হবে। বিশেষ করে এই সৌন্দর্য্যটুকু যাতে বহাল তাকে তার জন্য ট্যুর অপারেটর, পর্যটক ও স্থানীয় অধিবাসী-সবার সজাগ দৃষ্টি থাকতে হবে।’

সর্বশেষ খবর