বৃহস্পতিবার, ৮ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

১০ হাজার ২৪০টি সীমান্ত পিলারের পাকিস্তান লেখা মুছল বিজিবি

বিশেষ প্রতিনিধি

স্বাধীনতার ৪৯ বছর পরও দেশের সীমান্ত পিলারে পাকিস্তানের সংক্ষিপ্তরূপ ‘পাক’ লেখা সরানো হয়নি। টহলের সময় বিষয়টি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যদের নজরে এলে শুরু হয় সীমান্ত পিলারগুলো সংস্কারের কাজ। এরপর একে একে সীমান্ত এলাকার ১০ হাজার ২৪০টি পিলার থেকে পাকিস্তানের নাম মুছে বাংলাদেশের নাম লেখা সম্পন্ন করেছে বিজিবি।

গতকাল ঢাকার পিলখানায় বিজিবি সদর দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বিজিবি পরিচালক (অপারেশন্স) লে. কর্নেল ফয়জুর রহমান। তিনি বলেন, ‘একসময় আমাদের সীমান্ত পাকিস্তান-ভারত সীমান্ত ছিল। সে অনুযায়ী সীমান্ত পিলারে পাকিস্তানের নাম লেখা ছিল। তবে স্বাধীনতার এত বছর পরও অনেক সীমান্ত পিলারে পাকিস্তানের নাম লেখা রয়ে গেছে। আমাদের বিজিবির টহল টিম বিষয়টি প্রথমে নজরে আনে, তারা এগুলো সংস্কারের প্রস্তাব দেয়। এরপর একে একে বিজিবির পক্ষ থেকে ১০ হাজার ২৪০টি পিলার থেকে পাকিস্তানের নাম মুছে বাংলাদেশ লেখা সম্পন্ন করা হয়। এর ফলে কোনো পিলারে আর পাকিস্তান লেখা রইল না।’ সীমান্তে বন্দুকযুদ্ধের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শুধু বিজিবি নয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী কোনো বাহিনী বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটাতে চায় না। আমাদের একমাত্র টার্গেট থাকে অপরাধীকে গ্রেফতার। গ্রেফতারের সময় অনেক অপরাধী আমাদের আক্রমণ করে, গুলি ছোড়ে, তখন জীবন ও সরকারি সম্পদ রক্ষার্থে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।’

বিএসএফের গুলিতে কতজন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে পরিচালক বলেন, ‘সংখ্যাটি নিশ্চয়ই আপনাদের কাছে রয়েছে। সম্প্রতি বিজিবি-বিএসএফের মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে বিএসএফের মহাপরিচালককে এ বিষয়ে বলা হয়েছে। তিনি এ বিষয়ে আপনাদের জবাব দিয়েছেন।’ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী অন্যান্য বাহিনীর বক্তব্য অনুযায়ী সীমান্ত দিয়েই মাদক প্রবেশ করছে, বিজিবি আরও তৎপর হলে বিষয়টি ঠেকানো যেত- এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যিনি বলেছেন এটা তার ব্যক্তিগত মতামত বা অভিমত হতে পারে। এটা পুলিশ সদর দফতরের বক্তব্য নয়। আমরা প্রায়ই মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বা সরাসরি পুলিশ সদর দফতরের সঙ্গে তথ্য বা মতামত শেয়ার করি। কেন্দ্রীয়ভাবে কোনো সাজেশন এলে বিষয়টি নিয়ে অবশ্যই আলোচনা করা হবে। দেশের ৪ হাজার ৪২৭ কিলোমিটার সীমান্তে বিজিবির সদস্যরা ২৪ ঘণ্টা হাজির রয়েছে। সীমান্ত দিয়ে যে মাদকই আসছে আমরা সেগুলো জব্দ করছি।’ এর আগে সংবাদ সম্মেলনে লে. কর্নেল ফয়জুর রহমান জানান, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আট মাসে দেশের সীমান্ত এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ৫ লক্ষাধিক অভিযান পরিচালনা করেছে বিজিবি। এসব অভিযানে সর্বমোট ৩৭২ কোটি ৩৯ লাখ ৫৯ হাজার টাকা মূল্যের বিভিন্ন প্রকারের চোরাচালান ও মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়েছে। অভিযানে ২ হাজার ৬৩ জন চোরাকারবারি এবং অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমের দায়ে ৩৪৪ জন বাংলাদেশি ও ৯৬ জন ভারতীয় নাগরিককে আটক করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর