মঙ্গলবার, ৩ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

মালয়েশিয়া প্রবাসীদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও আশ্বাসে প্রত্যাহার

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

ভিসার মেয়াদ বাড়ানো ও মালয়েশিয়ায় ফেরার দাবিতে কয়েকশ প্রবাসী গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও করেন। সকাল ১০টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত তারা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে কর্মসূচি পালন করেন। পরে দাবি পূরণের আশ্বাসে কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন আটকে পড়া প্রবাসীরা।

প্রবাসীরা জানান, করোনা মহামারীর আগে ছুটিতে দেশে ফিরে আসেন তারা। কিন্তু ফ্লাইট বন্ধ থাকায় আর ফিরে যেতে পারেননি। তাদের অনেকেরই ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে এবং ডিসেম্বরের মধ্যে বেশির ভাগ প্রবাসীর ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। তারা কয়েকটি দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। এসব দাবির মধ্যে রয়েছে ১. মালয়েশিয়া সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের ভিসার মেয়াদ বাড়ানো এবং সহজ স্বাভাবিক নিয়মে মালয়েশিয়া প্রবেশের অনুমতি দেওয়া; ২. চার্টার্ড ফ্লাইটে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মালয়েশিয়া যাওয়ার ব্যবস্থা করা; ৩. কোনো প্রবাসী ছুটিতে এসে মারা গেলে তার পরিবারকে ৫ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান; ৪. প্রবাসীদের মরদেহ দেশে আনতে বিমান টিকিটসহ সব খরচ সরকারকে বহন করতে হবে; ৫. ছুটিতে আটকে পড়া সব প্রবাসীকে নগদ অর্থ সহায়তা ও প্রণোদনা দেওয়া; ৬. বিদেশে কারাগারে থাকা প্রবাসীদের বাংলাদেশ হাইকমিশনকে আইনি সহায়তা দিতে হবে। জানা যায়, কর্মসূচি পালনের জন্য রবিবার রাত থেকেই প্রেস ক্লাবের সামনে জড়ো হতে থাকেন প্রবাসীরা। পরে সকালে তারা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও করেন। এ কারণে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনের রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ ছিল। কর্মসূচি শুরুর ঘণ্টাখানেক পর প্রবাসীদের পাঁচজনের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে কথা বলেছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (সাউথ-ইস্ট এশিয়া) এম জে এইচ জাবেদ। করোনা পরিস্থিতির কারণে মালয়েশিয়া সরকার ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কোনো বাংলাদেশিকে ঢুকতে দেবে না। সেদেশের সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রবাসীদের অপেক্ষা করতে বলেন তিনি। মালয়েশিয়া সরকার করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে দেওয়া নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলে এই প্রবাসীদের ফিরে যেতে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি। পরে দুপুর দেড়টার দিকে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন তাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের জন্য প্রয়োজনীয় সব প্রকার সহযোগিতার আশ্বাস দেন। মালয়েশিয়া সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি এবং যাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে তাদের পুনরায় ভিসা দেওয়ার ব্যাপারে সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি। সেই সঙ্গে দেশে দীর্ঘদিন কর্ম না থাকার ফলে যারা অর্থকষ্টে রয়েছেন তাদের আর্থিক সহযোগিতার বিষয়টি নিয়েও তিনি কাজ করবেন বলে জানান। তার আশ্বাসে অবস্থানরত প্রবাসীরা তাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেন।

রাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শ্রমিকদের আর্থিক ক্ষতিপূরণের বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় যৌথভাবে কাজ করছে। তাদের দাবি সম্পর্কে প্রবাসীবান্ধব বর্তমান সরকার অবগত আছে। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশে প্রতিটি নাগরিকের যে কোনো বিষয়ে সামষ্টিকভাবে দাবি প্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে। তবে বিভিন্ন দেশে কর্মরত ব্যাপক সংখ্যক বাংলাদেশি শ্রমিকের ইতিবাচক ভাবমূর্তির কথা বিবেচনা করে শ্রমিকদের স্বার্থের জন্য হানিকর কিছু করা বাঞ্ছনীয় নয়।

সর্বশেষ খবর