রবিবার, ১১ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

কালোমাথা কসাই পাখি

দীপঙ্কর ভট্টাচার্য লিটন, শ্রীমঙ্গল

কালোমাথা কসাই পাখি

পাখির নাম কসাই। নাম শুনে অনেকেই হয়তো অবাক হবেন। পাখির নাম আবার কসাই হয় নাকি! ছোটবেলা থেকেই আমরা জেনেছি, যারা মাংস বিক্রি করেন তাদের কসাই বলে। এই পাখির আচরণও সেই মাংস বিক্রেতার মতোই। হয়তো এজন্যই কসাই পাখি নামে এরা পরিচিত। তবে নামে কসাই হলেও এরা দেখতে খুব সুন্দর।  এদের বাংলা নাম ল্যাঞ্জা লাটোরা। ইংরেজি নাম খধৎমব-ঃধরষবফ ঝযৎরশব. আর বৈজ্ঞানিক নাম Large-tailed Shrike. এরা ল্যানিডি গোত্রের। অঞ্চলভেদে এরা কালোমাথা কসাই বা কাজল আঁখি নামেও পরিচিত। সম্প্রতি চুয়াডাঙ্গার বেলগাছি পাখির গ্রাম থেকে এই পাখির ছবি তুলেছেন প্রকৃতিপ্রেমী বখতিয়ার হামিদ। পাখিবিশাদরা জানান, কসাই পাখি আকারে ছোট হলেও দেখতে ভারি সুন্দর। মাথার রং কালো। ডানা ও লেজের বেশির ভাগও কালো। গলা, বুক ও পেট সাদা। কালো ডানার ওপর রয়েছে সাদা ছোপ। পেটের নিচের অংশ সাদাটে ও লালচে হলুদ। পিঠ হালকা লালচে ও খয়েরি হলদেটে। লেজ বেশ বড় ও চওড়া।

ঠোঁট শক্ত, মোটা, ধারালো এবং সামনের দিকে বাঁকানো। এরা মূলত পোকা-মাকড়, ইঁদুরের বাচ্চা, টিকটিকি, কেঁচো, ছোট পাখি খেয়ে থাকে। শিকার ছিঁড়ে-কেটে থেঁতলে টুকরা টুকরা করে খায়। এরা প্রয়োজনের বেশি শিকার করে। তাই বাড়তি শিকার গাছের ডালে গেঁথে রাখে পরের দিনের আহারের জন্য। স্ত্রী ও পুরুষ কসাই পাখি দেখতে একই রকম। এ পাখি গ্রামাঞ্চলের ঝোপ-ঝাড়, খোলা মাঠ ও ফসলি জমির আশপাশে কখনো একাকী কখনো বা জোড়ায় জোড়ায় বিচরণ করে। রাস্তার পাশের তারেও এদের ঝুলতে দেখা যায়। শীতকালে এরা পরিযায়ী হয়। আর গ্রীষ্মকাল তাদের প্রজনন সময়। তখন কাটা, খড়কুটো, উল, তুলা দিয়ে গাছের বেশ ওপরে বড় বাটি আকৃতির বাসা বাঁধে। ডিম দেয় তিন থেকে ছয়টি। বখতিয়ার হামিদ বলেন, আমাদের দেশে বেশ কয়েক প্রজাতির কসাই পাখি আছে। তবে কালোমাথা কসাই সারা দেশেই কম- বেশি দেখা যায়। এই পাখি খুব সুন্দর করে তাদের খাবার শিকার করে গাছের ডালে গেঁতে রাখে, যা বিস্ময়কর।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর