শিরোনাম
বুধবার, ৪ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

বন্ধ হয়নি অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, নদী ভাঙনের আশঙ্কা

দাউদকান্দি (কুমিল্লা) প্রতিনিধি

বন্ধ হয়নি অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, নদী ভাঙনের আশঙ্কা

কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার চালিভাঙা ইউনিয়নের রামপ্রসাদের চর থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে আশপাশের কয়েকটি গ্রামে ভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। স্থানীয়ভাবে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়ে ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন এলাকাবাসী। এ ছাড়া রামপ্রসাদের চরের বাসিন্দারা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিতে ভূঁইয়া ট্রেডার্সের বিরুদ্ধে ঝাড়ুমিছিলও করেন। এসবে কোনো প্রতিকার না হওয়ায় গত ২১ অক্টোবর বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিতে কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করেন ক্ষতিগ্রস্তরা। এর পরিপ্রেক্ষিতে রামপ্রসাদের চর এলাকায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধের জন্য মেঘনা উপজেলা প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন জেলা প্রশাসক। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৩১ অক্টোবর মেঘনা উপজেলার সহকারী ভূমি কমিশনার সরেজমিন রামপ্রসাদের চর পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি রামপ্রসাদের চর এলাকায় বালু উত্তোলন বন্ধের জন্য মেসার্স ভূঁইয়া ট্রেডার্সকে নির্দেশ দেন। উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশনা না মেনে তারা পুনরায় রামপ্রসাদের চর এলাকায় বালু উত্তোলন অব্যাহত রাখে। অবশ্য ভূঁইয়া ট্রেডার্সের পক্ষ থেকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলা হয়েছে, তারা বৈধভাবেই বালু উত্তোলন করছে।

এর আগে গত ৪ অক্টোবর রামপ্রসাদের চরের মুক্তিযোদ্ধা তোতা মিয়া, ইমাম হোসেন ও মাইনুদ্দিন মেম্বারের নেতৃত্বে শতাধিক গ্রামবাসী স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ মেঘনা উপজেলা সহকারী ভূমি কমিশনারের কাছে দেওয়া হয়।

দুটি অভিযোগেই এলাকাবাসী উল্লেখ করেন, মেঘনায় বৈধ দুটি বালু মহাল রয়েছে। একটি মেসার্স নার্গিস ট্রেডার্স ও অপরটি ভূঁইয়া ট্রেডার্সের নামে। তবে মেসার্স নার্গিস ট্রেডার্স তাদের নির্ধারিত দুটি মৌজায় বালু উত্তোলন করছে। কিন্তু মেসার্স ভূঁইয়া ট্রেডার্স তাদের নির্ধারিত স্থানের পরিবর্তে রামপ্রসাদের চর থেকে বালু উত্তোলন করায় গ্রামটি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

রামপ্রসাদের চরের বাসিন্দা প্রবীণ আইনজীবী জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘নলচর গ্রামের হুমায়ূন, সানাউল্লাহর নেতৃত্বে কয়েক বছর ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় স্থানীয় চালিভাঙা ইউনিয়নের বেশ কিছু ফসলি জমি, মসজিদ, মাদ্রাসা, প্রাইমারি স্কুল, বসতঘর ইতিমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। চালিভাঙা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আ. লতিফ সরকার বলেন, ভূঁইয়া ট্রেডার্স ইজারাবিহীন এলাকা থেকে অন্যায়ভাবে বালু উত্তোলন করে। এর প্রতিবাদে স্থানীয় ইউপি সদস্য আশকর আলীর নেতৃত্বে এলাকাবাসী একাধিকবার মানববন্ধন, বিক্ষোভ সমাবেশ ও ঝাড়ু মিছিল করেছেন। ইউপি সদস্য আশকর আলী বলেন, আমার এলাকায় অবৈধ বালু উত্তোলনে ইউপি চেয়ারম্যান জড়িত নন। তারপরও কিছু লোক আগামী ইউপি নির্বাচন সামনে রেখে তাকে সামাজিকভাবে হেয় করতে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছেন। মেঘনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রবীর কুমার রায় বলেন, ইজারার নির্ধারিত স্থানের পরিবর্তে অন্য এলাকা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় ভূঁইয়া ট্রেডার্সকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জড়িমানা করা হয়েছে। মেসার্স নার্গিস ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী নুরুল আমিন বলেন, ভূঁইয়া ট্রেডার্স অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় মেঘনা নৌ-পুলিশ তাদের লাইসেন্সি আফছার উদ্দিন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে মামলা করেছে। অভিযুক্ত ভূঁইয়া ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী আফছার উদ্দিন ভূঁইয়ার বক্তব্য না পেলেও তার পক্ষে সানাউল্লাহ বলেন, আমরা সরকারিভাবে ইজারা নিয়ে বৈধভাবে বালু উত্তোলন করছি। কারও এলাকায় গিয়ে বালু উত্তোলন করছেন না বলে দাবি করেন তিনি।

সর্বশেষ খবর