সোমবার, ৫ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

২০ বছর পর মায়ের বুকে সেই আসমা

নোয়াখালী প্রতিনিধি

২০ বছর পর মায়ের বুকে সেই আসমা

শিশুকালে হারিয়ে যাওয়ার ২০ বছর পর মায়ের খোঁজ পেয়েছে গৃহবধূ আসমা। নোয়াখালী পৌরসভার বীর মুক্তিযোদ্ধা রবিউল হোসেন কচি মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে আসমাকে তার মা রোকাইয়া বেগমের বুকে ফিরিয়ে দেন পৌর মেয়র সহিদ উল্যাহ খাঁন সোহেল।

২০০১ সালে চট্টগ্রামে হারিয়ে যাওয়া জোহরা খাতুন আসমা নামের শিশুকে এক পরিবার বাসায় কাজ করাতে পথ থেকে নিয়ে যায়। একদিন মারধর করলে সে আবার ওই বাসা থেকে রাস্তায় বেরিয়ে পড়ে। এরপর নোয়াখালীর ফেরদৌসী নামে এক নারী কান্নারত আসমাকে কয়েকদিন নিজের কাছে রাখেন। কিন্তু কেউ খোঁজ-খবর নিচ্ছেন না দেখে তিনি আসমাকে নিয়ে আসেন নিজের এলাকা নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাছপুর গ্রামে। তারপর নিয়তি তাকে বিভিন্ন জায়গায় টেনে নিয়েছে। পাঁচ বছর ছিলেন নোয়াখালীর টেলিফোন বিভাগের কর্মকর্তা ফরহাদ কিসলুর বাসায়। এরপর আরও দুই বাসায় ৬ বছর থেকে পুনরায় ফরহাদ কিসলুর বাসায় ফিরেন। ফরহাদ কিসলুর স্ত্রী ফাতেমা জোহরা সীমা তার বাবার বাড়ি একলাছপুরে পাঠিয়ে দেন আসমাকে। তখন সীমার বাবার বাড়িতে ভবন নির্মাণের কাজ চলছিল। ডানপিটে আসমার সঙ্গে নির্মাণ শ্রমিকের ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়। এক পর্যায়ে তারা পালিয়ে যান চট্টগ্রামে। সেখানে তিন বছরের দাম্পত্য জীবনে এক মেয়ের জন্ম দেয় আসমা। সংসারে কখনো সুখে কখনো স্বামীর অত্যাচারে জীবন বয়ে চলছিল। হঠাৎ স্বামী বিদেশে চলে গেলে আবার নোয়াখালীতে ফিরে আসেন আসমা। আশ্রয় নেন পুনরায় ফরহাদ কিসলুর বাসায়।   

এবার জীবনের নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে ফিরে আসা আসমার শেকড়ের খোঁজ কীভাবে পাওয়া যায় তার জন্য ফরহাদ কিসলুর স্ত্রী সীমা নোয়াখালীর জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মেজবাহ উল হক মিঠুর সহযোগিতা চান। সূত্র ছিল নড়াই গ্রাম,  ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা এটুকুই। সাংবাদিক মিঠু ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবীনগরের বিটিভি ও ইত্তেফাক প্রতিনিধির মাধ্যমে তৃতীয়বারের প্রচেষ্টায় খুঁজে পান আসমার পরিবারকে! আসমা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার নড়োই গ্রামের অ¹ান মিয়া ও রোকাইয়া বেগমের মেয়ে। আসমাকে ফিরে পেয়ে হাউ-মাউ করে কান্নায় ভেঙে পড়েন মা রোকাইয়া বেগম ও ছোট বোন রানু বেগম। এসময় আসমাও আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ে। এ যেন এক আবেগপূর্ণ দৃশ্য!

সর্বশেষ খবর