মঙ্গলবার, ৬ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

শীতের আগমনে সংক্রমণের গতি বাড়ছে যুক্তরাষ্ট্রে

প্রতিদিন ডেস্ক

করোনায় বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃত্যুর দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শীতের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে সংক্রমণের গতিও বৃদ্ধি পাওয়া শুরু হয়েছে। এ অবস্থায় ফের লকডাউনের পথে রয়েছে নিউইয়র্ক। সূত্র : রয়টার্স।

জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের নয়টি অঙ্গরাজ্যে করোনা সংক্রমণের রেকর্ড ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে। সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি দেখা দেওয়া এসব রাজ্যের বেশিরভাগ মধ্য-পশ্চিম কিংবা পশ্চিমের- যেখানে ঠান্ডা আবহাওয়া মোটামুটি জেঁকে বসতে শুরু করায় সংক্রমণ বাড়ছে। শুধু গত শনিবারই কেন্টাকি, মিনেসোটা, মন্টানা এবং উইসকনসিন এই চার অঙ্গরাজ্যে নতুন করে মহামারী করোনা সংক্রমণের রেকর্ড হয়েছে। একই দিনে দেশজুড়ে আরও ৪৯ হাজার কভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছেন- যা গত সাত সপ্তাহের মধ্যে যে কোনো শনিবারের চেয়ে সর্বোচ্চ সংক্রমণের রেকর্ড। এক হিসাব অনুযায়ী, এ ছাড়াও গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে রেকর্ড সংক্রমণ দেখা গেছে কানসাস, নেব্রাস্কা, নিউ হ্যাম্পশায়ার, সাউথ ডাকোটা এবং ওয়োমিংর মতো অঙ্গরাজ্যগুলোতে। প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরেই স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে আসছেন যে, ঠান্ডা আবহাওয়া দেখা দিলে মানুষের মধ্যে করোনার বিস্তার বাড়বে। যুক্তরাষ্ট্রের একেবারে মধ্য-পশ্চিমের রাজ্যগুলোতে এখন দিনের তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত চার দিনের মধ্যে তিন দিনই করোনার রেকর্ড সংক্রমণ হয়েছে মন্টানা অঙ্গরাজ্যে। এ ছাড়া রাজ্যটিতে হাসপাতালে কভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা বেড়েছে রেকর্ড পরিমাণে। এসঙ্গে গত তিন দিনের মধ্যে দুই দিন রেকর্ড রোগী আক্রান্ত হয়েছে উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যে। শনিবার সেখানে হাসপাতালে কভিড-১৯ রোগী ভর্তিরও রেকর্ড হয়েছে। সেখানে নমুনা পরীক্ষা হওয়ার প্রতি একশো জনের মধ্যে ২২ জন মহামারী করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হচ্ছেন; যা দেশটিতে সর্বোচ্চ সংক্রমণের হার। মাথাপিছু নতুন সংক্রমণে শীর্ষে রয়েছে নর্থ ডাকোটা, সাউথ ডাকোটা এবং উইসকনসিন। যুক্তরাষ্ট্রে এখন গড়ে প্রতিদিন ৪২ হাজার ৬০০ নতুন রোগী এবং ৭০০ জন মানুষ করোনায় মারা যাচ্ছেন।

লকডাউনের পথে নিউইয়র্ক : করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে নিউইয়র্ক শহরে। সেখানকার বেশ কয়েকটি এলাকায় গত কয়েক দিনে বেড়েছে সংক্রমণের হার। যার জেরে ওই শহরের কয়েকটি এলাকায় ফের জারি হয়েছে লকডাউনের বিধিনিষেধ। গত রবিবার তা ঘোষণা করেন নিউইয়র্কের মেয়র বিল দে ব্লাসিয়ো। নতুন করে আছড়ে পড়া করোনা ঢেউ রুখতে ২০টি হটস্পট চিহ্নিত করেছে সেখানকার স্থানীয় প্রশাসন। সেগুলো মূলত ব্রুকলিন ও কুইনস এলাকায়। এর মধ্যে ৯টি জিপ কোড এলাকায় থাকবে কড়া বিধিনিষেধ। বাকি এলাকাগুলোর বাসিন্দারা কিছু ব্যাপারে ছাড় পাবেন। ওই ৯টি জিপ কোড এলাকায় ইহুদিরা রয়েছেন সব থেকে বেশি। ইহুদিদের মধ্যেই করোনা ছড়িয়ে পড়ার হার সবচেয়ে বেশি। তাদের মাস্ক পরাতে গিয়েও ঘাম ছুটছে বলে জানিয়েছে সেখানকার প্রশাসন। গত সাত দিন ধরে নিউইয়র্কের ওই ৯টি এলাকায় সংক্রমণের হার তিন থেকে আট শতাংশ। যেখানে গোটা নিউইয়র্ক শহরের সংক্রমণের হার মাত্র ১.৫ শতাংশ।

বিশ্বে সংক্রমণের সংখ্যা ছাড়াল ৩ কোটি ৫৬ লাখ : ওয়ার্ল্ডোমিটারের হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বে করোনায় সংক্রমিতের সংখ্যা ৩ কোটি ৫৬ লাখ ছাড়িয়েছে। গতকাল পর্যন্ত এ সংখ্যা ছিল ৩ কোটি ৫৪ লাখ ৩৭ হাজারের বেশি। আর মৃত্যু ছিল ১০ লাখ ৪২ হাজার ৩৪৪। গত রবিবার বিশ্বের মধ্যে আগের মতোই সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে ভারতে। দেশটিতে এদিন নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হন ৭৪ হাজার ৭৬৭ জন এবং মারা যান ৯০২ জন। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্ত হন ৩৪ হাজার ৬৬ জন এবং মারা যান ৩২২ জন। তৃতীয় অবস্থানে থাকা ব্রাজিলে আক্রান্ত হন ৮ হাজার ৪৫৪ জন এবং মারা যান ৩৬৪ জন।

 চতুর্থ অবস্থানে থাকা রাশিয়ায় এদিন আক্রান্ত হন ১০ হাজার ৪৯৯ জন এবং মারা যান ১০৭ জন। এদিন বিশ্বে মোট সংক্রমিতের সংখ্যা ছিল ২ লাখ ৪৯ হাজার ৯৬৩ জন এবং মৃতের সংখ্যা ছিল ৪ হাজার ১৯ জন।

সর্বশেষ খবর