মঙ্গলবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা
সন্তান হত্যা মামলার রায়

মা ও তার পরকীয়া প্রেমিকের যাবজ্জীবন

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার কাজীরচর থানার পশ্চিম রতনপুর গ্রামে রনি দুয়ারী নামে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রকে হত্যার দায়ে মা এবং তার দুই পরকীয়া প্রেমিকসহ তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে প্রত্যেক আসামিকে। বরিশালের জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক কে এম শহীদ হোসেন গতকাল এ রায় ঘোষণা করেন।

দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন নিহত শিশু রনির মা কণা বেগম এবং তার দুই পরকীয়া প্রেমিক রুহুল আমিন নলি ও শাহীন নলি। দন্ডপ্রাপ্ত শাহীন নলি হচ্ছেন কণা বেগমের আপন চাচাতো ভাই। অন্যদিকে রুহুল আমিন নলি দন্ডপ্রাপ্ত শাহীন নলির বন্ধু। এরা সবাই কাজীরহাট থানাধীন পশ্চিম রতনপুর এলাকার বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় কণা বেগম ও রুহুল আমিন নলি ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন। আসামি শাহীন নলি পলাতক। ২০১৩ সালে ওই হত্যাকান্ডের সময় নিহত রনি দুয়ারী স্থানীয় কাজীরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ছিল। মামলার নথি থেকে জানা যায়, কণা বেগমের স্বামী লকিতুল্লাহ দুয়ারী চট্টগ্রামের চাকতাই এলাকায় দিনমজুরের কাজ করতেন। তার অবর্তমানে কণা বেগমের সঙ্গে চাচাতো ভাই শাহীন নলির পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বাসায় যাতায়াতের সুবাদে একপর্যায়ে শাহীনের বন্ধু রুহুল আমিনের সঙ্গেও কণা বেগমের পরকীয়ার সম্পর্ক তৈরি হয়। বিষয়টি লকিতুল্লাহসহ স্বজনদের জানায় শিশু রনি। এতে তার ওপর কণা ও তার দুই পরকীয়া প্রেমিক শাহীন ও রুহুল আমিন ক্ষিপ্ত ছিলেন। ঘটনার দিন বেলা ১২টার দিকে কণার বাসায় প্রথমে শাহীন ও পরে রুহুল আমিন পর্যায়ক্রমে কণার সঙ্গে দৈহিক সম্পর্কে মিলিত হয়। রনি দুয়ারী আকস্মিক ঘরে ঢুকে তার মাকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ডাকচিৎকার করে এবং পুরো ঘটনা তার বাবার কাছে বলে দেওয়ার হুমকি দেয়। এ সময় কণা এবং তার দুই পরকীয়া প্রেমিক শাহীন ও রুহুল আমিন শিশু রনির হাত-পা চেপে ধরে গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাস রোধ করে হত্যা করে। এ ঘটনায় পরদিন রনির বাবা লতিকুল্লাহ দুয়ারী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে মেহেন্দীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। পরে পর্যায়ক্রমে আসামিদের পুলিশ গ্রেফতার করে। তারা হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।

 

সর্বশেষ খবর