ধর্ষণের অপরাধে গতকাল নোয়াখালীর হাতিয়ার বাসিন্দা মো. ইব্রাহিমের যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। এদিকে ফরিদপুরে এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া আরও কয়েকটি স্থানে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো বিবরণ-

নোয়াখালী : নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার ২০০৪ সালের ধর্ষণ মামলায় মো. ইব্রাহিম নামে এক আসামির যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। গতকাল দুপুরে জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক (জেলা জজ) মোহাম্মদ সামস্উদ্দীন খালেদ এ রায় দেন। আসামি মো. ইব্রাহিম উপজেলার শূন্যেরচর গ্রামের আবদুল হাই এর ছেলে। আদালত তাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ছাড়াও ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। অনাদায়ে আরও দুই বছর সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০০৪ সালে ইব্রাহিম গৃহবধূর ঘরের দরজা ভেঙে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। এ ঘটনায় ইব্রাহিম ও তার বন্ধু আবদুল হাসিমকে আসামি করে হাতিয়া থানায় নারী-শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন ওই নারী।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, সোমবার দুপুরে উপজেলার ময়না ইউনিয়নের কান্দাকুল গ্রামের দবির শেখের ছেলে ইলিয়াস শেখ (২৬), শুকুর খন্দকারের ছেলে জহুর খন্দকার (২৮) এবং সদর ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামের খলিল বিশ্বাসের ছেলে আবদুল্লাহ (২২) পূর্ব পরিকল্পিতভাবে কৌশলে কিশোরীকে সাতৈর ইউনিয়নের দিঘীচালা গ্রামের একটি বাগানের মধ্যে নিয়ে যায়। সেখানে আসামিরা ভয়ভীতি দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করে। বোয়ালমারী থানার ওসি আমিনুর রহমান জানান, ধর্ষণে জড়িত তিনজনকেই আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

রংপুর : রংপুরে নবম শ্রেণির ছাত্রীকে গণ ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেফতারকৃত দুই আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। গতকাল বিকালে  সিনিয়র চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক জাহাঙ্গীর আলমের কাছে তারা জবানবন্দি দেন। এর আগে একই আদালতে ধর্ষিতার ২২ ধারা মতে জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে এবং আসামিদের শনাক্ত করে আদালতে ঘটনার বিবরণ প্রদান করে ধর্ষিতা ছাত্রী। এদিকে ধর্ষণের মূল অভিযুক্ত এএসআই রায়হানকে  গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে স্মারকলিপি দিয়েছে রংপুরে নাগরিক সমাজ।

বরিশাল : বরিশালের উজিরপুরে দেড় বছর বয়সের শিশু কন্যার গলায় ধারাল অস্ত্র ঠেকিয়ে তার মাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় উজিরপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়েছে। দিনাজপুর : দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে আদিবাসী এক গৃহবধূ এবং এক প্রতিবন্ধী যুবতীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে থানায় পৃথক ২টি মামলা হয়েছে। ধর্ষণের শিকার ওই গৃহবধূ ও যুবতীর ভাই বাদী হয়ে গতকাল মামলা দুটি করেন। পুলিশ দুই মামলায় অভিযুক্ত ৩ জনকেই গ্রেফতার করেছে। তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। তারা হলেন গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার চাঙ্গুরা গ্রামের বিচার হেমরনের ছেলে গণেশ হেমরন (২৬), একই গ্রামের খুদগু মার্ডির ছেলে অনিল মার্র্ডি (২৫)। অপর মামলায় নবাবগঞ্জ উপজেলার বিনোদনগর ইউপির তর্পণঘাট গোলাবাড়ী (পাটনিপাড়া) গ্রামের লাল মোহনের ছেলে কমলেশ হেমরম (৩০)।

কুমিল্লা : কুমিল্লার তিতাস উপজেলায় ভাবীকে ধর্ষণের মামলায় দেবর শাওনকে (৩০) গ্রেফতার করেছে তিতাস থানা পুলিশ। শাওন সাতানী ইউনিয়নের দ্বিতীয় গোবিন্দপুরের মনু মিয়া সরকারের ছেলে। গতকাল তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। জানা গেছে, শাওনের ভাই প্রবাসে অবস্থান করছেন। এই সুযোগে শাওন দীর্ঘদিন যাবত ভাবীকে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল। ভাবী প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় রাতে ঘরে ঢুকে তাকে ধর্ষণ করে। এই ঘটনায় নির্যাতিত নারীর বড় বোন বাদী হয়ে ১৭ অক্টোবর কুমিল্লার আদালতে মামলা দায়ের করেন। 

বাগেরহাট : বাগেরহাটে ?পূজা দেখে বাড়ি ফেরার পথে ২২ বছর বয়সী সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের এক গার্মেন্টস কর্মীকে ধর্ষণের ঘটনায় আটক ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক  শেখ মিজানুর রহমানসহ ৫ জনকে পাঁচদিনের রিমান্ড চেয়েছে পুলিশ।

একই সঙ্গে প্রধান অভিযুক্ত মিজানুর রহমানের ডিএনএ টেস্টের জন্য আবেদন করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্র্রেট আবীর পারভেজের  আদালতে এই আবেদন করা হয়। রিমান্ড চাওয়া অন্য আসামিরা হলেন বাগেরহাট সদর উপজেলার চিন্তারখোড় গ্রামের অমল মৃধার ছেলে বিকাশ মৃধা (১৯), নারায়ণ চন্দ্র সরকারের ছেলে সুকান্ত সরকার (৩২), অসীম বিশ্বাসের ছেলে বিধান বিশ্বাস (২৮) এবং মো. আনোয়ার ফকিরের ছেলে মো. সোহেল ফকির (২৩)।