বৃহস্পতিবার, ৮ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

ঢাকার খালে মিলল ফ্রিজ-টিভি লেপ-তোশক

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকার খালে মিলল ফ্রিজ-টিভি লেপ-তোশক

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেছেন, খাল, ডোবা, নালা অপরিষ্কার পাওয়া গেলে আগামী ২০ অক্টোবর থেকে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গতকাল রাজধানীর মিরপুরের দক্ষিণ বিশিলে গোদাখালী খাল পরিষ্কার কার্যক্রম ও খাল থেকে তোলা আবর্জনা পরিদর্শনকালে তিনি এ কথা বলেন। মেয়র বলেন, ‘যেভাবে এডিস মশা থেকে নগরবাসীকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য চিরুনি অভিযান চালিয়েছি এবং জরিমানা করেছি, একইভাবে আসন্ন শীত মৌসুমে নগরবাসীকে কিউলেক্স মশা থেকে সুরক্ষা দিতে আগামী ২০ অক্টোবর থেকে আমরা ডিএনসিসি এলাকার খাল, ডোবা ও নালা পরিদর্শন করব। সেই খাল, ডোবা ও নালা পরিষ্কার অবস্থায় পাওয়া না গেলে আমরা জরিমানা করব। সরকারি, বেসরকারি কিংবা ব্যক্তিমালিকানাধীন যে কোনো সংস্থা হোক না কেন, তাকে জরিমানা করা হবে। আমি সেই সংস্থা বা ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হব। কারণ খাল কচুরিপানাপূর্ণ বা অপরিষ্কার থাকলে সেখানে মশা বংশবিস্তার করে। আমি বিনয়ের সঙ্গে অনুরোধ করব, আমাদের সব সংস্থা, সরকারি-বেসরকারি এবং ব্যক্তি সবাই এগিয়ে আসুন। সিটি করপোরেশনের একার পক্ষে সম্ভব নয়। সবাই মিলে এগিয়ে এলে তাহলেই সম্ভব।’ খাল থেকে তোলা আবর্জনার প্রদর্শনীতে মেয়র বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন কিছুদিন ধরে আমরা ডিএনসিসি এলাকার বিভিন্ন খাল ও লেক পরিষ্কার করছি। এই খালগুলো থেকে আমরা কী কী পাচ্ছি, এখানে তার কিছু নমুনা এই প্রদর্শনীতে রেখেছি। বিভিন্ন খাল থেকে আমরা শতাধিক জাজিম, কয়েক ডজন সোফা, টেলিভিশনের খোলস, ভাঙা ফ্রিজ, সুটকেস, বালিশ, ২০০ ট্রাক ডাবের খোসা পেয়েছি। কিন্তু এটা কেন। আমরা কবে এই শহরকে ভালোবাসব! আমি বারবার বলছি, একটু বৃষ্টি হলেই খাল ভরে যায় এবং ওভারফ্লো করে, জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। অথচ আমাদের ড্রেনের পানি খালে এবং খাল থেকে পানি নদীতে যাওয়ার কথা। এ জন্যই আমি আজ আপনাদের বলেছি, আপনারা এই প্রদর্শনীতে আসুন।’ মেয়র প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘খাল তুমি কী জন্য? তোমার কাছে সবাই ময়লা ফেলবে এ জন্য? নাকি পানিপ্রবাহের জন্য?’ আতিকুল ইসলাম বলেন, বিদেশে খালগুলো ব্যবহার করে ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট লাইন হচ্ছে। অথচ এটা খুব দুঃখজনক, আমাদের খালগুলো দখল হয়ে যাচ্ছে, খালের ওপর বাড়ি, মাঠ হচ্ছে। এই খাল নিয়ে সবাই ব্যবসা করছে।’ মেয়র বলেন, ‘আমরা খাল পরিষ্কার করছি। কিন্তু খাল আমাদের পরিষ্কার করার কথা ছিল না। খাল পরিষ্কার করার কথা অন্য একটি সংস্থার। এর পরও আমরা, আমাদের কাউন্সিলররা মনে করেছি, সবাই মিলে খাল পরিষ্কার করতে হবে। আমি কোনো দিকে না তাকিয়ে, কারও জন্য অপেক্ষা না করে আমাদের এলাকার খাল নিজেরা পরিষ্কার করছি। আমি দুই হাত তুলে জনগণের কাছে বলছি, আপনারা খাল দখল করবেন না, খালের মধ্যে ময়লা ফেলবেন না। যুব সমাজকে অনুরোধ করব, আপনারা সোচ্চার হোন, প্রত্যেকে নিজ নিজ এলাকার খালের দায়িত্ব নিন। স্বেচ্ছাসেবকরা এগিয়ে আসুন।’ পরিদর্শনকালে অন্যান্যের মধ্যে ডিএনসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এম সাইদুর রহমান, স্থপতি ইকবাল হাবিব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, বিভিন্ন সংস্থার মালিকানাধীন ১৬টি খাল ও লেক চলতি মাসের মধ্যে পরিষ্কার কাজ সম্পন্ন করবে ডিএনসিসি।

সর্বশেষ খবর