শিরোনাম
শুক্রবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

আইনি জটিলতা নেই তবু নির্বাচন আটকা ঝিনাইদহ পৌরসভায়

দ্রুত নির্বাচন করতে সিইসিকে এমপির চিঠি

নিজস্ব প্রতিবেদক

আইনি জটিলতা নেই তবুও আটকা আছে ঝিনাইদহ পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠান। ২০১১ সালের ১৩ মার্চ এ পৌরসভায় নির্বাচন হয়। মেয়াদ শেষ হয় ২০১৬ সালের ২ এপ্রিল। কিন্তু সাড়ে চার বছরেও এ পৌরসভায় নির্বাচন হয়নি। কেন নির্বাচন হচ্ছে না? নির্বাচন কমিশন কেন ভোটের উদ্যোগ নিচ্ছে না? তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে। ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পৌরসভা আইন অনুযায়ী- পৌরসভার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যে ভোট গ্রহণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এদিকে জরুরি ভিত্তিতে পুরনো সীমানায় ঝিনাইদহ পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদাকে চিঠি দিয়েছেন ঝিনাইদহ-২ আসনের  সংসদ সদস্য তাহজীব আলম সিদ্দিকী। সম্প্রতি তিনি সিইসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এই চিঠি দেন। চিঠিতে বলা হয়েছে, ঝিনাইদহ পৌরসভায় গত ২০১১ সালের মার্চে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সাইদুল করিম মিন্টু মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হন। পরে পাগলাকানাই ও সুরাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এবং পৌরসভা মেয়রের সম্মতিতে সুরাট ইউনিয়নের লাউদিয়া, পাগলাকানাই ইউনিয়নের গয়েশপুর, কোড়াপাড়া মৌজাকে পৌরসভায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেন। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ২০১৫ সালের ৫ এপ্রিল এলাকা সম্প্রসারণের খসড়া গেজেট প্রকাশ করে। কিন্তু কোনো আপত্তি না পড়ায় ২২ জুলাই চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়। পরে পাগলাকানাই ইউপি চেয়ারম্যান এ কে এম নজরুল ইসলাম ও কবির হোসেন, চেয়ারম্যান ও জাহাঙ্গীর আলম দুটি রিট পিটিশন দায়ের করেন। রিট পিটিশন নং ২৯২২/১৬ ও ২৯২৩/১৬। হাই কোর্ট দুটি পিটিশনেরই তিন সপ্তাহের রুল জারি করেন। রুল জারির ফলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে ২০১৬ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি (স্মারক-২২৬) তৎকালীন জেলা প্রশাসকের কাছে জবাব চাওয়া হয়। জেলা প্রশাসক ২০১৬ সালের ৭ এপ্রিল (স্মারক-১৬৪) জবাব দেন। এরপর আর হাই কোর্টের রুলের জবাব দেওয়া হয়নি। দীর্ঘদিন রিট দুটি মোকাবিলা না করায় কার্যতালিকা থেকে বাদ (আউট অব লিস্ট) দেওয়া হয়। এরপর রিট দুটির আর কোনো কার্যকারিতা থাকে না ও একটি রিটেও নির্বাচনের ওপর কোনো স্থগিতাদেশ নেই। চিঠিতে বলা হয়, স্থানীয় সরকার বিভাগের পৌর ১ শাখা গত ১৬ আগস্ট বর্তমান জেলা প্রশাসকের কাছে পৌরসভার নির্বাচন-সংক্রান্ত তথ্যাদি চাইলে জেলা প্রশাসক গত ১৪ সেপ্টেম্বর (৪২১ নং স্মারক পত্রে) পৌরসভার নির্বাচন-সংক্রান্ত তথ্য পাঠান। ঝিনাইদহ সদর পৌরসভার নির্বাচনের ক্ষেত্রে তিনি মতামত দিয়েছেন যে, মামলা নং ১২৭৬৭/২০১৭, ২৯২২/১৬, ২৯২৩/১৬-এর কারণে নির্বাচন স্থগিত রয়েছে। মতামতটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। জি এম রফিকুল ইসলাম সুরাট ইউনিয়নের নির্বাচন চেয়ে ১২৭৬৭ নং মামলাটি দায়ের করেন। হাই কোর্ট চার সপ্তাহের একটি রুল জারি করে। সেই রুলে দীর্ঘদিন জবাব না দেওয়ায় ২০১৭ সালের ১০ ডিসেম্বর মামলাটি ‘আউট অব লিস্ট’ হয়ে যায়। মামলাটির ওপর কোনো স্থগিতাদেশ নেই। চিঠিতে নির্বাচন বলা হয়, দীর্ঘদিন ঝিনাইদহ পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়ায় জনগণের মধ্যেও একটি বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় সরকারের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এতে যে কোনো সময়ে দলমত নির্বিশেষে স্বতঃস্ফূর্ত বিক্ষোভ সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, যা আইনশৃঙ্খলাকে চরমভাবে বিঘ্নিত করতে পারে। আমার নির্বাচনী এলাকায় এরকম দৃষ্টান্ত অতীতে বহুবার রয়েছে। চিঠিতে বলা হয়, যেহেতু ঝিনাইদহ পৌরসভার নির্বাচনে আইনগত কোনো জটিলতা নেই বা হাই কোর্টের কোনো স্থগিতাদেশ নেই, তাই জরুরি ভিত্তিতে পুরনো সীমানায় ঝিনাইদহ পৌরসভার নির্বাচনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে তিনি সিইসিকে অনুরোধ জানান।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর