বুধবার, ৪ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

মেডিকেল শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা না দেওয়ার আন্দোলনে যে কারণে

মহাখালীতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনাকালীন প্রফেশনাল বা পেশাগত পরীক্ষা না নেওয়াসহ চার দাবিতে গতকাল মহাখালীতে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করেছে মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের ছাত্রছাত্রীরা। স্বাস্থ্য অধিদফতরের সামনে তারা বেলা ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করলে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- সেশনজট নিরসন করে যথাসময়ে কোর্স সম্পন্ন করা, প্রাইভেট মেডিকেল কলেজগুলোয় শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকাকালীন শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টিউশন ফি না নেওয়া, স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে কেউ করোনা আক্রান্ত হলে কর্তৃপক্ষকে দায়ভার নিতে হবে। এসব দাবিতে সম্প্রতি তারা শাহবাগও অবরোধ করেছিল।

সূত্র জানায়, গতকাল শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি চলাকালীন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক আন্দোলনকারীদের ডেকে পাঠান। আগামী ৮ নভেম্বরের মধ্যে অধিদফতরের পক্ষ থেকে পরীক্ষার ব্যাপারে একটি সিদ্ধান্ত জানানোর ঘোষণা দিলে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করে। নাম প্রকাশ না করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানায়, কলেজগুলো সম্প্রতি জানিয়েছে চলতি বছরের ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে এমবিবিএস ও বিডিএসের স্থগিত হওয়ায় পেশাগত পরীক্ষা নেওয়া হবে। কিন্তু করোনায় স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণে এ সিদ্ধান্ত মানতে নারাজ শিক্ষার্থীরা। তারা পরীক্ষা ছাড়াই পরবর্তী প্রফেশনাল কোর্সে ক্লাসের অনুমতি চান। এ ছাড়া প্রাইভেট মেডিকেল কলেজগুলোতে করোনাকালীন শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৬০ মাসের বেতন নেওয়ার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু করোনার কারণে প্রায় আট মাস বন্ধ থাকার পর প্রফেশনাল পরীক্ষার জন্য টিউশন ফি চেয়েছে কলেজগুলো। এতে ৬০ মাসের অতিরিক্ত টিউশন ফি আদায় করতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন তারা। আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগই বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ছাত্রছাত্রী বলে জানা গেছে। তথ্যমতে, মেডিকেল কলেজগুলোর পরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয় বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে। পরীক্ষায় অংশ গ্রহণের জন্য বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে শিক্ষার্থীদের জানানো হয়েছে, বাধ্যতামূলকভাবে কলেজ হোস্টেলে থাকতে হবে এবং হোস্টেলের খাবার খেতে হবে। বাইরের কোনো খাবার আনা যাবে না। ১৪ দিন বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে শিক্ষার্থীদের। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে এ মর্মে অঙ্গীকারনামা (বন্ডসই) দিতে হবে তাদের। অঙ্গীকারনামায় আরও উল্লেখ থাকবে, পরীক্ষার পূর্বে বা পরীক্ষা চলাকালীন কেউ করোনা আক্রান্ত হলে ওই পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলছেন, কেউ করোনায় আক্রান্ত হলে পরীক্ষায় বসতে না পারলে কমপক্ষে ছয় মাস পিছিয়ে যাবেন শিক্ষাজীবন থেকে। তাই করোনার মধ্যে পেশাগত পরীক্ষায় বসতে চান না তারা। পরীক্ষা ছাড়াই সেশনজট নিরসন করে কোর্স সম্পন্ন করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তাদের। তাদের দাবির মধ্যে আরও রয়েছে কোনো শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে এসে করোনায় আক্রান্ত হলে এর দায়ভার কর্তৃপক্ষকেই নিতে হবে।

সর্বশেষ খবর