নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া পৌরসভার গুনাইহাটি ঋষিপাড়া এলাকায় এক কিশোরীকে অ্যাসিডে ঝলসে দিয়েছে বখাটেরা। কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গভীর রাতে বাইরে থেকে ভেন্টিলেটর দিয়ে সিরিঞ্জের ভিতর অ্যাসিড ঢুকিয়ে ঘুমন্ত কিশোরীকে লক্ষ্য করে তা পুশ করে দুর্বৃত্তরা। এতে কিশোরীর দুই পা, কোমরের কিছু অংশ ও ডান হাত ঝলসে যায়। এ সময় পাশে ঘুমিয়ে থাকা কিশোরীর দাদির বাঁ পায়ের কিছু অংশ পুড়ে যায়। বৃহস্পতিবার বিকালে কিশোরীর দাদি শেফালী রানী দাস বাদী হয়ে গুনাইহাটি এলাকার খোকা চন্দ্র দাসের ছেলে অনিল চন্দ্র দাস (৪৫) ও একই এলাকার মৃত জফির আলীর ছেলে আইয়ুব আলীকে (২৩) অভিযুক্ত করে বড়াইগ্রাম থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগে প্রকাশ, গুনাইহাটির ঋষিপাড়া এলাকার তাপস চন্দ্র দাসের মেয়ে স্মৃতি রানী দাস (১৩) ও স্মৃতির ফুপু উমা রানী দাসকে (২১) পাশর্^বর্তী বাড়ির অনিল চন্দ্র দাস ও আইয়ুব আলী বিভিন্ন সময় কুপ্রস্তাব দিত। এতে রাজি না হলে গত সোমবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে বাইরের ভেন্টিলেটর দিয়ে সিরিঞ্জের মাধ্যমে ঘুমন্ত স্মৃতি ও উমার ওপর এসিড নিক্ষেপ করে। কিন্তু ওই রাতে স্মৃতির পাশে ঘুমিয়ে ছিল তার দাদি শেফালী রানী দাস (৫৫)। ফলে তাদের দুজনের শরীর এসিডে ঝলসে যায়। এ সময় স্মৃতির গায়ের কাপড়, দাদির শাড়ি, বিছানার ছাদর, মশারি পুড়ে যায়। ওই রাতেই তাদের দুজনকে স্থানীয় গ্রাম্য চিকিৎসকের মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়া হয়। স্মৃতির ফুপু উমা রানী দাস জানান, ঘটনার রাতে তাদের চিৎকার শুনে দ্রুত উঠে জানালা দিয়ে বাইরে তাকাতেই দেখি অনিল ও আইয়ুব দৌড়ে পালিয়ে যাচ্ছে। পরে দুর্বৃত্তদের ফেলে যাওয়া সিরিঞ্জটি বাইরে পাওয়া যায়। সকালে এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ করতে রওনা দিলে স্থানীয় গ্রামপ্রধানরা নিজেরাই উপযুক্ত বিচার করবেন বলে আশ্বাস দিয়ে থানায় যেতে বাধা দেয়। এ ঘটনা শুনে বনপাড়া পৌর মেয়র কে এম জাকির হোসেন শুক্রবার সকালে এসিডে আহত ওই কিশোরীর বাড়িতে যান এবং এ ন্যক্কারজনক ঘটনার নিন্দা জানিয়ে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেন। বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দিলিপ কুমার দাস জানান, অভিযোগটি পেয়েছি। ঘটনাস্থলে পুলিশের একটি বিশেষ টিম তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। তদন্তপূর্বক থানায় মামলা রেকর্ড করা হবে ও প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় এনে দ্রুত গ্র্রেফতার করা হবে।
