মঙ্গলবার, ৩ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

ধাপে ধাপে পৌরসভা নির্বাচন

ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে প্রথম ধাপ অধিকাংশ ইভিএমে

নিজস্ব প্রতিবেদক

এবার ধাপে ধাপে অনুষ্ঠিত হবে পৌরসভা নির্বাচন। আগামী ডিসেম্বরে প্রথম ধাপে ২০/২৫ পৌরসভায় ভোট গ্রহণ হবে। এজন্য চলতি মাসের মাঝামাঝিতে এ নির্বাচনের তফসিল দেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কয় ধাপে ভোট হবে তা চূড়ান্ত না হলেও মে মাসের মধ্যে সব পৌরসভায় ভোট শেষ করতে চায় কমিশন। তবে অধিকাংশ পৌরসভা নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সাংবিধানিক এই সংস্থাটি। গতকাল নির্বাচন কমিশনের সভা শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা সাংবাদিকদের এসব সিদ্ধান্তের কথা জানান। তিনি বলেন, আগামী জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে পৌরসভাসহ যেসব স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের মেয়াদ শেষ হবে, সেসব প্রতিষ্ঠানে ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ ভোট নেওয়া হবে। এই ধাপে ২০/২৫টি পৌরসভায় ভোট হতে পারে। গতকাল বেলা ১১টায় আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে ইসির ৭২তম সভা শুরু হয়ে চলে দুপুর ২টা পর্যন্ত। এরপর বৈঠক দেড় ঘণ্টার জন্য মুলতবি করা হয়। আবারও সাড়ে ৩টায় মুলতবি বৈঠক      শুরু হয়। শেষ হয় বিকাল ৫টার দিকে। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা। তবে সভায় চার নির্বাচন কমিশনের মধ্যে একজন ছিলেন না। সভায় পৌরসভা নির্বাচনসহ অন্যান্য স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন নির্বাচনের বিষয়েও সিদ্ধান্ত হয়েছে। সিইসি বলেন, পৌরসভায় ভোট নেওয়া হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)। তবে ইউনিয়ন বা উপজেলা পরিষদের সব নির্বাচন ইভিএমে করা সম্ভব হবে না। কিছুসংখ্যক নির্বাচন হয়তো ইভিএমে হবে। এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, কয়েকটি ধাপে পৌর নির্বাচন করতে হবে। হয়তো পাঁচটি ধাপে হতে পারে। তবে কয় ধাপে হবে তা এখনো ঠিক হয়নি। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, পৌরসভা গঠনের পর প্রথম সভা থেকে পৌরসভায় মেয়াদ শুরু হয়। একেকটি পৌরসভার প্রথম বৈঠক একেক সময়ে হয়েছে। সবগুলো পৌরসভার মেয়াদ একসঙ্গে পূর্ণ হবে না। যে কারণে সব পৌরসভায় একসঙ্গে নির্বাচন করা সম্ভব হবে না।

সব পৌরসভায় কি ইভিএমে ভোট হবে এমন প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার শাহাদাত হোসেন চৌধুরী বলেন, মেয়াদোত্তীর্ণের সঙ্গে নির্বাচনের সম্পর্ক। একই সঙ্গে অনেক নির্বাচন থাকলেও যেহেতু আমরা ইভিএমে ভোট করতে যাচ্ছি, এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কারিগরি সহায়তা ও লোকবলের বিষয় আছে। এ কারণে তিন থেকে চারটি ধাপে ভোট করব। তবে কয় ধাপে হবে, সেই সিদ্ধান্ত এখনো আমরা নিইনি। সবগুলোতে (ইভিএমে ভোট) না বলে যতদূর সম্ভব বলতে চাচ্ছি। কোনো কারণে দু-চারটা যদি না করতে পারি। তবে নীতিগতভাবে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ইভিএমে হবে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম বলেন, আমরা চাচ্ছি পৌরসভা নির্বাচন ইভিএমে করব। এজন্য আমাদের ইভিএমে ক্যাপাসিটিটা দেখতে হবে। আমরা একসঙ্গে কতগুলোর ভোট করতে পারব। ডিসেম্বরের পর ফেব্রুয়ারিতে হয়তো আমাদের কিছুসংখ্যক নির্বাচন হবে।

বাংলায় হচ্ছে আরপিও : সিইসি নূরুল হুদা বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংক্রান্ত আইন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) বাংলায় রূপান্তরের প্রাথমিক কাজ শেষ হয়েছে। এই আদেশের নাম গণপ্রতিনিধিত্ব আইন-২০২০ করার চিন্তা করা হয়েছিল। ওইভাবে আমরা আইন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছিলাম। পরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে একটা সিদ্ধান্ত আসে- বঙ্গবন্ধুর সময় এসব আদেশ হয়েছিল তা পরিবর্তন করা যাবে না। সংশোধন করা যাবে। আমরা সেই আলোকে বিষয়টির প্রতি সম্মান রেখে সেভাবে করেছি। বাংলায় রূপান্তর ছাড়া আর কোনো কিছু পরিবর্তনের প্রস্তাব করা হচ্ছে না। তবে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন সংক্রান্ত ধারাগুলো এই আদেশ থেকে বাদ দিয়ে আলাদা একটি আইন করার প্রস্তাব করা হচ্ছে। তবে যদি সরকার মনে করে আলাদা আইন করার প্রয়োজন নেই, তাহলে সেসব আরপিওতে রাখা হবে।

সর্বশেষ খবর