শিরোনাম
শনিবার, ৩ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

ভাঙনে লণ্ডভণ্ড মুন্সীগঞ্জ

সব হারিয়ে দিশাহারা মানুষ

লাবলু মোল্লা, মুন্সীগঞ্জ

ভাঙনে লণ্ডভণ্ড মুন্সীগঞ্জ

পদ্মার ভাঙনে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে মুন্সীগঞ্জ। দিশাহারা হয়ে পড়েছেন জেলার হাজার হাজার মানুষ। ইতিমধ্যে নদীগর্ভে লৌহজং উপজেলার ৮টি গ্রাম সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। সরকারি উদ্যোগেও ঠেকাতে পারছে না ভাঙন। বন্যায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত মুন্সীগঞ্জের পদ্মা নদীতীরবর্তী লৌহজং, টঙ্গিবাড়ী ও শ্রীনগরের হাজার হাজার মানুষ। তার মধ্যে নতুন করে দেখা দিয়েছে নদীভাঙন। ইতিমধ্যে ভাঙনের কবলে পড়েছে পদ্মাতীরবর্তী টঙ্গিবাড়ীর দিঘিরপাড়, কামার খাড়া, হাসাইল-বানারী ও পাঁচগাঁও ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক গ্রাম। এ ছাড়াও লৌহজং উপজেলার কলমা, গাওদিয়া, বেজগাঁও, লৌহজং-তেউটিয়া, কনকসার, হলদিয়া, কুমারভোগ, মেদেনি ম-লের নদীতীরবর্তী শতাধিক গ্রামে ভাঙন চরম আকার ধারণ করেছে। কোথাও কোথাও পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ফেললেও তা কোনো কাজেই আসছে না বলে দাবি ভাঙন কবলিতদের।

ভাঙনের শিকার টঙ্গিবাড়ীর  দিঘিরপাড় ইউনিয়নের হাইয়ারপাড়ের শফি আহমেদ বলেন, পদ্মার ভাঙনে ইতিমধ্যে পাঁচ দফা বাড়িঘর অন্যত্র সরাতে হয়েছে। এবারও ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি। প্রতি বছর পদ্মা যেভাবে ভাঙছে সরকারি স্থায়ী কোনো পদক্ষপ না থাকায় আমরা প্রতি বছর ভাঙনের কবলে পড়ছি।

কামারখাড়ার ভাঙনকবলিত নদীতীরবর্তী শাহানাজ বেগম বলেন, ‘ভাঙতে ভাঙতে আর কিছুই নেই। সব নদীতে চলে গেছো। আর কত ভাঙলে সরকার আমাগো দিকে তাকাইবো তাও জানি না। এবারও যদি নদীর ভাঙে তা অইলে আমাগো রাস্তায় থাকতে হইবো।’

হাসাইলের সুফিয়া বেগম  বলেন, এখনো অনেক জায়গায় বাঁধ নেই। তাই ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটাতে হচ্ছে।

লৌহজং উপজেলার কলমা ইউনিয়নের নদীতীরবর্তী নাজমা বেগম বলেন, এই পর্যন্ত ৬ বার নদী ভাঙনে বাড়িঘর হারাইছি। আরও কতবার যে বাড়িঘর হারাতে হবে তাও জানা নেই। সরকার দ্রুত বাঁধ নির্মাণ না করলে এই এলাকার মসজিদ-মাদ্রাসা কিছুই থাকবে না। সব নদীতে চলে যাবে।

গাওদিয়ার আবদুল মজিদ বলেন, বছরের পর বছর ভাঙনের কবলে পড়ে শত শত বাড়িঘর কৃষিজমি  নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। কত মানুষ আশ্রয়হীন হয়েছে। আজও স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের ব্যবস্থা নেয়নি সরকার। এদিকে বৃহস্পতিবার হঠাৎ পদ্মাপাড়ে গড়ে ওঠা পদ্মা রিসোর্টটি নদীবক্ষে বিলীন হতে শুরু হয়েছে। লৌহজং উপজেলার পদ্মার শাখা নদী-সংলগ্ন চরে অবস্থিত ছিল পদ্মা রিসোর্ট। পদ্মার নয়নাভিরাম সৌন্দর্য উপভোগ আর বর্ণিল কাঠের কটেজে অবকাশ যাপনের জন্য জেলা তথা বহু দূরদূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসতেন ব্যতিক্রমী রিসোর্টটিতে। তবে এবার পদ্মার গ্রাসে শেষ রক্ষা হয়নি রিসোর্টটির। বৃহস্পতিবার ভোর রাতে ভাঙন শুরু হলে এর মধ্যেই রিসোর্টের অর্ধেক এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

সর্বশেষ খবর