রবিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

সিরাজগঞ্জে চোর সন্দেহে যুবককে গাছে বেঁধে নির্যাতন

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

সিরাজগঞ্জে চোর সন্দেহে যুবককে গাছে বেঁধে নির্যাতন

সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলায় ছাগল চোর সন্দেহে মধ্যযুগীয় কায়দায় গাছের সঙ্গে বেঁধে পাশবিক নির্যাতন করা হয়েছে এক যুবককে। বর্বর এ নির্যাতনের ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে। ভিডিওটিতে দেখা যায়, নির্যাতন না করে পুলিশে দেওয়ার জন্য স্থানীয়রা নির্যাতনকারীকে অনুরোধ করেন। কিন্তু তিনি হাত-পায়ের নখ প্লাস দিয়ে উঠিয়ে হাত-ভেঙে দেন ওই যুবকের। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। শুক্রবার বিকালে কামারখন্দ উপজেলার জামতৈল কলেজপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ভাইরাল হওয়া ভিডিও দেখা যায়, ছাগল চোর সন্দেহে এক যুবককে রশি দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে কলেজপাড়া গ্রামের ব্যবসায়ী ফরহাদুল হক হ্যাপি প্লাস দিয়ে হাত-পায়ের নখ তুলে দিচ্ছেন। এ সময় যুবকটিকে আর্তচিৎকার করতে দেখা যায়। এ ছাড়া দেখা যায়, মাঝেমধ্যে হ্যাপির ছেলে রড দিয়ে ওই যুবককে পেটাচ্ছেন। দৃশ্যটি দেখে স্থানীয় অজ্ঞাত ব্যক্তি চোরকে না মেরে পুলিশে সোপর্দ করার অনুরোধ করেন। এ সময় হ্যাপি বলেন, ‘ওকে মারধর তো করাই হয়নি। কেবল দুইটা আঙ্গুল ভাঙছি। একেবারে মেরে ফেলব না। বাকি চোরদের নাম না বললে ওর হাত-পা ভাঙব তারপর ছাড়ব। প্রত্যক্ষদর্শী সিরাজুল ইসলাম ও আরিফুল ইসলাম বলেন, অজ্ঞাত ওই যুবক ছাগল নিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় ছাগলের মালিক ফরহাদুল হক হ্যাপি পুকুরে গোসল করার সময় দেখে ফেলে তাকে দৌড়ে ধরে ফেলেন। হ্যাপি ওই ব্যক্তিকে চোর সন্দেহে গাছের সঙ্গে বেঁধে বেদম মারধর করেন। তার ছেলে শান্তও রড দিয়ে বেধড়ক পেটান। বারবার নিষেধ করা হলেও কারও কথা শোনেননি বাপ-বেটা। গাছের সঙ্গে বেঁধে প্রায় দুই ঘণ্টা নির্যাতন করেছেন। মারধরের কারণে ওই যুবক দাঁড়াতে পর্যন্ত পারেননি। বর্বর নির্যাতনের সময় তিনি চিৎকার করছিলেন। উপস্থিত সবার চোখে তখন পানি ঝরছিল। সবাই ওই যুবককে থানায় সোপর্দ করার অনুরোধ করলে হ্যাপি বলেন, ‘ওকে একেবারে মেরে ফেলব না। শুধু হাত-পা ভেঙে দেব।’ পরে স্থানীয় নারীদের অনুরোধে যুবককে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ বিষয়ে নির্যাতনকারী ফরহাদুল হক হ্যাপি বলেন, ‘কয়েক দিন আগে আমার একটি ছাগল হারিয়েছে। আবার আরেকটি ছাগল নিয়ে যাওয়ার সময় ছাগল চোরকে ছাগলসহ হাতেনাতে ধরে দু-একটা চড়-থাপ্পড় দিয়ে ছেড়ে দিই। এ ব্যাপারে থানা থেকে পুলিশ এসেছিল। আমি বাড়িতে না থাকায় মুঠোফোনে থানার লোকদের সঙ্গে কথা হয়েছে।’ এ ব্যাপারে কামারখন্দ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। নির্যাতিত যুবককে পাওয়া যায়নি। তার নাম-ঠিকানা কেউ জানে না। তবে কয়েক দিন আগে একটি ছাগল চুরি হয়েছিল। সন্দেহবশত যুবককে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে। নির্যাতনকারী হ্যাপি ও তার ছেলেকেও পাওয়া যায়নি। ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর