শনিবার, ১০ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা
অদম্য এক করোনা যোদ্ধা

ডা. তুষারের সেবা নিয়েছেন ২৬০০ রোগী

নিজস্ব প্রতিবেদক

ডা. তুষারের সেবা নিয়েছেন ২৬০০ রোগী

করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে এ পর্যন্ত তিনি ২ হাজার ৬০০ করোনা আক্রান্ত রোগীকে চিকিৎসা দিয়েছেন। মহামারী শুরুর পর কার্যকর টেলিমেডিসিন সেবা দিয়ে রোগীকে সুস্থ হওয়ার আশা দেখিয়েছেন। এমনকি করোনা রোগীদের চিকিৎসায় গড়ে তুলেছেন প্লাজমা ব্যাংক। হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করেই থেমে থাকেননি। ফোন পেয়ে গভীর রাতেও ছুটে গেছেন রোগীর কাছে। এ ছাড়া বিপদে পড়া রোগীর জন্য অক্সিজেন সরবরাহ করেছেন। যার প্রয়োজন তার কাছে পৌঁছে দিয়েছেন অ্যাম্বুলেন্স সেবা। গুরুত্বপূর্ণ এ কাজগুলো যে করোনাযোদ্ধা করেছেন তার নাম ডা. মো. সালেহ মাহমুদ তুষার। কাজ করছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের (ঢামেক) মেডিকেল অফিসার হিসেবে। বাংলাদেশ প্রতিদিনকে ডা. তুষার বলেন, করোনা সংক্রমণ শুরুর প্রথম দিকে মার্চ মাস থেকেই আমি ঢাকা মেডিকেলের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপকদের সঙ্গে মহামারীতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে আলোচনা শুরু করি। তার মতে, বাংলাদেশে স্বাস্থ্যকর্মীরা অপর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা নিয়ে শুধু মনের জোরেই করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমেছে। ঢামেকের অর্থোপেডিক্স বিভাগে কর্মরত এ চিকিৎসক অন্য আরও তিন চিকিৎসককে নিয়ে একটি টিম আকারে করোনা রোগীর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি ও তার দল করোনা রোগীদের বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে হাসপাতালে নিজ দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ডা. তুষার টেলিমেডিসিন সেবা দিয়ে বহু করোনা রোগীকে সাহায্য করেন। আর এ কাজে তাকে ব্রডকাস্ট জার্নালিজম সেন্টার বাংলাদেশ, সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট কিছু প্রতিষ্ঠান সহায়তা করে। তিনি জানান, রোগীদের প্লাজমা দিয়ে সহায়তা করা ছাড়াও রাজধানীর মহাখালীতে তিনি করোনা পরীক্ষার জন্য বুথ চালু করেন। এ বুথে প্রায় ১ হাজার ৮০০-র মতো রোগীর করোনা পরীক্ষা করা হয়।

মরণঘাতী রোগ ক্যান্সারও অদম্য এ চিকিৎসকের গতি থামাতে পারেনি। তাই তো ক্যান্সার জয় করে মানবসেবায় নিজেকে সপে দিয়েছেন। তিনি জানান, গত দুই ঈদেও দায়িত্ব থেকে পিছুপা হননি তিনি। সে সময় করোনা আক্রান্তদের ভোর থেকে টানা টেলিমেডিসিন সেবা দিয়ে যান। করোনা শুরুর পর থেকেই বেসরকারি সংস্থা অলওয়েল.কমের সঙ্গে করোনা রোগীদের চিকিৎসায় আত্মনিয়োগ করেন ঢাকা মেডিকেলের এ চিকিৎসক। ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের মাধ্যমে ঢাকায় কর্মরত গণমাধ্যমকর্মী ও তাদের পরিবারকেও সেবা দেন তিনি। অলওয়েল নামের বেসরকারি প্ল্যাটফরমের মাধ্যমে ডিজিটালি করোনা রোগীদের তথ্য ডাটা আকারে সংরক্ষণ করেন; যা পরে এ রোগীদের স্বাস্থ্য নজরদারির কাজে আসবে।

ডা. তুষার জানান, করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ধাক্কা আসছে। আমরা এরই মধ্যে দেখেছি যে করোনা সংক্রমণে বয়স্কদের মৃত্যুঝুঁকি বেশি। কিন্তু অতীত অভিজ্ঞতা থেকে বলতে চাই করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসার আগে বয়স্কদের পাশাপাশি শিশুদের বিষয়ে আমাদের সতর্ক হতে হবে। কারণ বড়রা নিজেদের শারীরিক সমস্যার কথা বলতে পারলেও শিশুরা তা পারে না।

সর্বশেষ খবর