বুধবার, ৪ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

গুজব ছড়িয়ে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় ১৬ জন গ্রেফতার

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

লালমনিরহাটের বুড়িমারীতে শহিদুন্নবী জুয়েলকে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় করা তিন মামলায় এ পর্যন্ত ১৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়ছে। এ ছাড়া তিন মামলায় প্রথম দফায় গ্রেফতার পাঁচ আসামির তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। এর আগে পুলিশ ওই পাঁচ আসামিকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। গতকাল লালমনিরহাট সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালত-৩-এর বিচারক ফেরদৌসী বেগম রিমান্ডের এ আদেশ দেন।

লালমনিরহাট জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) আলোচিত এ তিন মামলার তদন্তভার দেওয়া হয়েছে। হত্যা মামলায় গ্রেফতার পাঁচ আসামিকে পাঁচ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পরিদর্শক মাহমুদুন্নবী। লালমনিরহাট জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি ওমর ফারুক বলেন, পাঁচ আসামির পাঁচ দিনে রিমান্ড আবেদন করা হয়েছিল। আদালত তিন দিন মঞ্জুর করেছে। এই পাঁচ আসামি হলেন বুড়িমারীর ইসমাইল হোসেনের ছেলে আশরাফুল আলম (২২) ও বায়েজিদ (২৪), ইউসুব আলী ওরফে অলি হোসেনের ছেলে রফিক (২০), আবুল হাসেমের ছেলে মাসুম আলী (৩৫) এবং সামছিজুল হকের ছেলে শফিকুল ইসলাম (২৫)।

এদিকে দ্বিতীয় ধাপে গ্রেফতার মসজিদের খাদেমসহ পাঁচজনের মধ্যে চারজনকে জেলহাজতে এবং এক কিশোরকে যশোর কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফেরদৌসী বেগম এ আদেশ দেন। দ্বিতীয় ধাপে গ্রেফতার বুড়িমারী বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খাদেম জোবেদ আলী (৬১), কামারের হাট এলাকার জাহেদুল ইসলামের ছেলে মেহেদী হাসান রাজু (১৯), নামাজিটারী গ্রামের আনোয়ার হোসেন (৫৫) এবং উফারমারা তেলিপাড়া গ্রামের সহিদার রহমানের ছেলে মনিরুজ্জামান মানিককে (২৬) লালমনিরহাট কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া নামাজিটারী গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে মেরাজুল ইসলাম নেইমারকে (১৭) পাঠানো হয়েছে যশোর কিশোর সংশোধনাগারে (শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র)। অন্যদিকে গতকাল পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন্ত কুমার মোহন্ত জানান, জুয়েল হত্যার ঘটনায় আরও ছয়জনকে ভোররাতে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার এ ছয়জনের মধ্যে পাঁচজনই  এজাহারভুক্ত আসামি। তদন্তের স্বার্থে গ্রেফতার  ছয়জনের নাম প্রকাশ করেননি তিনি।

কোরআন অবমাননার গুজব ছড়িয়ে শহিদুন্নবী জুয়েলকে হত্যার অভিযোগে নিহতের চাচাতো ভাই সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে শনিবার হত্যা মামলা দায়ের করেন। একই ঘটনায় পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে পাটগ্রাম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাহজাহান আলী বাদী হয়ে একটি মামলা এবং ইউনিয়ন পরিষদ ভাঙচুরের অভিযোগে বুড়িমারী ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাঈদ নেওয়াজ নিশাত আরও একটি মামলা করেছেন। বহুল আলোচিত এ তিন মামলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখাকে (ডিবি)। মামলা তিনটিতে এজাহারনামীয় এবং অজ্ঞাত মিলিয়ে দেড় হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে।

এর আগে ২৯ অক্টোবর বিকালে পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে শহিদুন্নবী জুয়েলকে কোরআন অবমাননার গুজব ছড়িয়ে পিটিয়ে হত্যা করে লাশ পুড়িয়ে ফেলা হয়।

সর্বশেষ খবর