বুধবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

নেপালে ৫০ হাজার টন সার রপ্তানি করছে বাংলাদেশ

রুহুল আমিন রাসেল

নেপালে ৫০ হাজার টন ইউরিয়া সার রপ্তানি করতে যাচ্ছে কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো)। প্রতিষ্ঠানটি এই সার বিনাশুল্কে রপ্তানি করতে পারবে বলে জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর। জানা গেছে, দক্ষিণ এশিয়ায় ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এই মৌসুমে ৫০ হাজার টন সার চেয়েছিলেন। তারই আলোকে সার রপ্তানি করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এ প্রসঙ্গে শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো) সরকার টু সরকার ভিত্তিতে নেপালে এই সার রপ্তানি করছে। এদিকে গত ৫ অক্টোবর এনবিআরের দ্বিতীয় সচিব ফরিদা ইয়াসমীন স্বাক্ষরিত পত্রে আইনি ব্যাখ্যা তুলে ধরে বলা হয়- বাংলাদেশ কাস্টমস ট্যারিফ ২০২০-২০২১ অনুযায়ী ইউরিয়া সার রপ্তানির ক্ষেত্রে ‘স্টেশনারি রেট অব এক্সপোর্ট ডিউটির পরিমাণ ‘ফ্রি’। অর্থাৎ- ইউরিয়া সার বিনাশুল্কে রপ্তানি করা যাবে।  এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে গত ১ সেপ্টেম্বর টেলিফোনে ৫০ হাজার টন ইউরিয়া সার সহায়তা চান নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি। জবাবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নেপালকে সার দিতে রাজি হয়েছিলেন। তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেপালকে রেল ট্রানজিট দেওয়ার বিষয়েও আশ্বস্ত করেন। এ জন্য নেপালের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এ সময় উভয় নেতা দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণে দুই দেশের মধ্যে প্রেফারেনসিয়াল ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট (পিটিএ) স্বাক্ষর হওয়ার আশা প্রকাশ করেন। দুই প্রধানমন্ত্রীই নেপালে বিদ্যুৎ উৎপাদন, গ্রিড সংযোগ এবং বিদ্যুৎ সরবরাহে সহযোগিতা, দুই দেশের মধ্যে বাধা-মুক্ত ও ভারসাম্যপূর্ণ বাণিজ্যের প্রচার, বাংলাদেশের মাধ্যমে নেপালের ট্রানজিট সুবিধার উন্নতিসহ বিভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে মতবিনিময় করেন। পর্যটনের জন্য রহনপুর (বাংলাদেশ) হয়ে সিঙ্গাবাদ (ভারত) রেলপথটি নতুন করে চালু করার জন্য নেপালের প্রধানমন্ত্রী ওলি শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান। সূত্র জানায়, বাংলাদেশ-নেপালের মধ্যে যে ট্রানজিট চুক্তি হয়েছিল, সেটি সংশোধন করে রেলপথে নেপালকে ট্রানজিট সুবিধা দিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এই সংশোধনীর প্রস্তাব অনুমোদন পেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রোহানপুর থেকে ভারতের সিঙ্গাবাদ হয়ে নেপালের বীরগঞ্জ পর্যন্ত ২২৫ কিলোমিটার রেলপথে পণ্য পরিবহন সুবিধা চালু হবে। এই দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পাশাপাশি বাংলাদেশের মোংলা বন্দর ব্যবহার করে নিজেদের আমদানি-রপ্তানি পণ্য পরিবহন করবে নেপাল। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্র বলছে- নেপালের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যের পরিমাণ সামান্য। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশটিতে বাংলাদেশের রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৩৮ মিলিয়ন ডলার। আমদানির পরিমাণ ছিল ১৪ মিলিয়ন ডলার। পাটজাত পণ্য, ব্যাটারি, তৈরি পোশাক, টয়লেট্রিজ পণ্য, ওষুধসহ বেশকিছু পণ্য নেপালে রপ্তানি করে বাংলাদেশ। দুই দেশের মধ্যে রেল কার্গো শুরু হলে বাণিজ্য বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর