ঢাকা সফরের পরই ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা দুই দিনের গুরুত্বপূর্ণ সফরে আজ মিয়ানমার যাচ্ছেন। সূত্র জানায়, দ্বিপক্ষীয় অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে তিনি রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন নিয়ে আলোচনা করবেন। এবার পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে সফর করছেন ভারতের সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল এম এম নারাভানে। উভয়েই প্রতিনিধিদলসহ মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি এবং সেনাবাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। নভেম্বরে মিয়ানমারের সাধারণ নির্বাচন। তার আগে এ সফরের ওপর কূটনৈতিক মহল গুরুত্ব দিচ্ছে। বিশেষ করে কভিড অতিমারীর সময়ে পররাষ্ট্র সচিব শ্রিংলা শুধু ঢাকা সফর করেছিলেন। এরপরই যাচ্ছেন মিয়ানমার। এর আগে শুক্রবার পররাষ্ট্র সচিব মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী প্রতিনিধি ইউ সোয়ে হানের সঙ্গে ভিডিও মারফত ১৯তম পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ বৈঠকে যোগ দেন। সেই বৈঠকে শ্রিংলা প্রথমেই বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে উৎখাত হওয়া মানুষদের (রোহিঙ্গা) দ্রুত, নিরাপদ, টেকসই প্রত্যাবর্তনের জন্য ভারত চেষ্টা চালিয়ে যাবে।’ ভিডিও বৈঠকে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা যায়নি বলেই পররাষ্ট্র সচিব মিয়ানমারের রাজধানী নেপিডো সফরের সিদ্ধান্ত নেন। মিয়ানমারেও তিনি বিশেষ বিমানে যাবেন।
রাখাইন প্রদেশের পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য ভারত-জাপান-মিয়ানমার ত্রিপক্ষীয় চুক্তি করে। পররাষ্ট্র সচিব জানিয়ে দেন, সেই চুক্তি অনুযায়ী পরিকাঠামো তৈরি করা হচ্ছে। বাংলাদেশের নাম উল্লেখ না করে শ্রিংলা বলেন, ‘ভারতের প্রতিবেশী প্রথম এবং ইস্টনীতির সঙ্গমস্থলে মিয়ানমারের অবস্থান। এ কারণেই ভারত মিয়ানমারকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়। ভারতের রয়েছে আগামী বছরের মধ্যে সিটে বন্দর চালু করার পরিকল্পনা। এ বন্দর ভারত সরকার তৈরি করছে। এখান থেকে কালাদান নদীর মাধ্যমে ভারতের উত্তর-পূর্বের মিজোরাম ও মণিপুরের যোগাযোগ তৈরি হবে। বিশ্লেষকরা বলেন, এ কারণে রাখাইন প্রদেশের স্বাভাবিক পরিস্থিতি ভারতের পক্ষে প্রয়োজনীয়। ভারতের সঙ্গে সদ্য অনুষ্ঠিত যৌথ পরামর্শ কমিশন বৈঠকের পরে জারি হওয়া যৌথ বিবৃতিতে রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে উভয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকর ও এ কে আবদুল মোমিন যারা বলপূর্বক উৎখাত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে, তাদের দ্রুত প্রত্যাবর্তন বিষয়ে সহমত হন। বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্পষ্ট বলেন, রোহিঙ্গাদের দ্রুত ফেরত নেওয়া না হলে এখানে উগ্রপন্থা বিকাশের সুযোগ রয়েছে। তাতে এ অঞ্চলের নিরাপত্তা বিপণœ হবে। এ কারণেই কৌতূহল তৈরি হয়েছে, পররাষ্ট্র সচিবের সফরের এ বিষয়ে কোনো সমাধান সূত্র আবিষ্কৃত হয় কিনা।