রবিবার, ১১ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

ভারতে সংক্রমণের গতি কমলেও বেড়ে চলেছে ইউরোপে

প্রতিদিন ডেস্ক

করোনাভাইরাসের সংক্রমণে কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিভিন্ন হিসাবে দেখা যাচ্ছে, প্রতিদিনের সংক্রমণ এবং মৃত্যুতে শীর্ষে থাকা ভারতের পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতির দিকে রয়েছে। দেশটিতে এখন সংক্রমণের গতি অনেকটা কমেছে। একইসঙ্গে কমেছে মৃত্যুর গতিও। তবে অনেকটা স্বাভাবিক অবস্থায় চলে আসা ইউরোপে উল্টো অবস্থা। সেখানে প্রতিদিনের সংক্রমণে রেকর্ড তৈরি হচ্ছে।

রয়টার্স জানিয়েছে, গত শুক্রবার ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে রেকর্ড সংক্রমণ ঘটে ইউরোপে। মহাদেশটিতে এক দিনে এক লাখের বেশি কভিড-১৯ শনাক্ত হয়। এই প্রথমবারের মতো ইউরোপে দৈনিক সংক্রমণ এক লাখ ছাড়িয়েছে। এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, শুক্রবার ফ্রান্সে ২০ হাজার, যুক্তরাজ্যে ১৩ হাজার, রাশিয়ায় ১২ হাজার, চেক প্রজাতন্ত্রে ৮ হাজার এবং স্পেন, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, ইউক্রেন ও বেলজিয়ামে ৫ হাজারের বেশি মানুষ ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। চার হাজারের বেশি শনাক্ত হয়েছে জার্মানি ও পোলান্ডে। পাশাপাশি মৃত্যুহার বাড়তে শুরু করেছে স্পেনে। ফলে আদালত লকডাউন বাতিল করার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মাদ্রিদে জরুরি অবস্থা জারি করেছে স্প্যানিশ সরকার। এ ছাড়া যুক্তরাজ্যেও দ্রুত ছড়াচ্ছে কভিডের দ্বিতীয় ঢেউ। করণীয় নির্ধারণে গলধঘর্ম হচ্ছে ব্রিটিশ মন্ত্রিপরিষদ। আরও জানা গেছে, প্রথম ধাক্কাই কাটিয়ে উঠতে পারছে না লাতিন আমেরিকা, তার ওপর এখন বেড়ে চলেছে আর্জেন্টিনায় শনাক্ত ও মৃত্যুহার। আট লাখ ছাড়িয়েছে মেক্সিকোতে আক্রান্তর সংখ্যা। প্রাণহানী পেরিয়েছে ৮৩ হাজার।

ভারতে সংক্রমণ কমতে শুরু করেছে : ভারতে ধীরে ধীরে কমে আসতে শুরু করেছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। সবশেষ শুক্রবার চব্বিশ ঘণ্টায় দেশটিতে আরও ৭৩ হাজার ২৭২ জনের শরীরে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৯২৬ জনের। সে দেশের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতির সূত্রে এসব তথ্য জানিয়েছে। খবরে বলা হয়, ভারতে লম্বা একটা সময় আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ বা ৯০ হাজারের কোটায় থাকার পর গত কিছুদিন ধরে সংখ্যাটি ৭০ হাজারের ঘরে নেমে এসেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, শুক্রবার ১১ লাখ ৬৪ হাজার ১৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়।

তাতে সত্তর হাজারের বেশি আক্রান্ত নিয়ে সরকারি হিসেবে দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৯ লাখ ৭৯ হাজার। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৫৯ লাখ ৮৮ হাজার মানুষ। চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা নেমে এসেছে ৯ লাখের নিচে, ৮ লাখ ৮৩ হাজার। মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৭ হাজার। রাজ্য হিসেবে মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, উত্তর প্রদেশ, তামিল নাড়–, অন্ধ্র প্রদেশ, দিল্লি ও গুজরাটে করোনার সংক্রমণ বেশি। এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা মহারাষ্ট্রের। সেখানে ১২ হাজার ১৩৪ জন শনাক্ত নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৫ লাখ ছাড়িয়েছে। এর পরেই রয়েছে কর্ণাটক ও উত্তর প্রদেশ। উল্লেখ্য, করোনার বৈশ্বিক তালিকায় আক্রান্তের দিক থেকে ভারতের অবস্থান দ্বিতীয়, আর মৃত্যুতে তৃতীয়। আক্রান্তে তাদের ওপরে আছে কেবল যুক্তরাষ্ট্র, আর মৃত্যুতে ভারতের ওপরে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিল।

সর্বশেষ তথ্য : ওয়ার্ল্ডোমিটারের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, গতকাল সকাল পর্যন্ত বিশ্বে করোনায় মোট সংক্রমিতের সংখ্যা ছিল ৩ কোটি ৭১ লাখ ৫৭ হাজার ৩২৭ এবং মৃত্যুর মোট সংখ্যা ছিল ১০ লাখ ৭৩ হাজার ৪০২। আগেরদিন শুক্রবার ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে নতুন সংক্রমিতের সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ৫৮ হাজার ৩৫৪ জন এবং মৃত্যু ছিল ৫ হাজার ৯০৭ জন। এদিন ভারতে সংক্রমিত হন ৭৩ হাজার ১৯৬ জন এবং মারা যান ৯২৯ জন। যুক্তরাষ্ট্রে সংক্রমিত হন ৬০ হাজার ৫৫৮ জন এবং মারা যান ৯১০ জন। ব্রাজিলে সংক্রমিত হন ২৭ হাজার ৬৫১ জন এবং মারা যান ৬৫৮ জন। রাশিয়ায় সংক্রমিত হন ১২ হাজার ১২৬ জন এবং মারা যান ২০১ জন।

সর্বশেষ খবর