শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ৮ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা
যুবলীগ নেতাকে নির্যাতন

দুই ওসিসহ সাত পুলিশ সদস্যের নামে মামলা

ফরিদপুর প্রতিনিধি

ফরিদপুরে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে যুবলীগ নেতাকে চোখ বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগে দুই ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) সাত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গতকাল ফরিদপুরের এক নম্বর আমলি আদালতে এ মামলাটি করেন ভুক্তভোগী যুবলীগ নেতা শেখ আরাফাত হোসেন (৩৬)।

আদালতের বিচারিক হাকিম মো. ফারুক হোসেন মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ফরিদপুরকে নির্দেশ দিয়েছেন। এ মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করা হয়েছে ৭ জানুয়ারি। শেখ আরাফাত হোসেন ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার কাউলিবেড়া ইউনিয়নের শেখপুরা গ্রামের শেখ মোশাররফ হোসনের ছেলে ও ভাঙ্গা উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। মামলার বিবাদীরা হলেন- ফরিদপুর ডিবি পুলিশের সাবেক ওসি আহাদুজ্জামান আহাদ (৫৫), ভাঙ্গা থানার ওসি মো. শফিকুর রহমান (৪৯), ভাঙ্গা থানার চার উপ-পরিদর্শক (এসআই) এবাদুল হক মোল্লা (৩৫), আনিসুর রহমান (৪০), শামসুল হক সুমন (৩৮) ও রেজওয়ান মামুন (৩০) এবং গোয়েন্দা পুলিশের এসআই শাহীন। এজাহারে বলা হয়, গত ৫ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টায় কাউলিবেড়া বাজার থেকে পাঁচ-ছয়জন পুলিশ সদস্য এসে শেখ আরাফাত হোসেনকে জোরপূর্বক মাইক্রোবাসে উঠিয়ে নেন। এরপর পুলিশ সদস্যরা তাকে গাড়িতেই মারপিট করতে থাকেন এবং তাকে ফরিদপুর-৪ আসনের স্বতন্ত্র দলীয় এমপি মুজিবর রহমান চৌধুরীর পক্ষে রাজনীতি করার কথা বলেন। নইলে তাকে ক্রসফায়ারের হুমকি দেওয়া হয়। পরে পুখুরিয়া এলাকায় এসে তাকে গোয়েন্দা পুলিশের গাড়িতে তুলে দেয়। ডিবির গাড়িতে তুলে দিয়ে এসআই এবাদুল ভাঙ্গা থানার ওসিকে মুঠোফোনে বলেন, ‘স্যার আরাফাতকে গোয়েন্দা পুলিশের ওসি আহাদুজ্জামানের হাতে বুঝাইয়া দিয়েছি।’ এজাহারে আরও বলা হয়, পরে গোয়েন্দা পুলিশ তাকে ফরিদপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের তৃতীয় তলায় গোয়েন্দা পুলিশের দফতরে নিয়ে যায়। পরে সেখানে রাতে তাকে কয়েক দফা পিটানো হয়। জীবন রক্ষার জন্য তিনি হাতজোড় করে মিনতি জানালে ওসি ডিবি বলেন, ‘আমি তোগে লোক না। আমি নিক্সন চৌধুরীর লোক।’ বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. কামালউদ্দিন বলেন, আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছে। এ মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে ৭ জানুয়ারি। প্রসঙ্গত, গত ২১ সেপ্টেম্বর ডিবি কার্যালয়ে নির্যাতনের ভিডিও নিজের ফেসবুক আইডিতে আপলোড করেন আরাফাত। এটি সারা দেশে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়। এর পরপরই ফরিদপুর ডিবি পুলিশের সাবেক ওসি আহাদুজ্জামানকে সদরপুরের চন্দ্রপাড়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ থেকে ক্লোজ করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়। ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান বলেন, আদালত এ বিষয়টি তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছে। পিবিআই তদন্ত করবে। তিনি বলেন, পাশাপাশি আমরাও বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশের আলোকে পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর