বৃহস্পতিবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

বিজ্ঞাপনটি বিদ্বেষপূর্ণ ও নেতিবাচক

ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতরের প্রতিবাদ - মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ভ্যাটের আইনি পদক্ষেপে কোনো ব্যবসায়ীর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সুযোগ নেই।

নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর, মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) বলেছে, ভ্যাট আহরণের জন্য নেওয়া কোনো আইনি পদক্ষেপের ফলে কোনো ব্যবসায়ীর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সুযোগ নেই। কারণ ভ্যাট কোনোভাবেই তাদের আয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়। আইন অনুযায়ী ভ্যাট দেন মূলত ভোক্তারা। আর ভোক্তাদের কাছ থেকে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ভ্যাট আদায় করে থাকে, যার একমাত্র মালিক রাষ্ট্র।
৮ অক্টোবর বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রথম পাতায় ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে আমাদের আকুল আবেদন’ শিরোনামে এক বিজ্ঞাপনের প্রতিবাদে গতকাল পাঠানো প্রতিবাদপত্রে বিজ্ঞাপনটিকে অধিদফতরের বিরুদ্ধে বিদ্বেষপূর্ণ ও নেতিবাচক বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপনটিকে অধিদফতরের বিরুদ্ধে বিদ্বেষপূর্ণ ও নেতিবাচক, যা সরকারের রাজস্ব আদায়ের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করার অপচেষ্টা বলে প্রতিবাদপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রকাশিত বিজ্ঞাপনটিতে মহামারীর এই দুঃসময়ে ভ্যাট আদায়ের অভিযানকে ‘অপ্রাসঙ্গিক’ ও ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে অভিহিত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, নিরীক্ষা গোয়েন্দা তদন্ত অধিদফতর, মূল্য সংযোজন কর ঢাকা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অধীনে বিশেষায়িত একটি গোয়েন্দা দফতর। এ দফতর গোয়েন্দাতথ্যের ভিত্তিতে মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এবং সংশ্লিষ্ট বিধিমালা যথাযথভাবে কার্যকরীকরণ করে থাকে।
ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতর এ নিয়ে বলেছে, অধিদফতর এনবিআরের অধীন বিশেষায়িত একটি গোয়েন্দা দফতর। এ দফতর গোয়েন্দাতথ্যের ভিত্তিতে মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এবং সংশ্লিষ্ট বিধিমালা কার্যকর করে থাকে। এ ছাড়া ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতরের কর্মকর্তারা কাজের ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের যে কোনো ন্যায্য সমস্যার প্রতি সংবেদনশীল। আর দেশের অধিকাংশ ব্যবসায়ী বিদ্যমান আইন ও বিধি যথাযথ পরিপালন করে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। তবে কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান ক্রেতাদের থেকে আদায় করা ভ্যাট রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা না দিয়ে নিজেরা আত্মসাৎ করছে এবং অন্যান্য সৎ ও প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়ীদের অসম প্রতিযোগিতার চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে দিচ্ছে।
প্রতিবাদপত্রে আরও বলা হয়েছে, সম্প্রতি সরকারের ক্রমবর্ধমান উন্নয়নে রাজস্ব চাহিদার জোগান ও রাজস্ব আহরণের স্বার্থে এনবিআরের নির্দেশনায় ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতর ভ্যাট ফাঁকি প্রতিরোধে বিশেষ কার্যক্রম ও পর্যবেক্ষণ জোরদার করেছে। গত তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ৬৭টি প্রতিষ্ঠানের নিরীক্ষা ও তদন্ত করে প্রায় ১ হাজার ১০৫ কোটি ৭৬ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকি উদ্্ঘাটন করেছে, যা বর্তমানে আদায়ের প্রক্রিয়াধীন।
প্রতিবাদপত্রে অধিদফতর আরও বলেছে, এসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে গোয়েন্দাতথ্য সংগ্রহ করে অধিদফতর আইন অনুযায়ী অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে ভ্যাট ফাঁকি উদ্্ঘাটন করছে ও আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে। আর সবাই জানেন আইন অনুযায়ী ভ্যাট দেন মূলত ভোক্তা। ভোক্তার কাছ থেকে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ভ্যাট আদায় করে থাকে, যার মালিক রাষ্ট্র। সুতরাং ভ্যাট আহরণের কোনো আইনি পদক্ষেপের ফলে সংগত কারণেই কোনো ব্যবসায়ীর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সুযোগ নেই। ভ্যাট কোনোভাবেই তাদের আয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়।
প্রতিবাদপত্রে আরও বলা হয়েছে, সম্প্রতি সরকারের ক্রমবর্ধমান উন্নয়নে রাজস্ব চাহিদার জোগান ও রাজস্ব আহরণের স্বার্থে এনবিআরের নির্দেশনায় ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতর ভ্যাট ফাঁকি প্রতিরোধে বিশেষ কার্যক্রম ও পর্যবেক্ষণ জোরদার করেছে। গত তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) অধিদফতর ৬৭টি প্রতিষ্ঠানের ওপর নিরীক্ষা পর্যালোচনা ও তদন্ত করে প্রায় ১ হাজার ১০৫ কোটি ৭৬ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকি উদ্্ঘাটন করেছে, যা বর্তমানে আদায়ের প্রক্রিয়াধীন। প্রকাশিত বিজ্ঞাপন নিয়ে ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতর বলেছে, সেখানে অধিদফতরের কার্যক্রম নিয়ে নেতিবাচক বক্তব্য এবং একটি অংশে সরকারি দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত আক্রমণের চেষ্টা করা হয়েছে। এ ছাড়া অধিদফতরের কার্যক্রমের কারণে কোন কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এর কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য বিজ্ঞাপনটিতে নেই। আবার অধিদফতরের কার্যক্রম আইনবহির্ভূত কিনা তাও দাবি করা হয়নি। এ ছাড়া বিজ্ঞাপনটি কোনো প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী সংগঠনের নাম ব্যবহার না করে অস্তিত্বহীন ‘ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী সমাজ’ নামে প্রচার করে নিজেদের আড়াল করার উদ্দেশ্য অত্যন্ত রহস্যজনক। প্রতিবাদপত্রে সব শেষে আরও বলা হয়েছে, বিজ্ঞাপন প্রচারে ব্যয় করা অর্থের বৈধতা সন্ধান করাটাও জরুরি। কেননা অর্থ ব্যয় করে বেনামে বিজ্ঞাপন ছাপিয়ে অধিদফতরের চলমান ভ্যাট ফাঁকির বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রমকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে, যা প্রকারান্তরে সরকারের রাজস্ব আয়ের স্বাভাবিক গতিকে বাধাগ্রস্ত করার শামিল। এটি এক ধরনের ‘স্যাবোটাজ’ও কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অধিদফতর রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান এবং সরকারি দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সম্মানহানির উদ্দেশ্যে মিথ্যা ও বিদ্বেষপূর্ণ বিজ্ঞাপন প্রচার করার প্রতিবাদ জানাচ্ছে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের কর্মকা- থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করছে। একই সঙ্গে এ ধরনের বিজ্ঞাপনদাতাদের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সহযোগিতা না করা এবং এই জাতীয় অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্যও অধিদফতরের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর