শুক্রবার, ৯ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীসহ ৪ শিক্ষার্থীকে রাতে ধরে নিয়ে নির্যাতন

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) দুই ছাত্রীসহ চারজন শিক্ষার্থীকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে বহিরাগত কয়েক যুবকের বিরুদ্ধে। গত বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

নির্যাতিতরা হলো- বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭-১৮ সেশনের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আনিকা সরকার সিথী, উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সৈয়দা ফেরদৌস জেবা, মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শুয়াইব ইসলাম স্মরণ এবং হিসাববিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের রাকিব মাহমুদ। অভিযুক্তরা হলো- রাহিম মাহমুদ, আবীর, লিমন এবং অজ্ঞাতনামা কয়েকজন। তারা ঝালকাঠি সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী বলে জানিয়েছেন বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই মাহমুদুল মুনিম। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে দেশব্যাপী ধর্ষণের প্রতিবাদে আলোক মিছিল করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা। এ সময় এক যুবক মোটরসাইকেল নিয়ে আলোক মিছিলে ঢুকে পড়ে। এ নিয়ে কিছুটা বাদানুবাদ হয়। মিছিল শেষে অটোরিকশায় বরিশাল নগরীর বাসায় ফিরছিলেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় মোটরসাইকেল আরোহী ৭ যুবক দপদপিয়া সেতুতে তাদের অটোরিকশা গতিরোধ করে। পরে তারা তাদের নগরীর রূপাতলী হাউজিংয়ের ৮ নম্বর সড়কে নিয়ে আটকে রাখে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণবিরোধী প্রদীপ মিছিলে ঢুকে পড়ে এক মোটরসাইকেল আরোহী। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী হাসিবুর রহমান হাসিব আঘাত পান। এ সময় মোটরসাইকেল আরোহী ও তার সঙ্গে থাকা একজনকে ক্যাম্পাসের দায়িত্বরত পুলিশ আটক করে। প্রদীপ মিছিল শেষ হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের সামনে গেলে ক্যাম্পাস ফাঁড়ির দায়িত্বরত পুলিশ দুই পক্ষকে নিয়ে আলোচনা করে তাদের ছেড়ে দেয়। পরে বাসায় ফেরার পথে তাদের অপহরণ করে রূপাতলী নিয়ে আটকে রাখে।

প্রায় আধা ঘণ্টা আটকে রাখার সময় তারা দুই ছাত্রীকে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল এবং দুই ছাত্রকে শারীরিক নির্যাতন করে।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই মাহমুদুল মুনিম মুঠোফোনে জানান, শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ না থাকায় অভিযুক্তকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেবে পুলিশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. সুব্রত কুমার দাস জানান, চার শিক্ষার্থীকে ধরে নেওয়ার খবর পেয়ে থানায় ফোন করে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। রাতের আঁধারে নারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অপ্রীতিকর ঘটনায় প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. ছাদেকুল আরেফিন জানান, তিনি পুরো ঘটনা সম্পর্কে অবহিত হয়েছেন। এ ঘটনায় প্রক্টরের মাধ্যমে খোঁজখবর নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন উপাচার্য।

 

সর্বশেষ খবর