শনিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

সংকটগ্রস্তদের খুঁজে খুঁজে সাহায্য দেয় প্রশাসন

-নাজমুল ইসলাম

সংকটগ্রস্তদের খুঁজে খুঁজে সাহায্য দেয় প্রশাসন

গোপালগঞ্জ জেলা উদীচী সভাপতি নাজমুল ইসলাম বলেছেন, লকডাউনের সময় শ্রমজীবী মানুষের আয়ের পথ বন্ধ হওয়ায় তাদের মাঝে ব্যাপক ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করতে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসন ঝাঁপিয়ে পড়ে। দুর্যোগকালীন সময়ে জেলা প্রশাসনের সব কর্মকর্তা কর্মচারী সক্রিয়ভাবে এ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন। যাদের আয়ের পথ বন্ধ হয়েছিল, প্রকৃতভাবে যারা সংকটে ছিল তাদের খুঁজে খুঁজে জেলাব্যাপী নিখুঁত তালিকা তৈরি করে তাদের মাঝে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিয়ে নজির স্থাপন করে। এ ছাড়াও জেলা প্রশাসনের হটলাইন স্থাপন করা হয় কারও জরুরি সহায়তা প্রয়োজন জানালে দ্রুত তাকে সহায়তা করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বিশেষ করে বর্তমান জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে এই ব্যাপক কর্মযজ্ঞ বাস্তবায়নে অনন্য নজির স্থাপন করেছেন। গোপালগঞ্জের পুলিশ প্রশাসন তাদের নিজস্ব উদ্যোগে এই দুর্র্যোগকালীন সময়ে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে মানবিক সহায়তা কর্মসূচি নিয়ে তারা দারুণভাবে সক্রিয় ছিলেন। সরকারি নির্দেশনা যাতে জনগণ মেনে চলে এ বিষয়ে পুলিশের ভূমিকা ছিল অসাধারণ। করোনা ভয়কে উপেক্ষা করে রাতদিন পুলিশ বাহিনী শ্রম দিয়েছে। তাদের এ অবদান জনমনে সাহস সঞ্চার করেছে। জেলা পরিষদ গোপালগঞ্জ তাদের নিজস্ব অর্থায়নে জেলাব্যাপী ব্যাপক ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করে প্রশংসা অর্জন করেছে। বিশেষ করে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান চৌধুরী এমদাদুল হক তার বয়সকে উপেক্ষা করে এই  মানবিক কাজে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। রাজনৈতিক দল সমূহের মধ্যে গোপালগঞ্জে প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ এই সংকটের সময়ে জনসাধারণের মাঝে ত্রাণ সহায়তা নিয়ে এগিয়ে এসেছে। বিশেষ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী দলটির নেতৃত্ব সব সময়ই মানুষের সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। গোপালগঞ্জ-২ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমের ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে ব্যাপক ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে। অন্যান্য রাজনৈতিক দল সমূহের মধ্যে বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি তার সাধ্য অনুযায়ী শ্রমজীবী মানুষের পাশে থেকে ত্রাণ সহায়তা পরিচালনা করেছেন। বড় দল হিসেবে বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জামাতের এই সংকটকালে মানুষের পাশে এসে দাঁড়াতে ব্যর্থ হয়েছে।

সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের কার্যক্রম ছিল চোখে পড়ার মতো। উদীচী, গোপালগঞ্জ জেলা সংসদ করোনার প্রথম দিকে যখন হ্যান্ড স্যানিটাইজার বাজার থেকে উধাও হয়ে যায় তখন সংগঠনটির উদ্যোগে হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরি করে শ্রমজীবী মানুষের মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণ করে। এ ছাড়াও সংগঠনটি সংকটকালে অসচ্ছল শিল্পী কর্মীদের মাঝে নগদ অর্থ সহায়তা ও খাদ্য সহায়তা কর্মসূচি নিয়ে এগিয়ে আসে। গোপালগঞ্জ সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ মানবিক সহায়তা কর্মসূচি নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে নজির স্থাপন করে।

চিকিৎসাক্ষেত্রে সামনে থেকে যাদের নেতৃত্ব দেওয়ার কথা ছিল কিছু মানবিক চিকিৎসা কর্মী ছাড়া অনেকেই এ সময়ে ক্লিনিক বন্ধ করে মানুষকে হতাশ করেছে। করোনা চিকিৎসা ছাড়াও সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা নেওয়ার ক্ষেত্রে অব্যবস্থাপনা তৈরি হয়েছিল। যা জেলাবাসীকে হতাশ করেছিল। স্থানীয় সরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহ, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের ভূমিকা এই সংকটকালে ছিল হতাশাজনক। মানুষের আকাক্সক্ষা অনুযায়ী তারা মানুষের পাশে দাঁড়াতে ব্যর্থ হয়েছে। তবে সমাজের অনেক মানবিক মানুষ এবং পরিবার নিজেরা সংকটে থেকেও অভাবগ্রস্ত মানুষ এবং প্রতিবেশীদের পাশে দাঁড়িয়ে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল-কলেজের ছাত্র/ছাত্রীরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে করোনা মহামারীর দুর্যোগকালীন সময়ে স্বেচ্ছাশ্রমে অর্থ সংগ্রহ করে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে মানবতার অনন্য নজির স্থাপন করেছে। যা খুবই আশাব্যঞ্জক এবং আমাদের জন্য হতাশা থেকে আলোর দিকে যাওয়ার প্রতিধ্বনি। জেলার প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সব সাংবাদিক করোনা ভয়কে উপেক্ষা করে সংবাদ সংগ্রহ, প্রচারে সাহসের সঙ্গে কাজ করে সাধারণ মানুষকে সাহস সঞ্চারিত করে তাদের দায়িত্ব পালনে সক্রিয় ছিল। যা সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপকভাবে  প্রশংসিত হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর