ঘনকুয়াশার কারণে ২০১১ সালে বন্ধ হয়েছিল বিমানের সিলেট-লন্ডন সরাসরি ফ্লাইট। এরপর কুয়াশা কেটে আকাশ রৌদ্রোজ্জ্বল হলেও কাটেনি সরাসরি ফ্লাইটের কুয়াশা। রিফুয়েলিং সিস্টেম সমস্যা দেখিয়ে আটকে রাখা হয় সরাসরি ফ্লাইট। ২০১৫ সালের মার্চে সিলেটে রিফুয়েলিং স্টেশন চালু হলেও নানা অজুহাতে বন্ধ রাখা হয় সিলেট-লন্ডন সরাসরি ফ্লাইট। এনিয়ে সিলেট ও লন্ডনে চলে নানা প্রতিবাদ কর্মসূচি। শেষ পর্যন্ত গতকাল ফের চালু হলো সিলেটী প্রবাসীদের স্বপ্নের সিলেট-লন্ডন সরাসরি ফ্লাইট। ফ্লাইটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আগামীতে সিলেট ওসমানী বিমানবন্দর থেকে ইউরোপ, আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশেও সরাসরি যাত্রী পরিবহনের আশ্বাস দিয়েছেন বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মাহবুব আলী। গতকাল দুপুর সোয়া ১২টায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বিজি-০০১ ফ্লাইটটি ২৪৪ জন যাত্রী নিয়ে লন্ডনের উদ্দেশে ওসমানী বিমানবন্দর ত্যাগ করে। যাত্রীদের মধ্যে ৫৬ জন ওঠেন ঢাকা থেকে বাকি ১৮৮ জন ছিলেন সিলেটের। এর আগে সকাল ৯টায় প্রধান অতিথি হিসেবে সিলেট-লন্ডন সরাসরি ফ্লাইটের উদ্বোধন করেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মো. মাহবুব আলী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিমান পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান সাজ্জাদুল হাসান, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম. মফিদুর রহমান, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মোকাব্বির খান ও সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মো. মাহবুব আলী বলেন, বিমানের অনেক বদনাম ছিল। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে শুদ্ধি অভিযান চালানোয় গত অর্থবছরে ২০০ কোটি টাকার ওপরে লাভ হয়েছে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ওসমানী বিমানবন্দরকে আধুনিকায়ন ও পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নীত করার কাজ শুরু হয়েছে। গত এপ্রিলে রানওয়ের শক্তি বৃদ্ধির কাজ শেষ হয়েছে। গত ১ অক্টোবর নতুন টার্মিনাল ভবন নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। রানওয়ে সম্প্রসারণের কাজও এগিয়ে চলছে। সবমিলিয়ে ওসমানী বিমানবন্দর হবে অত্যাধুনিক বিমানবন্দর। মাহবুব আলী বলেন, আগামীতে সিলেট থেকে ইউরোপ, আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনাও হবে। বিমানবন্দরের আধুনিকায়নের কাজ শেষ হলে বিদেশি এয়ারলাইনসগুলোও ওসমানীতে তাদের ফ্লাইট পরিচালনা করবে বলে আমরা আশাবাদী। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিমান পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান সাজ্জাদুল হাসান বলেন, প্রধানমন্ত্রী আকাশ যোগাযোগের ব্যাপারে খুবই আন্তরিক বলেই বিমানের বহরে নতুন নতুন উড়োজাহাজ সংযোজন হয়েছে। বিমানে উঠলে তিনি সিট থেকে উঠে যাত্রীদের খবর নেন। বেবিচকের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান বলেন, এ যাবৎ ৫৩টি দেশের সঙ্গে বিমান চলাচলের চুক্তি হয়েছে। বঙ্গবন্ধুও স্বপ্ন দেখেছিলেন বাংলাদেশে একদিন ‘এভিয়েশন হাব’ হবে। তার সুযোগ্য কন্যার নেতৃত্বে সেই স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে।