রবিবার, ৪ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

ট্রাকচালক সেজে আত্মগোপনে খুনি

নিজস্ব প্রতিবেদক

নরসিংদীর বেলাব থানার ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য রিনা বেগমের ছেলেকে হত্যার পর তিন বছর ট্রাকচালক হিসেবে আত্মগোপন করেছিলেন একই এলাকার কবির মিয়া। অবশেষে খুন ও ডাকাতির অভিযোগে সেই কবিরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গাজীপুরের শ্রীপুর থানার মাওনা বহেরার চালা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সিআইডি বলছে, গ্রেফতার এড়ানোর জন্য দীর্ঘদিন আত্মগোপনে ছিলেন কবির। তার বিরুদ্ধে দুটি হত্যা ও একটি ডাকাতিসহ একাধিক মামলা রয়েছে। রিনা বেগমের ছেলে স্কুলছাত্র সোহরাবকে গলা কেটে হত্যার মূল হোতা কবির। ইতিমধ্যে তিনি হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করেছেন। নরসিংদীর বেলাব থানার খামারেরচর গ্রামের আবদুল হাইয়ের ছেলে কবির। গতকাল দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি সদর দফতরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিআইজি মো. মাঈনুল হাসান বলেন, আসামি কবিরের সঙ্গে নরসিংদীর বেলাব থানার ৪, ৫, ৬ নম্বর ওয়ার্ড নারায়ণপুর ইউপি সদস্য রিনা বেগমের দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক ও সামাজিক বিরোধ চলে আসছিল। ওই বিরোধের জেরে রিনা বেগমের ছেলে ফরিদকে হত্যার পরিকল্পনা করে কবির। এ ঘটনা বুঝতে পেরে রিনা তার ছেলে ফরিদকে কক্সবাজার পাঠিয়ে দেন।

এই মামলার আরেক আসামি বাচ্চু মিয়া ও রিনা বেগমের ছেলে সোহরাব ওরফে মূসা একসঙ্গে রিনার বাসায় ঘুমাত। শিপন ও বাচ্চুকে কবির প্রস্তাব দেয়, ফরিদকে ডেকে এনে তাদের কাছে দিতে। বাচ্চু কবিরকে জানায়, ফরিদ কক্সবাজারে অবস্থান করছে। তখন কবির ফরিদের যে কোনো ভাইকে ডেকে আনার প্রস্তাব দেয় বাচ্চুকে। বাচ্চু তার এই প্রস্তাবে রাজি হয়নি। পরে শিপন ও কবির বাচ্চুকে ভয় দেখায় এবং তাকে কিছু টাকা দেয়। ২০১৭ সালে ১২ অক্টোবর রাত ২টার দিকে শিপন ও কবির বাচ্চুকে ডেকে রিনা বেগমের বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে আসে। পরিকল্পনা অনুসারে বাচ্চু সোহরাবকে নিয়ে ঘর থেকে বের হয়। তখন শিপন ও কবির সোহরাবকে জাপটে ধরে মুখে গামছা বেঁধে কুকুর মারা স্কুলের পেছনে নিয়ে যায়। শফিক ও মিলন সোহরাবের দুই পায়ে ধরে, তুহিন মাথা ধরে, শিপন ডান হাতে ধরে রাখে। প্রথমে শিপন এবং পরে কবির সোহরাবের গলায় ছুরি চালিয়ে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে।

সিআইডি কর্মকর্তা আরও বলেন, এ ঘটনায় নিহত সোহরাবের মা রিনা বেগম বাদী হয়ে কবিরসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে বেলাব থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। বেলাব থানা পুলিশ মামলাটির তদন্ত করছিল। পরে পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশে নরসিংদী জেলার পিবিআই মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব নেয়। পিবিআইয়ের তদন্তকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ  রুবেল শেখ মামলাটির তদন্ত  করে মামলার এজাহারনামীয় আসামি কবিরসহ তিনজন এবং এজাহারের বাইরে আরও দুজনসহ মোট পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেন। পিবিআইয়ের দেওয়া চার্জশিটের বিরুদ্ধে রিনা বেগমের নারাজির প্রেক্ষিতে আদালত চলতি বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব সিআইডিকে দেয়।

সর্বশেষ খবর